কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্স
দেড় বছরেও শুরু হয়নি ৫০ শয্যার কার্যক্রম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৪:১৫:৪৭ অপরাহ্ন
![<span style='color:#000;font-size:18px;'>কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্স</span><br/> দেড় বছরেও শুরু হয়নি ৫০ শয্যার কার্যক্রম <span style='color:#000;font-size:18px;'>কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্স</span><br/> দেড় বছরেও শুরু হয়নি ৫০ শয্যার কার্যক্রম](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2023/09/P-4-4.jpg)
আবিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ থেকে : নতুন ভবন নির্মিত হলেও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্সের ৫০ শয্যার কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। ৩১ শয্যার কাঠামোয় এখনো চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। এ কারণে আধুনিক চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না উপজেলার মানুষ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে ১৪ কোটি ৭০ লাখ ৬৪ হাজার ১৭৪.৯২ টাকা ব্যয়ে নতুন ছয়তলা ভবন ও কোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। গত বছরের মার্চে শেষ হয় কাজ। জুলাইয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের আওতায় হাসপাতাল ভবন, চিকিৎসক ও নার্স কোয়ার্টার, বিদ্যুতের সাব স্টেশন, একটি গ্যারেজ ও এক কিলোমিটার আরসিসি ঢালাই সড়ক নির্মাণ করা হয়। এরপর গত দেড় বছরেও শুরু হয়নি পঞ্চাশ শয্যার কার্যক্রম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩১ শয্যার জনবল কাঠামো অনুযায়ী যে জনবল দরকার, কোম্পানীগঞ্জ হাসপাতালে তা-ও নেই। এখানে চারজন বিশেষজ্ঞসহ মোট ১২জন চিকিৎসক থাকার কথা। আছেন সাতজন। তারা হলেন- খাদিজা বেগম, কানিজ ফাতেমা, ফাতেহা রিজওয়ানা (অ্যানেসথেসিয়া), মায়া রানী দাস (গাইনি), নিয়াজ ফারুক চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম শাকিল ও মুনিরা আবু জাফর।
হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, সার্জারি ও দন্ত চিকিৎসকের পদগুলো শূন্য। ৩১ শয্যায় সুইপার থাকার কথা ৫ জন। আছে দুইজন। এখানে একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই তার চালক। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের (স্যাকমো) চারটি পদের বিপরীতে আছেন দুজন। তাদের একজন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের চিকিৎসা দেন। অপরজন এনসিডি (নন কমিউনিক্যাবল ডিজিজ) কর্নারে রোগী দেখেন।
হাসপাতালের এক্স-রে টেকনোলজিস্ট আব্দুস সাত্তার তিনদিন কোম্পানীগঞ্জ এবং বাকিদিন জৈন্তাপুরে সময় দেন। মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান (ইসিজি) পদ শূন্য। ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট পদে থাকা ব্যক্তি অন্য একটি হাসপাতালে ডেপুটেশনে কর্মরত। জরুরি বিভাগে নেই জরুরি মেডিকেল অফিসার।
অপরদিকে, চিকিৎসক ও লোকবল সংকটের কারণে অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে কর্তব্যরত ডাক্তার-নার্সদের হিমশিম খেতে হয়। গতকাল সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে অপেক্ষমাণ কয়েক শ’ রোগী। তাদের চিকিৎসা দিচ্ছিলেন পাঁচজন চিকিৎসক। আর অন্তর্বিভাগে চিকিৎসক প্রভাকর রায় রোগী দেখছিলেন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ি গ্রামের আবু আসাদ বলেন, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর পর তিনি ডাক্তার দেখাতে পেরেছেন। কিন্তু, টেকনোলজিস্ট না থাকায় তাকে বাইরে গিয়ে এক্স-রে করতে হয়েছে। ভাগ্নিকে ডাক্তার দেখাতে সকাল ১০টায় হাসপাতালে আসেন উত্তর জাঙ্গাইল গ্রামের সিদ্দেক আলী। বেলা সাড়ে ১২টার পর ডাক্তারের সাক্ষাৎ পান তিনি। জানা যায়, গত রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেয় ১১৮৭ রোগী। আর ভর্তি হয় ৪৬ জন। শয্যার অভাবে অতিরিক্ত ভর্তি হওয়া রোগীদের ঠাঁই হয় ওয়ার্ডের মেঝেতে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) কামরুজ্জামান রাসেল বলেন, নতুন ভবনের নিচতলায় এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) কর্নার ও এএনসি (প্রসবসেবা) কর্নার চালু রয়েছে। দুতলায় জিন এক্সপার্ট (দ্রুত যক্ষ্মা শনাক্ত করার যন্ত্র) মেশিনের মাধ্যমে যক্ষ্মারোগী শনাক্তের কার্যক্রম চলছে। এছাড়া জনবল ও যন্ত্রপাতি চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।