সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
স্বামী হত্যার সুষ্ঠু বিচার চান বালাগঞ্জের হেপি বেগম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ আগস্ট ২০২৩, ১২:৫৮:৪১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : স্বামী হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন বালাগঞ্জের সদর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের বাসিন্দা হেপি বেগম। গতকাল রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে হেপি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী সুহেল মিয়াকে গত ৩০ জুলাই বালাগঞ্জ মাছ বাজারের উত্তর পাশে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বালাগঞ্জের চানপুর গ্রামের আব্দুল মতিন ও তুরন মিয়া, এ কে টুটুল, নতুন সুনামপুর গ্রামের শাহরিয়ার রাহীসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জন ব্যক্তি তার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালান। তাদের হামলায় আমার স্বামী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা তাকে টেনে হেঁচড়ে বালাগঞ্জ কলেজের দক্ষিণ পূর্বের রাস্তায় মসজিদের পাশের সড়কে নিয়ে আবারও আঘাত করে জখম করে। সেখানে উপস্থিত কিছু লোকজন আমার স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করেন। এ সময় তাকে চিকিৎসার জন্য নেয়ার চেষ্টা করলে আব্দুল মতিন ও তার সহযোগীরা তাদের বাধা দেন। তারা আমার স্বামীকে মারাত্মক আহত অবস্থায় জোর পূর্বক বালাগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। পরে আমার ভাসুর থানা থেকে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
হেপি আরো বলেন, এ ঘটনায় আমি বালাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলে স্থানীয় মুরুব্বিরা আমার স্বামী সুস্থ হওয়ার পর বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস প্রদান করেন। পরে আমার স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৮ আগস্ট তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। পরদিন ৯ আগস্ট রাত সোয়া ৩টায় তিনি মারা যান। বারবার অবগত করার পরও থানা থেকে কেউ না আসায় আব্দুল মতিন ও তার সহযোগীরা আমার স্বামীর লাশ পোস্টমর্টেম ছাড়াই দাফন করার জোর চেষ্টা চালান। পরে ৯৯৯ এ কল দিলে বালাগঞ্জ থানা পুলিশ আমার স্বামীর মৃতদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং তদন্তের জন্য মৃতদেহ পুনরায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করে।
হেপি বলেন, স্বামীকে দাফনের পর আব্দুল মতিন ও তার সহযোগীরা আমাকে নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। দাফনের পর বালাগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। নিরুপায় হয়ে গত ১৪ আগস্ট চানপুর গ্রামের মৃত সৈয়দ উল্লার পুত্র আব্দুল মতিন ও তুরন মিয়া, মৃত কদর উল্লার পুত্র এ কে টুটুল, নতুন সুনামপুর গ্রামের ইকবাল মিয়ার পুত্র শাহরিয়ার রাহীসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করি (নম্বর ৮৭/২০২৩)।
হেপী বলেন, মামলা করার পর প্রাণের ভয়ে ২টি সন্তানের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমার বাবার বাড়ি চলে আসি। এখানে আসার পরও আব্দুল মতিন ও তার সহযোগীরা বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। মূলত আব্দুল মতিন ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে বালাগঞ্জ বাজারস্থ আকবর কমিউনিটি সেন্টারের পেছনে আমাদের রাস্তার পাশের জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করলে আমার স্বামী তাতে বাধা দেন। এজন্যই আমার স্বামীর ওপর তারা ক্ষুব্ধ ছিল। এ কারণেই তারা আমার স্বামীকে হত্যা করেন। হেপী বেগম তার স্বামী সুহেল মিয়া হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার এবং সুষ্ঠু বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।