বর্ণাঢ্য আয়োজনে শাবিতে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত
কেউ র্যাগিং করলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে ঃ ভিসি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১২:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন
শাবি প্রতিনিধি : বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ২০২২-২৩ সেশনে ভর্তিকৃত স্নাতক প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে ও দুপুরে দুই ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়। সকালে এ ইউনিট এবং দুপুর আড়াইটায় একই স্থানে বি ও সি ইউনিটে ভর্তিকৃত নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়।
শাবি’র ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার সরকার এর সভাপতিত্বে এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক সিয়ামুল বাশার ও বাংলা বিভাগের প্রভাষক মাফরোজা আক্তারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭৫ সালের আগস্টে শহীদদের স্মরণ করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর সাংস্কৃতিক সংগঠন শিকড়ের পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া, শিক্ষার্থীদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। এরপর নবীনদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শাবি’র ২০২২-২৩ ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল হাকিম।
নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নিজের অনূভুতি ব্যক্ত করেন গণিত বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী প্রতীক পনতীর্থ, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী অর্পা জামান, এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক বিষয়ের উপর একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় একটি জঙ্গিবাদমুক্ত, র্যাগিংমুক্ত, ধূমপানমুক্ত ও শিক্ষার্থী বান্ধব বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণার মান অনেক ভালো। বর্তমানে আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নও দৃশ্যমান। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যেতে হবে। মাদক পরিহার করে পড়াশোনার মধ্যে দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করতে হবে।
নবীনদের উদ্দেশ্য উপাচার্য বলেন, তোমাদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। কোন সিনিয়র তোমাদের হলে কিংবা ম্যাসে ডাকলে তোমরা সেখানে যাবে না। যারা যাবে তারাও সমান অপরাধী। তবুও কেউ এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়লে সাথে সাথে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবে। তবে কোন ধরণের আত্মঘাতী ও হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, কেউ র্যাগিং করলে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
উপাচার্য বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অনেক শিক্ষার্থী বান্ধব, তারা সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে। শিক্ষার্থীরা যাতে যথা সময়ে পাস করে বের হতে পারে সেজন্য আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যাতে গুণগত শিক্ষা নিয়ে ঠিক সময়ে (চার বছরে) পাস করে তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে। তাই কোনভাবে ড্রপ দেওয়া যাবে না।
অনুষ্ঠানে স্কুল অব ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সৈয়দ বদিউজ্জামান ফারুক, এপ্লাইড সায়েন্সেস এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আরিফুল ইসলাম, স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেস অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. কামরুল ইসলাম, স্কুল অব এগ্রিকালচার এন্ড মিনারেল সায়েন্সেস অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার সরকার, ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলামসহ অন্যান্য ডীনরা উপস্থিত ছিলেন। তারা নিজ নিজ অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোকে পরিচয় করে দেন।
নবীন বরণে অন্যান্যদের মধ্যে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, যৌন হয়রানি ও নিপিড়ন নিরোধ সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাবিনা ইসলাম, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফজলুর রহমান, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নৃৎ এর সদস্য নৃত্য পরিবেশ করে নবীনদের বরণ করে নেয়। পরে কবিতা আবৃত্তি করে মাভৈঃ এর সদস্যরা। তারপর নবীনদের উদ্দেশ্য যৌন হয়রানিমূলক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য মাইসাস্ট মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।