বিশ্ব ওজন দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৫:৪৫:২৭ অপরাহ্ন
কর্মহীন জীবন হতাশার কাফনে মোড়ানো জীবন্ত লাশ। -ডেল কার্নেগি
বিশ্ব ওজন দিবস আজ। ওজন স্তরের ক্ষয় ও এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপি গণসচেতনতা তৈরিতে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের ১৬ তারিখ এই দিবসটি পালিত হয়। বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় যথাযথ মর্যাদায়। মূলত বায়ুমন্ডলে ওজন স্তরের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বায়ুমন্ডলের ওজন স্তর সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিনিয়ত ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) গ্যাসসহ অন্য ওজন স্তর ক্ষয়কারি গ্যাস উৎপাদন ও ব্যবহারের ফলে ওজন স্তর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিই এই দিবসটির লক্ষ। বিশ্বব্যাপি যখন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে আতংক বিরাজ করছে, তখন বিশ্ব ওজন দিবস পালনের গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে।
স্মরণ করা যেতে পারে, ১৯৮৭ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর বায়ুমন্ডলের ওজন স্তর ক্ষয়ের জন্য দায়ি দ্রব্যগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিত করার জন্য ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় ওজন স্তর ধ্বংসকারি পদার্থের ওপর মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হয়। এই ঘটনাটিকেই স্মরণ করে পালিত হয় বিশ্ব ওজন দিবস। আর এই প্রটোকলে অন্তর্ভুক্ত সব দেশে ২০৪০ সাল নাগাদ এসব গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ হওয়ার কথা। বাংলাদেশ ১৯৯০ সালে এই মন্ট্রিল প্রটোকলে স্বাক্ষর করে। এরপর থেকে বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ওজন স্তরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত বৈশ্বিক পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি। বাংলাদেশে শহর এলাকায় পরিবেশ দূষণে ক্ষতি হয় বছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা। পরিবেশ জনিত দূষণে প্রতি বছর সারা বিশ্বে ৮০ হাজার মানুষ মারা যায়। বিভিন্ন গবেষণার তথ্য অনুযায়ি ধারণা করা হয়, ওজন স্তরের ক্ষয়ের ফলে যে অতি বেগুনী রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করে তা ত্বকের ক্যান্সার, চোখের ছানি, উদ্ভিদ জগতের ক্ষতি, সমুদ্রের জীবের হ্রাস ইত্যাদি সমস্যার কারণ হতে পারে। ওজন স্তর পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের এমন একটা অংশ যেখানে সাধারণত পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের তুলনায় খুব ঘন এবং তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজন গ্যাস থাকে।
ওজন স্তর ধ্বংসের প্রধান কারণগুলো হচ্ছে- বজ্রপাত, আলোক-রাসায়নিক বিক্রিয়া, অগ্নোদগম, অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব, ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন, নাইট্রিস অক্সাইড, ক্রোমিন পরমাণু, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফারের কণা ইত্যাদি। ওজন স্তর ধ্বংস মানে পরিবেশ ও মানবজাতির জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনা। বিশেষ করে ত্বকের ক্যান্সার ও চোখের ছানি পড়া রোগের প্রকোপ বাড়বে। তাছাড়া, প্রাণি জগতের অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই সিএফসিসহ অন্যান্য গ্যাস উৎপন্ন হয় এমন শিল্প কারখানাগুলোর গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি। এটাই আজ বিশ্ব ওজন দিবসের অঙ্গীকার হওয়া উচিত।