আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৫:০৫:২৮ অপরাহ্ন
যে নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারে না, সে কখনো প্রকৃতপক্ষে অন্য কারও ওপর আস্থা রাখতে পারেন। -কাদিনল দ্য য়েটজ
বাড়ছে সাক্ষরতার হার। গত ১৩ বছরে বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিসংখ্যান অধিদপ্তর এই তথ্য দিয়েছে। তাদের মতে, দেশে এখন ১১-৪৫ বছর বয়সিদের মধ্যে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ২০১১ সালে এ হার ছিল ৫৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত ১৩ বছরে এই হার বেড়েছে ১৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ।এই প্রেক্ষাপটে আজ দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস।
জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসটি ১৯৬৭ সালে প্রথমবারের মতো পালিত হয়। ১৯৬৬ সালের ২৬ শে অক্টোবর ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে ৮ই সেপ্টেম্বর তারিখকে “আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস” হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সকল ক্ষেত্রে সাক্ষরতার গুরুত্ব তুলে ধরাই হচ্ছে এই দিবস পালনের লক্ষ। জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র এ দিবসটি পালন করে। আমাদের জাতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যেমন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটেও দিবসটি পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ পৃথিবীর প্রায় ৭৭৫ মিলিয়ন অধিবাসির ন্যূনতম প্রয়োজনীয় অক্ষরজ্ঞানের অভাব রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি পাঁচজনে একজন এখনও শিক্ষিত নন এবং এই জনগোষ্ঠির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই নারী।
বিশ্বের প্রায় ৬০ মিলিয়ন শিশু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতার হার সবচেয়ে কম। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার বাড়ছে, তবে ধীর গতিতে। স্মরণ করা যেতে পারে, দেশে ১৯৭১ সালে সাক্ষরতার হার ছিলো ১৬ দশমিক ৮ ভাগ। ১৯৯১ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ দশমিক ৩ এবং ২০০১ সালে ৪৭ দশমিক ৯। ২০০৮ সালে ৪৮ দশমিক ৮ ভাগ এবং ২০০৯ সালের হিসাবে ৫৩ ভাগ। আর বর্তমানে এই হার প্রায় ৭৩ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষদের সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ১০ শতাংশ। নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ৭৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।সরকার অবশ্য সাক্ষরতা নিয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু কাজে রয়েছে ধীরগতি। উল্লেখ্য স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকেই দেশে শুরু হয় সাক্ষরতা আন্দোলন। পরবর্তীতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও এতে অংশ নেয়।
সাক্ষর মানে অক্ষরজ্ঞান। অর্থাৎ যার অক্ষরজ্ঞান আছে তিনিই সাক্ষর। আর ইউনেস্কোর সংজ্ঞা অনুযায়ি সাক্ষরতা হলো- পড়া, অনুধাবন করা, মৌখিকভাবে এবং লেখার বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যাখ্যা করা, যোগাযোগ স্থাপন করা এবং গণনা করার দক্ষতা। অর্থাৎ সাক্ষরতা বলতে লিখতে, পড়তে, গণনা করতে ও যোগাযোগ স্থাপন করার সক্ষমতাকে বোঝায়। এর সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করতে জানা। সময়ের পরিক্রমায় এখন দেশে বেড়েছে সাক্ষরতার হার, শিক্ষিতের হার। তবে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে দেশের মানুষকে শতভাগ সাক্ষর হতে হবে। সর্বোপরি, শতভাগ প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত হলে কোন শিশু নিরক্ষর হয়ে বেড়ে উঠবে।