জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ আগস্ট ২০২৩, ৬:৩০:০১ অপরাহ্ন
![জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2021/01/sylheterdak-5-768x406.jpg)
বিশ্বাস হচ্ছে বরফের মতো,
খুব শীঘ্রই তা গলে যেতে পারে। -রবার্ট ফ্রস্ট
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার এক বছর পর ১৯৭৬ সালের শোকের মাসের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে।
আমাদের রণসঙ্গীতের রচয়িতা বিপ্লবের কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ই জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। একাধারে প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল। তাঁর কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে ছিলো হাতিয়ার। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা অফুরান শক্তি জুগিয়েছে মুক্তিকামি বাঙালিকে। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ। স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন এবং ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন। দার্শনিক চিন্তাশীল, সমাজ সচেতন, রাজনীতিক, বিদ্রোহী কবি নজরুল দুঃখকে আলিঙ্গন করেই সাহিত্যকর্মে তাঁর বহুমাত্রিক প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। যা আমাদেরকে আজও আলোর পথ দেখাচ্ছে। এই কথাটি নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই যে, বাংলা-ভাষাভাষি যে কোন ধর্মের মানুষ বিশ্বের যে কোন প্রান্তেই অবস্থান করে না কেন,তাঁদের মনের মধ্যে কবি কাজী নজরুল ইসলাম থাকবেন সদা জাগ্রত।
আসল কথা হচ্ছে, বিংশ শতাব্দির বাঙালির মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম।এই মর্যাদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। তাঁর সৃষ্টিকর্ম, মানবিকতা, ঔপনিবেশিক শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে দ্রোহ, ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধতাবোধ এবং নারী-পুরুষের সমতার বন্দনা বিগত সময়ে যেমন, আগামিতেও তেমনি মানুষের চলার পথের পাথেয় হয়ে থাকবে।