চুনারুঘাটে স্বামীর দায়ের কোপে হাত-পা বিচ্ছিন্ন আকলিমা মারা গেলেন

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্বামীর দায়ের কোপে হাত-পা বিচ্ছিন্ন হওয়া সেই আকলিমা খাতুন (৩৫) মারা গেছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট নেওয়ার পথে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হবিগঞ্জের আউশকান্দি নামক স্থানে তার মৃত্যু হয়। এর আগে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে স্বামীকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ের করার অভিযোগে উপজেলার গাজিপুর ইউনিয়নের সোনাচং গ্রামের খেলার মাঠ সংলগ্ন রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার মাত্র ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হলো।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে ছনখলা গ্রামের আব্দুল রশীদের মেয়ে আকলিমাকে বিয়ে করেন সুজন মিয়া। তাদের ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে একে একে ৭ ছেলে-মেয়ে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু পারিবারিক অভাব-অনটন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায়ও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে আকলিমাকে কুপিয়ে বাম হাত ও বাম পা আলাদা করে পালিয়ে যান স্বামী সুজন।
খবর পেয়ে ওসি রাশেদুল হকের নেতৃত্বে চুনারুঘাট থানা পুলিশের একটি দল স্থানীয় ইউপি সদস্য ছালেক মিয়াসহ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সুজন মিয়া (৩৮) কে আটক করে। সুজন ওই উপজেলার গাজিপুর ইউনিয়নের সোনাচং এলাকার আহম্মদ আলীর ছেলে।
তবে স্বামী সুজনের দাবি, আকলিমা ৭ ছেলে-মেয়ে ও তাকে রেখে আরও দুটি বিয়ে করেছেন। সেই ক্ষোভে আকলিমার হাত-পা কেটে দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে, আকলিমার মেজ মেয়ে তানজিনা আক্তার জানান, তার বাবা মাদকাসক্ত। প্রায়ই নেশা করে বাড়ি ফিরে তাদের মাকে নির্যাতন করতেন।
তানজিনা বলেন, বাবা আমাদের ভরণপোষণ করে না। মা-ই আমাদের একমাত্র ভরসা। আমার বাবা সেই মায়ের হাত-পা কেটে দিয়েছে।
এখন আমরা কেমনে বাঁচুম, বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে আকলিমা-সুজন দম্পতির মেজ মেয়ে। এ সময় তার পাশে আকলিমার আরও ৪ সন্তান বিলাপ করছিল।
চুনারুঘাট থানার ওসি রাশেদুল হক বলেন, স্ত্রীর হাত-পা কাটার ঘটনায় তার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।