অতি দারিদ্র্য থেকে টেকসই জীবিকায়নের স্বীকৃতি পেলো সদর উপজেলার ২৪২ পরিবার
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ আগস্ট ২০২৩, ৬:২৪:৪৪ অপরাহ্ন
দুই বছরের কার্যক্রমের ভিত্তিতে এ স্বীকৃতি দিল ওয়ার্ল্ড ভিশন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ অতি দারিদ্র্য (আল্ট্রা পুওর) থেকে টেকসই জীবিকায়নের (গ্র্যাজুয়েশন) দিকে এগিয়ে যাবার স্বীকৃতি পেলো সিলেট সদর উপজেলার চার ইউনিয়নের ২৪২ পরিবার। গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে-জালালাবাদ ইউনিয়নে ১০৮ জন, কান্দিগাঁওয়ে ২২ জন, টুকেরবাজারে ৯১ জন এবং হাটখোলায় রয়েছে ২১ জন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন, সিলেট এরিয়া অফিস তাদেরকে এ স্বীকৃতি দিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ চার ইউনিয়নের ৩১০ জন উপকারভোগীর মধ্যে ২৪২ জন গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
গ্র্যাজুয়েট হওয়ার স্বীকৃতি পাওয়া সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের সতর গ্রামের বাসিন্দা আলেতুন নেছা (৫৫) জানান, তার স্বামী মঞ্জুর ইসলাম পেশায় কৃষক। ২০২১ সালে ওয়ার্ল্ড ভিশনের মাধ্যমে তিনি একটি বকনা বাছুর পান। যথাযথ পরিচর্যার ফলে এটি এখন গর্ভবর্তী। এটি শিগগিরই বাচ্চা প্রসব করবে। এতে তারা উৎফুল্ল বলে জানান আলেতুন।
কেবল আলেতুন নন, ওই ইউনিয়নের রোকসানা ও ফরিদা বেগমসহ আরো অনেকেই গ্র্যাজুয়েট হবার স্বীকৃতি পেয়ে খুশি।
ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্মকর্তারা জানান, আল্ট্রাপুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামটি হচ্ছে একটি সমন্বিত, সময় নিয়ন্ত্রিত (২ বছর) এবং ধারাবাহিক কার্যক্রম সমূহ; যার উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে অতি-দারিদ্র্য থেকে টেকসই জীবিকায়নের দিকে নিয়ে যাওয়া।
সিলেট এরিয়া প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এর ফিল্ড টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (ইন্টেগ্রেটেড লাইভলিহুড) ড. মো: রুহুল আমিন সরকার জানান, ২০২১ অর্থ বছরে সদর উপজেলার চার ইউনিয়নের মোট ৩১০ উপকারভোগীকে (পুরুষ ৬%, মহিলা ৯৪%) বিভিন্ন এন্টারপ্রাইজে সম্পদ হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে ছিল-২৮৫ টি বক্না বাছুর, ৫টি সেলাই মেশিন, ৭টি নৌকা, ১১টি ক্ষুদ্র ব্যবসা, ১টি রিকসা, ১টি ভ্যান। বিগত দুই বছর জীবন ও জীবিকায়নের ৪ টি পিলার যথা; সামাজিক সুরক্ষা ,লাইভলি হুড প্রমোশন, অর্থনৈতিক প্রবেশাধিকার ও সামাজিক ক্ষমতায়নের ওপর মনিটরিং কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এরপর আল্ট্রাপুওর গ্রাজুয়েশন মূল্যায়ন রিপোর্ট’ ২০২৩ এর ভিত্তিতে ৩১০ জন অতি-দরিদ্র পরিবারের মধ্যে ২৪২ জনকে ১০টি সূচক দ্বারা পরিমাপ করে গ্র্যাজুয়েট ঘোষণা করা হয় এবং বাকী ৬৮ জনকে গ্র্যাজুয়েট হবার জন্য এখনো সহায়তা করা হচ্ছে।
সূত্রমতে, জালালাবাদে ২৭ জন, কান্দিগাঁওয়ে ৮ জন, টুকেরবাজারে ১৯ জন ও হাটখোলায় ১৪ জন গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি।
গ্র্যাজুয়েটদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি
এদিকে, আল্ট্রাপুওর গ্র্যাজুয়েটদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ওয়ার্ল্ড ভিশন। সম্প্রতি হাটখোলা ইউনিয়নের শিবেরবাজারস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদেরকে এ স্বীকৃতি দেয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-সিলেট সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রফিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নাহিদ আরজুমান বানু, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্ত মোঃ ফজলে ম. ভূইঁয়া, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম, হাটখোলা ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা কে এম রফিকুজ্জামান, প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিনিধি ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। প্রধান অতিথি বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর অতি-দরিদ্র পরিবারে গ্র্যাজুয়েশন কার্যক্রমটি বাংলাদেশ সরকারের ২০২৬ সালের উন্নয়নশীল দেশ ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক ধাপ অগ্রগতি। গ্র্যাজুয়েট পরিবারসমূহ অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধির মাধ্যমে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন।