কোম্পানীগঞ্জে মন্ত্রী ইমরান আহমদ
নলেজ পার্ক হবে তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের নতুন ঠিকানা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬:৩০:০৯ অপরাহ্ন
আবিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ থেকে : ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় কোম্পানীগঞ্জে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে নলেজ পার্কের। স্থানীয় খলিতাজুরি বিলেরপাড় মৌজায় সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটির অভ্যন্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ । এ উপলক্ষে সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটি প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মোস্তফা কামাল, সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান, ভারতের সহকারী হাইকমিশনার নীরাজ কুমার জয়সওয়াল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) এনডিসি জি এস এম জাফরউল্লাহ, জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পের (১২টি জেলায়) প্রকল্প পরিচালক এ কে এ এম ফজলুল হক।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিষয়ক তথ্যচিত্র ‘মুজিব চিরঞ্জীব’ প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানের ফাঁকে প্রকল্পের তথ্য চিত্র এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, নলেজ ইজ পাওয়ার। তার বাস্তব প্রমাণ নলেজ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। এই পার্ক হবে কোম্পানীগঞ্জের তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ঠিকানা। এর মাধ্যমে তরুণ-তরুণীরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে। প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণ পাবে। এখানে তিন হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ফলে কোম্পানীগঞ্জের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন আসবে।
মন্ত্রী ইমরান আহমদ আরো বলেন, আজকের তরুণরাই আগামী দিনের চালিকাশক্তি। নলেজ পার্ক তরুণদের জন্যই হচ্ছে। তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে। নলেজ পার্কে আনলিমিটেড সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এই সুযোগ তরুণদের কাজে লাগাতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদেরকে স্মার্ট হতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করবে আশা করেছিলাম। তারা সাড়া না দেওয়ায় আমরা পিছিয়ে পড়েছি। তিনি নির্ধারিত ‘টাইম ফ্রেইম’ এর মধ্যে নলেজ পার্কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্জন করেছি। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা দিয়েছিলেন। আর তার পেছনে চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাদের নেতৃত্বে ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশও অর্জিত হবে।
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরউল্লাহ বলেন, হাইটেক পার্ক সারাদেশে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। আমাদের ইউনিভার্সিটির ছেলে-মেয়েরা কাজের ক্ষেত্র খোঁজে। অনেকেই পায় না। হতাশায় ভোগে। তাদের জন্য দেশের ৯৯টি জায়গায় হাইটেক পার্ক, নলেজ পার্ক, সফটওয়্যার পার্ক এবং আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেটর সেন্টার তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জের হাইটেক পার্কে র্যাংগস ৩২ একর জায়গা নিয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে তারা উৎপাদনে চলে যাবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মোস্তফা কামাল বলেন, এই পার্কে থাকবে স্টার্ট-আপ ফ্লোর ফ্যাসিলিটি, যেখানে প্লাস এ্যান্ড প্লে সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য উন্নত গবেষণার সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। থাকবে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষায়িত ল্যাব। প্রকল্পটি ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের লক্ষ্যকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, হাইটেক পার্ক হবে এটা একসময় স্বপ্ন ছিল। এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। জাতির পিতার কন্যা আমাদেরকে ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। এখন স্মার্ট বাংলাদেশের পথ দেখাচ্ছেন। এটি জাতির পিতারও স্বপ্ন ছিল। এই স্বপ্ন আমরা পূরণ করবই।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের পরিচালক (টেকনিক্যাল) গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হাজং, কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হিল্লোল রায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আপ্তাব আলী কালা মিয়া, গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক অস্থায়ী চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব আলী, উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়া, ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী জিয়াদ আলী, উত্তর রনিখাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান মাস্টার, দক্ষিণ রনিখাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন ইমাদ, গোয়াইনঘাট নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুল, কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার কামরুজ্জামান রাসেল, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদিউজ্জামান আহমেদ প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী হাইটেক পার্কে টুগেদার আইটি ইন্ডাস্ট্রি, আইরিশ ইলেক্ট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ও হাইটেক পার্ক বোট ক্লাবের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।