আজমিরীগঞ্জে বিভিন্ন সমস্যায় ম্লান উপহারের ঘরের আনন্দ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৪:৩৫:৫৬ অপরাহ্ন
আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : শ্রীধামপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের সামনে ময়লা- আবর্জনাযুক্ত জলাশয়, সুপেয় পানির অভাব ও যোগাযোগের বিড়ম্বনায় উপকারভোগীরা।
দুই সারিতে ১৮টি আধাপাকা রঙিন ঘর। এগুলোর সামনের জলাশয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনাযুক্ত পানি থেকে প্রতিনিয়ত ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। সড়কের অভাবে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন ঘরগুলোর বাসিন্দারা। এই দুর্ভোগের চিত্র আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নে অবস্থিত শ্রীধামপুর গ্রাম সংলগ্ন এই আশ্রয়ন প্রকল্পের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে দ্বিতীয় পর্যায়ে এ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ১৮টি ঘর নির্মাণ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন।
জানা যায়, ২০২১ সালের ৩০ জুন বিদ্যুৎ, পানি, শৌচাগার এবং রান্নাঘরের ব্যবস্থাসহ ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু বর্তমানে চলাচলের জন্য কোন সড়ক না থাকায় বাসিন্দাদের চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের বাড়ির পেছন দিয়ে। কিন্তু বাড়ির মালিকরা প্রায়ই তাদের চলাচলে বাধা দেন। এনিয়ে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গুচ্ছগ্রামের প্রবেশ মুখে রাস্তা নেই। কয়েকটি বাঁশ দিয়ে তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে লোকজন চলাচল করছেন। ঘরের মধ্যে উঠোনের মাটি সরে গিয়ে জলাশয়ে রূপান্তরিত হয়েছে। সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানিতে ময়লা-আবর্জনা ভাসছে। পানি কালচে রঙ ধারণ করেছে।
উপকারভোগী জয়বাশি দাস, শিল্পি রানি দাসসহ কয়েকজন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পাওয়ার সময় সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু ২০২২ সালের বন্যায় প্রকল্পের ভেতরের উঠোনের মাটি সরে গিয়ে বিশাল বিশাল গর্ত হয়। সেগুলো এখন জলাশয়ে রূপান্তরিত হয়েছে। তারপর থেকেই অন্যের বাড়ির পিছন হয়ে ময়লা-আবর্জনার উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রায় সময়ই তারা আমাদের নিষেধ করেন এবং গালমন্দ করেন। তাদের গালমন্দ সহ্য করে আমাদেরকে চলাচল করতে হয়।
তারা আরও জানান, শ্রীধামপুর গ্রামের কয়েকটি টয়লেটের ময়লা আবর্জনা আশ্রয়ন প্রকল্পের ভেতরের জলাশয়ে প্রবেশ করছে প্রতিনিয়ত। এতে করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শিশুরা প্রায় সময় ওই ময়লাযুক্ত পানিতে নামছে। এতে তাদের শরীরে চর্মরোগসহ নানা অসুখ-বিসুখ হচ্ছে। দুটি নলকূপ থাকলেও একটি অকেজোঁ থাকায় সুপেয় পানিরও অভাব রয়েছে।
প্রকল্পের বাসিন্দা ঠাকুর মণি প্রকাশ জানান, ‘পূর্ব দিকে আমরা যাইতে পারি না, পশ্চিমেও পথ নাই, দক্ষিণেও নাই, উত্তরেও নাই। সবদিকেই গ্রামবাসীর জায়গা। অনেকটা বন্দি জীবনের মতো কাটাচ্ছি। আমাদের এই সমস্যার কথা এসিল্যান্ডকে গত কয়েকদিন আগে মৌখিকভাবে অবগত করেছি। সরকারের ঘর পেয়ে আমরা অত্যন্ত অনন্দিত, কিন্তু এ সমস্যাগুলো আমাদের অনেক কষ্ট দিচ্ছে।’