বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৩:৫৮:৪২ অপরাহ্ন
নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হলে নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে হবে। -ফ্রান্সিস টম্পসন
পণ্যমূল্যের উর্ধগতিতে দেশের মানুষ যখন দিশেহারা, তখন একটি সুসংবাদ দিলো জাতিসংঘ। তাদের মতে, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমছে। বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম গত আগস্টে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে দাঁড়ায়। এ তথ্য জানায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। সংস্থাটির বৈশ্বিক খাদ্যমূল্যের আগস্ট মাসের সূচকে দাম কমার বিষয়টি ওঠে এসেছে। বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য হয়, এমন পণ্যদ্রব্যের দাম ওঠানামার ওপর নজর রাখে এফএও।
এই সুসংবাদটি আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়।অর্থাৎ বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও পণ্যমূল্য কমবে, এমনটি আশা করা যায় না। বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকলেও দেশীয় বাজারে তার কোন সুফল মিলছে না। বরং প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে বিশ্ববাজারে খাদ্যের মূল্যসূচক অনেক কমেছে। গত বছরের মার্চে এই সূচক রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর জুলাই মাসে তা মান প্রায় ৩৬ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে সরকারি বাজার যাচাইকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে দেশে খাদ্যপণ্যের দাম ২৪২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ডলার সংকট, আমদানি কমে যাওয়া ও পণ্যের সরবরাহের সংকটের সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়িরা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। আর ব্যবসায়িদের দাবি, কিছুদিন ঊর্ধ্বমুখি থাকলেও আন্তর্জাতিক বাজারে এখন পণ্যের দাম নিম্নমুখি। কিন্তু দেশীয় আমদানিকারকরা সবাই একযোগে কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দেখা গেছে, এক বছর আগে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ৯০ টাকা। বর্তমানে সেই চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। বছরের ব্যবধানে ভোজ্য তেলের দাম বিশ্ববাজারে ৩৯ শতাংশ পয়েন্ট কমলেও দেশীয় বাজারে সেভাবে কমেনি। ভোক্তাদেরকে এখনো এক লিটার ভোজ্য তেল কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১৭৫ টাকা। এ ছাড়া এক কেজি আটা কিনতে ভোক্তাকে এখনো ৫৫ থেকে ৬০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। বছরের ব্যবধানে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৮০ টাকা। এক বছর আগে ১৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া আদার কেজি এখন ৪০০ টাকা। বছরের ব্যবধানে দেশি পিয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানিকৃত রসুনের দাম ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৪০ টাকা হয়েছে।
বাজার-অর্থনীতির কোন শর্তই আমাদের দেশে কার্যকর নেই। কোন সময় ছিলোও না। বরাবরই আমদানিকৃত পণ্য বিদেশে দাম কমলেও আমাদের দেশে কমানো হয় না। তাছাড়া, দেশে সারা বছরই কোন কারণ ছাড়াই বাড়ানো হয় পণ্যমূল্য। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হচ্ছে, সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় বাজারে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্ব অর্থনীতির খারাপ অবস্থা কেটে যাচ্ছে কিন্তু আমাদের আরও প্রকট হচ্ছে। এর কারণ অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।