আচার-আচরণ ও মানবিক মূল্যবোধ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২৩, ১:১৩:১১ অপরাহ্ন
আফতাব চৌধুরী
সারা পৃথিবীর মানুষই বোধ হয় এখন এক ধরনের মানসিক সংকটে ভুগছে। সংকটটা বলা যায় অনেকখানি এরকম ঃ যা সে করছে তা সে করতে চায় না, যা সে দেখছে তা সে গ্রহণ করতে পারছে না মনেপ্রাণে। নিজের কাজেও নৈতিক সমর্থন পাচ্ছে না সব সময়। নিজেদের চোখের সামনে ইচ্ছার বিরুদ্ধেই ঘটে যাচ্ছে অনেক কিছু। মূল্যবোধ নিয়ে তৈরি হচ্ছে বড়ো ধরনের নৈতিক সংকট। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে মূল্যবোধের কী বিপর্যয়ই না ঘটছে। এই সংকট এখন পৃথিবী জোড়া। আমরা হয়তো ভাবছি সংকটটা কেবল আমাদের মত অনুন্নত দেশে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা জাপানের মতো শিল্পোন্নত দেশেও নৈতিক মূল্যবোধের এই সংকট আজ তীব্র। আমেরিকার মানুষ মনে করে তাদের মূল্যবোধ যেন কোথায় নেমে যাচ্ছে। নিংশেষ হয়ে যাচ্ছে সবকিছু। একটি প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী মূল্যবোধ সম্পর্কে লেখা সম্পাদকীয়টির শিরোনামই দিয়েছে ঠধহরংযরহম ঠধষঁবং : ডযবৎব যধাব ড়ঁৎ ঠধষঁবং মড়হব? আমেরিকা, জাপান কিংবা ফ্রান্স-বৃটেনের মতো দেশে যখন সমাজের মূল্যবোধ সম্পর্কে প্রশ্ন উঠে তখন বুঝতে হয় সংকটটা নিংসন্দেহে গভীরে। পশ্চিমার উন্নত সমাজকে বলা হয় মুক্ত সমাজ। মানুষ সেখানে নিজের স্বাধীন সত্তা উপলব্ধি করতে পারে। বাধা-নিষেধের প্রাচীরে মানুষকে সেখানে আটকে রাখার চেষ্টা করা হয় না। আবদ্ধ সমাজে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা ও স্বাধীন মতামতের বিশেষ কোনো মূল্য নেই। সে নানাভাবে সামাজিক বাঁধা-নিষেধ, সংস্কার ও প্রাচীন ধ্যান-ধারনার কাছে বন্দী। উন্মক্ত সমাজ মানুষকে এই বন্দীদশা থেকে মুক্তি দিয়েছে। ফরাসী লেখক-দার্শনিকরা বহু আগেই ঘোষণা করেছেন, গধহ রং নড়ৎহ ভৎবব নঁঃ বাবৎুযিবৎব যব রং রহ পযধরহং.’ মানুষ স্বাধীনভাবে জন্মায়, কিন্তু সর্বত্রই সে শৃঙ্খলিত। মানুষের এই শৃঙ্খলিত জীবন সম্পর্কে তাদের মৌলিক চিন্তা হচ্ছে রাষ্ট্র, সমাজ, ধর্মীয় অনুশাসন, সংস্কার, বিশ্বাস, জীবিকা এসব তো আছেই এমনকি বন্দী সে নিজের কাছে নিজেও। মানুষের এই শৃঙ্খলিত জীবন জাঁ পল সার্ত্র ও সীমন দ্য বুভ্যোয়া-র মতো চিন্তাশীল ব্যক্তিদের গভীরভাবে পীড়িত করেছে। বলা যায় প্রায় সারাজীবন তাঁরা মানুষের এই অস্তিত্বের মৌলিক সংকট মোচনের লক্ষ্যে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা ও রীতি-নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন।
মানুষের সমাজ আজ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তার জন্যে তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে বহু দুর্গম পথ, বহু পাথরের মতো ভারী দিন-রাত্রি। এক-দু‘দিনে মানব সমাজ এ অবস্থায় এসে পৌঁছেনি। মানুষের এই দুর্গম পথ যাত্রায় ও অগ্রগতির দীর্ঘ সময়ে ইতিহাসের অনেক মলিন পৃষ্ঠা ঝরে গেছে। মানব সমাজে সংঘটিত হয়েছে অনেক পরিবর্তন। সেইসব পরিবর্তন ও রূপান্তর এমনই ব্যাপক, বিস্তৃত ও বিস্ময়কর যে, হাজার বছর আগের কথা দূরে থাক দুই-তিনশো বছর আগের কোনো মানুষকে যদি এই পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতো, তাহলে বর্তমান পৃথিবীর রূপ ও তার পরবর্তী বংশধর এই মানুষের জীবনযাত্রা দেখে সম্ভবত তার তৎক্ষণাৎ বাকরূদ্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়া গত্যন্তর থাকতো না। একই ভাবে আজকের পৃথিবীর কোনো মানুষকে যদি দুই-তিন শতাব্দী পরের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় তাহলে তার পরিণতি এ ছাড়া আলাদা কিছু হবে না। এটাই হচ্ছে বাস্তব সত্য। পৃথিবী ও সমাজ নিত্য পরিবর্তনশীল। মানুষের সমাজ কোথাও থেমে নেই। প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন এমনই সূক্ষ্ম যা আমরা সর্বক্ষণ অনুভব করতে পারিনা। হঠাৎ বহু বছর পর একদিন দেখে চমকে উঠি, ভাবি কোথায় গেল আমাদের সেই সময়, আমাদের সেই সোনালী দিনগুলো? মানুষের একটি সহজাত প্রবণতাই এই যে, সে তার সময়কে আঁকড়ে ধরে থাকতে চায়, মনে করে তার ফেলে আসা দিনগুলোর কোনো তুলনা হয় না। এই অভ্যাস ও প্রবণতার জন্যেই পরিবর্তনকে সে সহজে স্বীকার করে নিতে পারে না। তার অভ্যাস চোখে সবকিছুই কেমন বেখাপ্পা লাগে। একটি যুগের মূল্যবোধ অন্য যুগে প্রায় অচল হয়ে গেলেও তাকেই সে প্রাণপণে ধরে রাখতে চায়। মানুষের সংস্কার এমনি দুর্বার। সব যুগে সব সময়ই কিছু মানুষ সংস্কার মুক্ত থেকেই যায়। সংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠে পরিবর্তিত মূল্যবোধ ও জীবনকে স্বাগত জানাতে পারে দু’একজন মুক্ত মনের অগ্রসর মানুষ। রাসেল, সার্ত্র, বুভ্যোয়া ছিলেন তেমনি বিরল ব্যক্তিত্ব।
এবার মূল্যবোধের কথায় আসি। মানুষের সমাজে তার সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক জীবনের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তার রুচি, আদর্শ ও মূল্যবোধেরও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। এক সময় মানুষ ছিল গভীরভাবে আধ্যাত্মবাদী। তার জীবন, চিন্তাধারা ও মূল্যবোধও ছিলো সেভাবেই গড়ে ওঠা। শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনও ছিলো সীমাবদ্ধময়। এই যুগের মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ, রুচি, আদর্শ ও চিন্তাধারার সঙ্গে ফরাসী বিপ্লব, রুশ বিপ্লব, শিল্প বিপ্লব ও আধুনিক গণতন্ত্রের বিকাশ-পরবর্তী যুগের মানুষের মূল্যবোধ বা নীতি-আদের্শের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য ঘটাই তো স্বাভাবিক। কেবল অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলেও কৃষিভিত্তিক জীবন ব্যবস্থা ও শিল্প প্রযুক্তির বিকাশ পরবর্তী যুগের মানুষের জীবনাচরণ ও মূল্যবোধের মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান লক্ষ্য করাই স্বাভাবিক। অথনৈতিক চিন্তা ও দর্শনের ক্ষেত্রেও পৃথিবীতে অনেক পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে। কৃষিভিত্তিক জীবন, যন্ত্র শিল্পের প্রথম যুগ, পরে শিল্প বিপ্লব, সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি, পুঁজিবাদ, লেসেকেয়ার, সাপ্লাই সাইন ইকোনমি, বাজার অর্থনীতি এমনি নানা মতবাদ ও চিন্তা মানুষের ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের উপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলেছে। এইসব প্রভাব এমনি গভীর ও ব্যাপক যে, মানুষের ব্যক্তিজীবনের আদলই প্রায় বদলে গেছ্ েঅনেক নৈতিক মূল্যবোধ ও প্রচলিত বিশ্বাস অচল মনে হয়েছে তার কাছে। গ্যালোলিও ও কোপার্নিকাসের বৈজ্ঞানিক সত্য মানুষের বিশ্বাসের ভিতকেই কাঁপিয়ে দিযেছে দারুণভাবে। তছনছ হয়ে গেছে তার সেই বিশ্বাসের জগৎ। একদিন যে মানুষ বিশ্বাস করতো যে, সূর্যই পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে এবং যা সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত দেখতেও প্রায় সে যখন জানতে পারলো যে সূর্য স্থির আর পৃথিবীই ঘুরছে সূর্যের চারদিকে তখন তার এতোদিনের অর্জিত বিশ্বাস তারই সামনে ভেঙে খান খান হয়ে গেলো। এই সত্যকে স্বীকার করতে অনেক দিন সময় লাগলো তার। নিউটন কিংবা আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক আবিস্কার মানুষকে কেবল চমকেই দিলো না সে হয়ে পড়লো এইসব আবিস্কার ও সত্যের মুখোমুখি হতচকিত অনেকটাই বিভ্রান্ত ও বিচলিত। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা এমনি দ্রুত ও বিস্ময়কর গতিতে অগ্রসর হতে লাগলো যে, সে সব কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোখের সামনে ঘটে চললো একেকটি অবিশ্বাস্য ঘটনা। প্রথমে তার চোখ ছানাবড়া হলো ঠিকই, কিন্তু এই বিজ্ঞানের সত্যকে অস্বীকার করাও আর সম্ভব হলো না তার পক্ষে। কিন্তু সৃষ্টি হলো মনোজগতের সংকট। সে এই পরিবর্তনকে স্বীকারও করতে পারলো না, পুরোপুরি অস্বীকারও করতে পারলো না। কারণ তার নিজের জীবনও এই বিজ্ঞানের আবিস্কৃত সত্য জগতের মধ্যেই আবর্তিত। এভাবেই তৈরি হয়েছে বর্তমান পৃথিবীর বিজ্ঞান প্রযুক্তি নির্ভর মানুষের মনোজগতের দ্বন্দ্ব ও সংকট।
মানুষের মনোজগতের এই সংকট আজ শুরু হয়নি। এই সংকট খুবই পুরানো। বলা যায়, প্রায় সব যুগেই মূল্যবোধের এই অবক্ষয় সেই যুগের মানুষকে ভাবিত করে তুলেছে। তারা কাঙ্কিত, উদ্বিগ্ন ও বিচলিত হয়েছে; মূলবোধের পরিবর্তনকে তারা আখ্যায়িত করেছে অবক্ষয় বলে। এ ঘটনা কিন্তু প্রায় সব যুগেই ঘটতে দেখা গেছে। মানুষের কাছে তার নিজের সময় সবচেয়ে ভালো সময়। এভাবেই মানুষ তার নিজের সময়কে দেখতে অভ্যস্ত। আসলে মানুষের জীবন কোনো সময়ই খুব বেশি ভালোও ছিলো না, খুব বেশি খারাপও ছিলো না। সব যুগ ও সব ভালো-মন্দ মিলেই মানুষের জীবন। কিন্তু মানুষ ভাবে মূল্যবোধের পরিবর্তন মানেই মূল্যবোধের অবক্ষয়। এই ভ্রান্ত ও আবেগগ্রস্ত চিন্তার ফলে মূল্যবোধ নিয়ে মানুষের এই আক্ষেপ ও হাহাকার। যুগে যুগে মানুষের মূল্যবোধের পরিবর্তন হওয়াই স্বাভাবিক। সেটা হওয়াই উচিত। মানুষ যদি আজ পাঁচশো বছর আগের সেই রীতি-নীতি ও মূল্যবোধ আঁকড়ে ধরে বসে থাকতো, যেসব মূল্যবোধ গড়ে উঠেছিলো সে সময়ের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে, তাহলে আজ অবস্থাটা কি হতো? কি হতো মানুষের এই সভ্যতার অবস্থা? মানুষ যে ক্রমান্বয়ে আধুনিক হয়ে উঠেছে, যুক্তিবাদী, সংশয়প্রবণ, কৌতূহলী ও জিজ্ঞাসু হয়ে উঠেছে এই অনুসন্ধানই তাকে আজ এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে। বস্তুজগতের মধ্যে সে সন্ধান করেছে জীবনের রহস্য, মানুষ আজ আর কেবল রহস্যবাদী অলৌকিকত্বে বিশ্বাসী হয়ে তৃপ্ত থাকতে চায়না, সে জীবন রহস্যের সন্ধান করতে করতে বস্তুর রহস্যভেদ করেছে, আবিস্কার করেছে অনেক অজ্ঞাত-সত্য। এই সত্যানুসন্ধানী মানুষ আজ মহাশূন্য পর্যন্ত তার করতলগত করেছে, সে পৌঁছেছে চাঁদে, মঙ্গলগ্রহে। পানি, স্থল ও অন্তরীক্ষের বহু রহস্যই আজ তার কাছে উন্মোচিত ও উদঘাটিত। এই মানুষের মূল্যবোধেরও পরিবর্তন ঘটবে, তার চিন্তাজগতেও যে অনেক রদবদল হবে এতে বিস্মিত বা বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আর এই পরিবর্তন ও রূপান্তরের সবকিছুকেই এক কথায় অবক্ষয় বলে খারিজ করারও কোনো অর্থ হয় না। জীবন যেমন পরিবর্তনশীল, মানুষের আচার-আচরণ, অভ্যাস, রুচি, নৈতিকতা ও মূল্যবোধও তেমনি পরিবর্তনশীল। যুগের সঙ্গেই নৈতিকতা ও মূল্যবোধেরও বিচার হয়ে থাকে। ¯েœহ, প্রীতি, বাৎসল্য, হৃদয়ানূভূতি এমনি যেসব শাশ্বত মানবিক গুণাবলীর কথা আমরা এতোদিন জেনে এসেছি আজ এমনকি তারও আবেদন সংকুচিত হচ্ছে কিনা কিংবা এসব মানবিক সম্পর্কের মধ্যেও চিড় ধরার উপক্রম হচ্ছে কিনা সে সম্পর্কেও সম্ভবত আজ আর সঠিকভাবে কিছু বলতে পারে না। এ কথা সত্য যে, সমাজের এই গভীর সংকট, তার সব সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়া, এই অন্তঃসারশূন্যতা, দেউলিয়া হয়ে পড়া, মানবিক অনুভূতির এই দৈন্য বিবেকবান চিন্তাশীল ব্যক্তিদের উদ্বিগ্ন ও আতংকিত করে তুলছে। মানব সমাজের এই পরিণতি নিয়ে তারা হতাশ না হয়ে পারছেন না। আসলে মানুষের সমাজ বিবর্তন একটি গভীর পর্যবেক্ষণের বিষয়। এই বিবর্তনের ধারায় মানুষের সমাজ ও সভ্যতা একুশ শতকের প্রথম ভাগে এমন এক স্তরে এসে পৌঁছেছে যেখানে আগের অনেক কিছুই আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। আধুনিক মানুষ আজ এসে দাঁড়িয়েছে উত্তর-আধুনিকতার মুখোমুখি, যেখানে সে প্রায় নিরালম্ব, সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, স্মৃতিহীন, ঐতিহ্যবিমুক্ত। এই উত্তর-আধুনিক যুগের মানুষ সমস্ত প্রাচীন মূল্যবোধ ভেঙ্গে দিয়ে প্রায় সম্পূর্ণ শূন্যতায় পৌঁছাতে চাচ্ছে, নিজেকে এভাবে সবকিছু থেকে মুক্ত করে শূন্যে স্থাপন করা-এও এক কঠিন কাজ। সামাজিক, পারিবারিক বন্ধন আজ তার কাছে অনেকটাই শিথিল হয়ে গেছে, নারী-পুরুষ সম্পর্ক, সন্তান ও আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে যে পারিবারিক ঐতিহ্যগত সম্পর্ক, বয়স্কদের প্রতি তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গী, সেই অবিচল শ্রদ্ধার আসন এসবও আজ অনেকটাই এলামেলো ও ওলোটপালোট হয়ে যাচ্ছে বিশেষ করে শিল্পোন্নত উন্মুক্ত সমাজে। আর তাই এসব অনেক কিছুই আজ অনেকের কাছেই ভাবনার বিষয় হয়ে উঠেছে। মানুষ পরিবারিক জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে, সে হয়ে উঠছে অনেকটাই উন্মুখ। মনে হয় এই সমস্যার আলোকেই মার্কিন সাময়িকীতে লেখা হয়েছে- ঞযবৎব ধৎব ফধরষু ঈড়হভৎড়হঃধঃরড়হং রিঃয ধষসড়ংঃ বাবৎুড়হব রহ, ধঁঃযড়ৎরঃু, ঈযরষফৎবহ ধমধরহংঃ ঢ়ধৎবহঃং, সড়ঃযবৎং ধমধরহংঃ সধঃৎরসড়হু, ভধঃযবৎং ধমধরহংঃ পযরষফ ংঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ. এই সমস্যা আজ শিল্পোন্নত সমাজেই অধিক প্রকট। হয়তো এই মুহূর্তে একে মূল্যবোধের সংকট বলেই মনে হবে, উদ্বিগ্নও করে তুলবে প্রাচীন অভ্যাস মূল্যবোধে বিশ্বাসী অনেক মানুষকেই একথাও সত্য, কিন্তু সমাজ বিবর্তনের ধারায় এ সবকিছুই হয়তো একদিন স্বাভাবিক বলেও মনে হবে। মানব সভ্যতার ইতিহাসে তা-ই কিন্তু হয় পুরাতন মূল্যবোধ ভেঙ্গে তৈরি হয় নতুন মূল্যবোধ। এভাবেই হয়তো নতুন সমাজ ও নতুন মানব সভ্যতাও গড়ে ওঠে।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট।