দক্ষিণ সুরমায় ডাকাত আতংক
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৭:১২:২৮ অপরাহ্ন
ডাকাতি রোধে জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চেয়েছে পুলিশ
আনাস হাবিব কলিন্স
দক্ষিণ সুরমায় দেখা দিয়েছে ডাকাত আতংক। তিন দিনের ব্যবধানে গোপশহর ও টিকরপাড়ায় মুখোশপরা ডাকাত দল একই কায়দায় হানা দেয়। এতে লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ডাকাতির ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য, ডাকাতদের গ্রেফতারে তাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ডাকাতি রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চেয়েছে পুলিশ। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ভোররাতে গোপশহরের মাওলানা ইউসূফ আলীর বাড়িতে ডাকাতির রেশ কাটতে না কাটতেই ১৪ সেপ্টেম্বর সিলাম টিকরপাড়া গ্রামে হানা দেয় ডাকাত দল। ইশতেকার গণি তাজেলের বাড়ির গ্রিলের তালা কেটে ঘরে প্রবেশ করে মুখোশপরা ডাকাতরা। লুটে নেয় দশ লক্ষাধিক টাকার মালামাল। ডাকাত দলের হামলায় গুরুতর আহত হন তাজেল।
এদিকে. গোপশহরে ডাকাত দলের হামলায় আহত মাওলানা ইউসুফ খানের চাচতো ভাই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোর্শেদ খান জানান, গুরুতর আহত ইউসুফ খান গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন । ডাকাতদের হামলায় গুরুতর আহত একজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান তিনি। ওই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জানান, ডাকাতির এ ঘটনায় লোকজনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। ডাকাতি প্রতিরোধে স্থানীয় যুবকদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠনের চিন্তা-ভাবনা চলছে বলেও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মামুন খান জানান, গোপশহরে ডাকাতির ঘটনাটি অত্যন্ত দু:খজনক। মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা ডাকাতদের পাকড়াও করতে পুলিশকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তিনি আরো জানান, দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ডাকাতি প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
সিলাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ওলিদুর রহমান জানান, হঠাৎ করে ডাকাতির ঘটনা জনমনে প্রভাব ফেলেছে। এ ব্যাপারে আইন শৃংখলা বাহিনীর নজরদারী বাড়ানোর দাবি জানান তিনি। বিশেষ করে অন টেস্ট সিএনজি অটোরিক্সার ব্যাপারে পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিন দিনের ব্যবধানে দুটি ডাকাতির ঘটনায় গোটা এলাকায় অস্বস্থি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ সুরমা সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি ফারুক আহমদ। তিনি বলেন, বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যের নজরে আনা হয়েছে। দক্ষিণ সুরমার আইন শৃংখলা রক্ষায় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামসুদ্দোহা (পিপিএম) বলেন, এ ব্যাপারে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি বলেও জানান ওসি।
সিলামের টিকরপাড়ায় ডাকাতি প্রসঙ্গে মোগলাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ এস. এম মাইন উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ডাকাতদের গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস) মু. মাসুদ রানা জানান, দক্ষিণ সুরমায় ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে কাজ করছে পুলিশ। পোষাকধারীদের পাশাপাশি সাদাপোষাকেও পুলিশ সদস্যরা মাঠে তৎপর রয়েছেন। পুলিশের তৎপরতার কারণে সিলেট শহর ও শহরতলিতে ডাকাতির ঘটনা কম ঘটেছে। বিশেষ করে গোয়েন্দা তৎপরতা থাকায় বিভিন্ন সময় প্রস্তুতিকালেই ডাকাতরা ধরা পড়ছে বলে মন্তব্য করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।