জাফলংয়ে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড মা-মেয়ের মৃত্যু ॥ আহত ৪
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২৩, ৮:২৭:৪০ অপরাহ্ন
গোয়াইনঘাট থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে অগ্নিকান্ডে দগ্ধ হয়ে মা ও মেয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় একই পরিবারের আরও ৪ জন আহত হয়েছেন। গত রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার জাফলং রসুলপুর গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার দোকান ও বসতঘরে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ইয়াকুব মিয়ার স্ত্রী জেসমিন বেগম (৩০) ও মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৩) ঘটনাস্থলেই মারা যান। একই ঘটনায় ইয়াকুব মিয়া, তার মা এবং দুই সন্তান জুবাইর ও জুনাইদ অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। স্থানীয়রা আশংকাজনক অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। বর্তমানে তারা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে এলাকাবাসী ধারণা করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইয়াকুব মিয়ার ঘরের একটি কক্ষে মুদির দোকান এবং অপর কক্ষে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। গত রোববার রাতেও যথারীতি তিনি দোকান বন্ধ করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে তার ঘরে আগুন লাগে। এতে দোকানে মজুত রাখা গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরে যায় এবং আগুনের তীব্রতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। মুহূর্তেই সারা ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পরিবারের সবাই অগ্নিদগ্ধ হন।
অগ্নিকান্ডের পরপরই স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় দুই ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ইয়াকুব মিয়ার স্ত্রী জেসমিন বেগম ও মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে। অগ্নিকান্ডের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তৎক্ষণিক নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
ইয়াকুব মিয়ার প্রতিবেশী জোলহাস মিয়া জানান, আমরা পরিবার নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে উঠে দেখি ইয়াকুবের ঘরে আগুন লেগেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় অল্পের জন্য তার নিজের বসতঘরও আগুনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, পার্শ্ববর্তী গ্রামে হওয়ায় বিষয়টি শোনার সাথে সাথে আমরা দৌঁড়ে ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় এলাকাবাসীকে নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। আর ফায়ার সার্ভিস ও থানা পুলিশকে খবর দিই। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় দুই ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান, থানার ওসি কেএম নজরুল, সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য সুবাস দাস, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইমরান হোসেন সুমন, ইউপি সদস্য জালাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তাহমিলুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেককে দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং আহত প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।