শরীরে ধাক্কা লাগা নিয়ে শাবি ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের উত্তেজনা ॥ হলের কক্ষ ভাঙচুর
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৪:৫৯:৫১ অপরাহ্ন
শাবি প্রতিনিধি : শরীরে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ও হলের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমানের সমর্থক মো. শিপন হাসান ও ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভ’র মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভ ক্যান্টিন থেকে খাবার নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার পথে খলিলুর রহমানের সমর্থক মো. শিপন হাসানের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে শিপন ও নাজমুলের মধ্যে প্রথমে বাগবিতন্ডা হয়। এক সময় তারা হাতাহাতি ও মারিমারিতে জড়ায়। খলিলুরের সমর্থক শিপন ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে তার গ্রুপের অন্য কর্মীদের নিয়ে হলে নাজমুল হুদার (৩২২/বি) কক্ষে গিয়ে ভাঙচুর করেন বলে জানা যায়। এসময় হলে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয় এবং উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর হল প্রভোস্ট এবং প্রক্টররা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এ বিষয়ে মো. শিপন হাসান বলেন, ‘ক্লাস শেষে হলের ক্যান্টিনে খাবার খেতে যাচ্ছিলাম। ক্যান্টিনের দরজা দিয়ে ঢোকার সময় শুভ ভাইয়ের সাথে আমার ধাক্কা লাগে। তিনি উল্টো দিক দিয়ে বের হচ্ছিলেন। ধাক্কা লাগার পর তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি আমাকে প্রথম চপেটাঘাত মারেন। এরপর তার সাথে আমার হাতাহাতি হয়। পরে তিনি আমাকে ক্যান্টিনের চেয়ার দিয়েও আঘাত করেন। এতে আমার চোখের পাশে এবং হাতে কিছু অংশ কেটে যায়। হলের কক্ষ ভাংচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, হলে ভাঙচুরের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। আমাকে মারধর করার পর আমাকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে আমি এখানেই আছি।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভ বলেন, আমি ক্যান্টিন থেকে খাবার নিয়ে বের হচ্ছিলাম। তখন খলিলুর ভাইয়ের সমর্থক শিপনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তখন সে আমাকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এর একটু পরই তার গ্রুপের প্রায় ৩০-৪০ জন ছেলেকে নিয়ে আমার কক্ষে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। সেখানে জানালার কাঁচ এবং একটি সাউন্ড বক্স ভেঙে ফেলে। ক্যান্টিনের ঝামেলার পর আমার গ্রুপের সমর্থকদের সাথে খলিল ভাইয়ের সমর্থকদের কোন ঝামেলা হয়নি। এরপর প্রভোস্ট বডি ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসেছিলেন হলে। তারা বিষয়টি আলোচনা করে সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। চেয়ার দিয়ে শিপনকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, এটা মিথ্যা অভিযোগ। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা সাজানো হয়েছে। আহত মো. শিপন হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমানের অনুসারী। নাজমুল হুদা শুভ শাখা ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।
ঘটনার বিষয়ে শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট (ভারপ্রাপ্ত) কৌশিক সাহা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার শোনার পরপরই আমরা হলে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করেছি। এ বিষয়ে জরুরি মিটিং ডেকেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ঘটনার পর পরই সেখানে যাই। আমরা আমাদের উপস্থিতিতে দুই পক্ষকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে এসেছি। এখন পরিবেশ শান্ত রয়েছে। হল কর্তৃপক্ষ সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। এরপর যদি হল প্রশাসন মনে করে তখন প্রক্টরিয়াল বডি সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে।