ড. ইউনূস প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিদেশিদের বিবৃতি নিয়ে সরকার বিচলিত নয়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১:৫৬:১৭ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, তিনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) বা তার লোকজন এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছেন। আর বিদেশি বিবৃতিতে সরকার চিন্তিত বা বিচলিত নয়।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতা নিয়ে অনুষ্ঠান শেষে ড. ইউনূসের মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ১৬০ বিশ্বনেতার বিবৃতি প্রদান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দুই পাতা বিজ্ঞাপন দিতে অন্তত দুই মিলিয়ন ডলার (২০ কোটি টাকার বেশি) লাগে। সে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে একটি বিজ্ঞাপনের মতো কয়েকজনের স্বাক্ষর নিয়েছেন। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের অর্ধেকেরও বেশি অবসরপ্রাপ্ত।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস বা তার লোকজন এখনো অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
প্রসঙ্গত, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার আদালতে মামলা চলছে। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ওই খোলাচিঠি পাঠান ১৬০ বিশ্বনেতা। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনসহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান সিজিয়ন পিআর নিউজওয়্যার তাদের ওয়েবসাইটে এ চিঠি প্রকাশ করে।
ওই চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটা হতাশাজনক যে একজনকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য অব্যাহতভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। অতীতে কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক মর্যাদা শুধু যে তার গুণের কারণে হয়েছে সেটি নয়। এর পেছনে অনেক বিনিয়োগ আছে।’
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যেসব মামলা চলছে, সেগুলোতে সরকারের কোনো প্রভাব ছিল না। ভবিষ্যতেও থাকবে না।’
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। তারা যেটা মনে করেন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সেভাবে বিচার চলছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনদের খোলাচিঠিতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বিচার স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান এর আগে শুনিনি। আমি মনে করি না, যারা এই আবেদনে শামিল হচ্ছেন, তারা তাদের সুনামের প্রতি সুবিচার করছেন।’
এই বিচার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করলে তাতে বাংলাদেশ সরকার স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একজন ব্যক্তি যিনি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, যিনি হাজার হাজার মানুষকে নিয়োগ করেছেন, যার সম্পত্তি আছে। তার আইনগত বিষয় থাকতে পারে। তার মানে এই না যে সে অপরাধী হয়ে যাবে বা সেটি তদন্ত করা যাবে না। পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যক্তি কি আছেন, যার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করা যাবে না।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বিবৃতি নিয়ে সরকার বিচলিত বা চিন্তিত নয়। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন, বিচার বিভাগই সিদ্ধান্ত নেবে এবং বিচার চলবে।’
ড. ইউনূসের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব আছে কিনা- সে প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আপনারা ১/১১ ঘটনাপ্রবাহ জানেন। কিন্তু তারপরে ১৫ বা ১৭ বছরে আমাদের দিক থেকে কিছু নেই।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সরকার বা দূতাবাস বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন করে কিছু বলার বা ব্যাখ্যা করার কিছু নেই। কারণ এ বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। তাদের সাহস থাকতে হবে বিচারের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার।