দেশের সাথে নতুন প্রজন্মের সংযোগ বাড়াতে মিলনমেলা আয়োজনের বিকল্প নেই
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ৬:৪৩:০২ অপরাহ্ন
মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, বার্মিংহাম থেকে: প্রবাসের ব্যস্ত যান্ত্রিক জীবনে আতœীয়-পরিজনদের সাথে দেখা করতে কে না চায়। সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে রেখে আসা মা ও মাটির টান এখানকার সকলেরই। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি যে কী অপরিসীম টান তা একমাত্র প্রবাসীরাই বুঝেন। ইট-সুড়কির বেড়াজালে আবদ্ধ এই যান্ত্রিক প্রবাস জীবনে ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও অনেকেই নিজ আতœীয় পরিজনদের সাথে দেখা করতে পারেন না। চুটিয়ে আড্ডা দেয়ার খায়েস মনের কোনে পড়ে থাকে বছরের পর বছর। নিজ নিজ কর্মস্থলে রাত-দিন ব্যস্ততার কারণে অনেক আপন মানুষের ও খোঁজ-খবর নেয়া হয় না নিয়মিত। তাই একজনের সাথে আরেকজনের দূরত্ব বাড়ে। দেখা দেয় অশান্তি। দেশে ফেলে আসা কৈশোর বা যৌবনের দুরন্ত সেই সব সময়ের কথা মনে করে অনেকেই নস্টালজিয়ায় ভোগেন। এছাড়া এদেশে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা দেখা সাক্ষাৎ না হওয়ার ফলে আপন মানুষদের চিনতে পারে না। এ চিত্র বৃটেনে বসবাসরত প্রায় সব বাঙ্গালীর।
গতানুগতিক এই চিত্র থেকে বেরিয়ে প্রবাসে বসবাসরত কয়েক প্রজন্মের সকলকে যদি এক করা যায় তাহলে কেমন হয়? তেমনই একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন হয়েছিলো গত ২০ আগষ্ট রোববার লন্ডনের ডেগেনহ্যামে। একে অন্যের সাথে পরিচিত হবার জন্য ফার্ম হাউসে জড়ো হয়েছিলেন সিলেট নগরীর ঐতিহ্যবাহী হাওয়াপাড়া এলাকার চারশতাধিক সদস্য। ইউ কে দিশারীর উদ্যোগে আয়োজিত এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
একই স্থানে একই সময়ে সবাইকে এক সাথে পাবার এই আনন্দময় মুহূর্তের প্রতীক্ষায় যেনো ছিলেন সকলেই। তাই সাপ্তাহিক ছুটির এই দিনে বৃটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্বত:স্ফুর্তভাবে জড়ো হয়েছিলেন হাওয়াপাড়াবাসী। প্রবীণরা শৈশব স্মৃতি রোমন্থন করে হারিয়ে গিয়েছিলেন পুরোনো দিনে। উঠতি বয়সীদের দিয়েছেন জীবনের দীক্ষা। শুধু তাই নয় এলাকার আর্তসামাজিক উন্নয়নে সবাই এক সাথে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ছোট-বড় সকলেই। বিশেষ করে সিলেটের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ- হাওয়াপাড়া জামে মসজিদ পুন:নির্মাণে নেয়া হয় গুর”ত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তাছাড়া, সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন এ ধরনের আয়োজন এ দেশে বেড়ে উঠা নব প্রজন্মের সাথে দেশের সেতু বন্ধন আরো সুদৃঢ় করবে।
দীর্ঘদিন পর একে অপরের সাথে দেখা হওয়ায় অনেকেই ছিলেন বেশ উৎফুল্ল। নেচে-গেয়ে আর আনন্দ আড্ডায় তারা কাটিয়েছেন পুরো একটি দিন। দিনব্যাপী মিলন মেলা জুড়ে বিভিন্ন খেলাধুলা ছাড়াও ছিল বিনোদনের ব্যবস্থা। ছিলো দেশীয় বিভিন্ন পিঠা পুলীর ব্যবস্থা। সব বয়সী মানুষ সেখানে অংশ নিয়েছেন, করেছেন আনন্দ।
ইউকে দিশারীর সভাপতি ইসফাকুদ্দৌলার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম রুহেলের স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা হাওয়াপাড়ার আর্ত সামাজিক উন্নয়নে পূর্বের মতো কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এছাড়া শিক্ষা ও দারিদ্র্য বিমোচনে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জিয়াউর রহমান সাকলাইন। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আব্দুল কাইয়ূম মক্কু, মাহবুবুর রহমান ইমন ও জাবির হোসাইন।