৮৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আলোচনা সভা
এ অঞ্চলের মানুষের সার্বজনীন প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৫:৩৭:৫৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: : ‘কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ সিলেট অঞ্চলের জনমানুষের হৃদয়ের স্পন্দনকে ধারণ করে একটি সার্বজনীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ভাষা আন্দোলনকে সাহিত্য সংসদের ছোট্ট পরিসরে থেকে সূচনা করে রাজপথের আন্দোলনে রূপ দিয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানিক নজরুলচর্চা, রবীন্দ্রজন্মশতবার্ষিকী পালনসহ এ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকাশ ও নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে জাতীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছে। পূর্বসূরীদের সূচিত এই ধারাকে আরও বেগবান করতে নতুন প্রজন্মকে এই প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর দরগাহ গেইটে দেশের প্রাচীনতম সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের (কেমুসাস) ৮৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহমেদ নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মবনুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংসদের সাবেক সভাপতি কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী, সাবেক সভাপতি হারুনুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সহসভাপতি আফতাব চৌধুরী ও সহসভাপতি কবি কালাম আজাদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কেমুসাসের সহসাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবদুস সাদেক লিপন। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেমুসাসের কার্যকরী পরিষদ সদস্য প্রাবন্ধিক ফায়যুর রাহমান। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক সিলেটের ডাকের প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের, কেমুসাসের কার্যকরী পরিষদ সদস্য গল্পকার সেলিম আউয়াল ও ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি সিলেটের উপপরিচালক মাওলানা শাহ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
সংসদের সাবেক সভাপতি কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী বলেন, ব্রিটিশ ভারতে এই অঞ্চলে মুসলিম জাগরণের নেপথ্যে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ। এই সোনালী ইতিহাসকে চর্চার মাধ্যমে আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
সাবেক সভাপতি হারুনুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের গৌরবময় অতীত পুরো সিলেটবাসীর গৌরবময় অতীত। এই অতীতকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে আগামীতে স্কুল-কলেজভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে তিনি কেমুসাসের প্রতি আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহমেদ নূর অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের পূর্বসূরী গুণীজনের ঘামেশ্রমে গড়া এই প্রতিষ্ঠানের মিশনকে সামনে এগিয়ে নিতে ব্যাপক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি আগামী প্রজন্মকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সিলেবাসীকে এই প্রতিষ্ঠানের পাঠাগারে তাদের সন্তানদের পাঠানোর আহবান জানান।
মূলপ্রবন্ধে প্রাবন্ধিক ফায়যুর রাহমান বলেন, ব্রিটিশভারতে সিলেটের পিছিয়েপড়া মুসলিম সমাজের পুনর্জাগরণ ও বিশশতকের মুসলিম মানসকে বুঝতে হলে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের পটভূমি জানতে হবে। এ প্রতিষ্ঠান তিলেতিলে এ অঞ্চলকে আলোকিত করেছে। জ্ঞান, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও নেতৃত্বকে ঋদ্ধ করেছে। তাই আগামীদিনের ইতিহাসের গতিপ্রকৃতি বুঝতে হলে মুসলিম সাহিত্য সংসদের ইতিহাসকে জানতে হবে।
সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন এহসান আহমদ রোহান। অনুষ্ঠান শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন জামিআ সিদ্দিকিয়ার পরিচালক মুফতি মনসুর আহমদ।