বিশ্বনাথে দু’পক্ষের সংঘর্ষের পর থানায় গণধর্ষণ মামলা!
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ৫:০৩:২৩ অপরাহ্ন
বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : শিম গাছের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলাকে কেন্দ্র করে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের তালুকজগত গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষের পর থানায় গণধর্ষণ মামলা দায়েরের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। মামলায় মধ্যস্থতাকারীসহ ১৪ জনকে আসামী করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে থানায় গণধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গত শুক্রবার সরেজমিনে এলাকা ঘুরে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ২০ আগস্ট সংঘর্ষের ঘটনায় মধ্যস্থকারীসহ দু’পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আলাপকালে স্থানীয়রা জানান, উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের তালুকজগত গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (মামলার বাদী) ও শামছুল হকের মধ্যে সীম গাছের চারার উপর ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে বিরোধ চলছে। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে মধ্যস্থতাকারীসহ দু’পক্ষের অন্তত ১৫ জন নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে আড়াল করে মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী গণধর্ষণ হয়েছে মর্মে সংঘর্ষের মধ্যস্থতাকারীসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে গত মঙ্গলবার বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন। এলাকাবাসী ‘মিথ্যা’ গণধর্ষণ মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সীম গাছের চারার উপর ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গণধর্ষণের ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো ও মিথ্যা। এতে এলাকার মান-সম্মান নষ্ট করেছে জাহাঙ্গীর। এসময় পঞ্চায়েতের পক্ষে বক্তব্য দেন এলাকার মুরব্বী হাজী উস্তার আলী, ছমির আলী, ইসকার আলী ও যুবক মোহাম্মদ আলী।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত সামসুল হকের সঙ্গে পূর্ব বিরোধের কথা স্বীকার করে মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ৩৮ বছর বয়সী স্ত্রী একজন ডায়াবেটিস রোগী। তার সঙ্গে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং প্রতিপক্ষ কর্তৃক একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছেন তারা।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় (৪নং) ওয়ার্ডের মেম্বার শাহনুর হোসাইন জানান, ময়লা-আবর্জনা ফেলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই মধ্যস্থতাকারীসহ দু’পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন। পরে গ্রামের মুরব্বীদেরকে নিয়ে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি শেষ করার প্রস্তাব দেই। শামসুল পক্ষ সালিশ মানলেও জাহাঙ্গীর আলম মানেনি। পরে শুনি থানায় গণধর্ষণ মামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া জানান, এলাকার লোকজন ও বাদীর আপন চাচাতো ভাই বলেছেন এখানে শুধু মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণ বা গণধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি। বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, গণধর্ষণ ও মারামারির ঘটনায় একটি মামলা নেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। তদন্তের পর ঘটনাটি ‘মিথ্যা’ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।