ছাতকে মামার হাতে ভাগ্নে খুন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬:০৯:৫০ অপরাহ্ন
জাউয়া বাজার (ছাতক) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : ছাতকের জাউয়াবাজার ইউনিয়নের বড়কাপন বানায়ত গ্রামে আপন মামার হাতে ভাগ্নে সাদির আহমদ (৩০) নামে এক যুবক খুন হয়েছে। নিহত যুবক বানায়ত গ্রামের মনর উদ্দিনের পুত্র। গত রোববার রাতে ভাগ্নে সাদিরের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করা হয়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ভোরে সাদির মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর আগে বানায়ত গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলীর পুত্র মনছব আলী (৪৫) একই বাড়ির তার চাচা নুর আলীর পুত্র আশিক মিয়াকে খুন করে। এই খুনের মামলায় তার ভগ্নিপতি মনর উদ্দিন, ভাগ্নে নিহত সাদির আহমদ ও তার মাসহ পরিবারের ৯ জন আসামী হয়ে মনছব আলীর জন্য জেল খেটেছেন। বর্তমানে তারা সবাই জামিনে রয়েছে।
জামিনে আসার পর এলাকার আট গ্রামের মুরুব্বিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সালিশের মাধ্যমে নগদ কিছু টাকা দিয়ে আশিক মিয়া খুনের মামলার বিষয়টি আপোসে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিশকৃত মোট টাকা থেকে চল্লিশ হাজার টাকা ঘাটতি ছিল। ওই টাকার জোগাড় করতে গত রোববার রাত ৮টায় তাদের আত্মীয় দিলারা বেগমের বাড়িতে বৈঠক ছিলো। ওই বৈঠকে মনছব আলী টাকা দিতে অপারগতা জানালে এ নিয়ে মনছব আলী ও তার ভগ্নিপতি মনর উদ্দিনের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মনছব আলী মনর উদ্দিনকে কপালে ঘুসি মেরে রক্তাক্ত করেন। পিতার রক্তাক্ত অবস্থা দেখে পুত্র সাদির আহমদ তার মামা মনছব আলী, মশ্রব আলী ও আনছার আলীর কাছে তার পিতাকে মারার কারণ জানতে চায়। তখন তাদের সাথে সাদির আহমদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মনছব আলীসহ ১২-১২ জন সংঘবদ্ধভাবে সাদিরকে মারধর করে ফেলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে কৈতক ২০ শয্যা হাসপাতালে এবং পরে রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল সোমবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনরা তার লাশ নিয়ে আসলে বাদ মাগরিব বড়কাপন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা শেষে পঞ্চায়েতি কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত সাদির আহমদের এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহত সাদির আহমদের পিতা মনর উদ্দিন বলেন, মনছব আলীর জন্য তার খুনের মামলায় আমি আমার স্ত্রী, মেয়ের জামাই ও ছেলেরাসহ আমার পরিবারের নিরপরাধ ৯ জন মানুষ জেল খেটেছি। কিন্তু খুনের মামলা নিষ্পত্তির টাকা না দিয়ে পাল্টা আজ আমার ছেলেকে খুন করেছে। আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই।
এলাকার লোকজন জানান, মনছব আলী মাছ বিক্রি করে সংসার চালাতেন। বর্তমানে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা পিতার মৃত্যুর পর নমিনী হয়ে মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা পেয়ে উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠেছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য এহসান আহমদসহ এলাকাবাসী খুনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে গতকাল সোমবার সকালে সহকারী পুলিশ সুপার ছাতক সার্কেল রণজয় চন্দ মল্লিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম জানান, এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি।