সীমান্তে নদী ভাঙন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ২:১২:১৫ অপরাহ্ন
আদর্শের সংঘাত বাধলে আপনজনকেও দূরে ঠেলে দাও। আদর্শের ক্ষেত্রে কোনমতেই আপস চলে না -হেররিক
নদী ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তের জিরোলাইন এলাকার শত শত একর বাংলাদেশের ভূমি। ইতোমধ্যে সীমান্তের কিছু অংশের আধিপত্য হারিয়েছে বাংলাদেশ। সুনামগঞ্জের ছাতক ও কোম্পানীগঞ্জের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি নদী সোনাই নদীর (বাইরং নদী) ভাঙনে সৃষ্টি হয়েছে এই বিপর্যয়। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ পুরো এলাকার আধিপত্য হারাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবরটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয় এই পত্রিকায়।
খবরে জানা যায়, ছাতক উপজেলার বাগানবাড়ি এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। নদী তীরবর্তী ভূমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন ওইসব এলাকার শত শত মানুষ ইতোমধ্যেই নদী গ্রাস করছে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তের জিরোলাইন এলাকা। কেবল এই ঘটনাই নয়, দেশের অন্যান্য এলাকায়ও সীমান্ত নদী ভাঙ্গন অব্যাহত আছে। আর সীমান্তে এই নদী ভাঙনের ফলে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণে ভূমি হারাচ্ছে। সীমান্ত নদী ভাঙনের ফলে স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত বাংলাদেশ কী পরিমাণ ভূমি হারিয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। প্রতিনিয়ত ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মসজিদ, মন্দির, হাটবাজার, স্কুল, মাদ্রাসা, অফিস-আদালত, ব্রিজ-কালভার্ট, বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি। উল্লেখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা চার হাজার চার শ’২৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে নদী দ্বারা নির্ধারিত সীমানা দুই শ’৪৩ কিলোমিটার। নিয়ম অনুযায়ী সীমান্ত এলাকায় নদী যখন যে অবস্থায় আছে তার মধ্যবর্তী স্থান থেকে সীমানা নির্ধারিত হয়। বর্ষায় নদীর পানি যখন ফুলে ফেঁপে ওঠে তখন নদীর উভয় পাড়ের জমিতে ভাঙন ধরে। নদী ভাঙন প্রতিরোধের জন্য ভারত তার নদীর তীর ঘেঁষে ভাঙন প্রতিরোধক প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা হয় নি। ফলে নদীর ঐপাড়ে পানি ফুলে ফেঁপে উঠলেও প্রতিরক্ষা বাঁধের কারণে ভারতের ভূমি ধসে না।বরং পানি ক্রমেই বাংলাদেশ সীমান্তে সরে আসে। এতে বাংলাদেশের পানি ও ভূখ-ের ওপর দিয়ে নতুন সীমান্ত রচিত হচ্ছে।
সীমান্তনদীসহ সব নদীর ভাঙনরোধে স্থায়ি ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। বিশেষ করে, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী নদীগুলোতে ভাঙন রোধের জন্য সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। সেইসঙ্গে দেশ বিভাগের সময় তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ও ভারতের সীমান্ত নদীসমূহে যে মধ্যস্রোত নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটিই স্থায়ী সীমানা হিসেবে বিবেচনা করা উচিৎ বলেই বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন।