বিপন্ন পক্ষীকূল রক্ষায়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২:০৯:১৯ অপরাহ্ন
তোমার ভালো আচরণ দিয়ে অপরের মন্দ আচরণকে প্রতিহত করো। -আল হাদিস
সৃষ্টিকর্তার অপরূপ সৃষ্টি হচ্ছে প্রাণীজগৎ। এর মধ্যে পাখি হচ্ছে অতি আকর্ষণীয় অনবদ্য সৃষ্টি। হাজারো বর্ণের হাজারো প্রজাতির পাখি খোলা আকাশে ডানা ঝাপটিয়ে ওড়ে বেড়ানোর দৃশ্যটি মনোমুগ্ধকর। আর পাখির ডাক, পাখির গানের তো তুলনা নেই। পাখির গানে জেগে ওঠা কিংবা পাখির গানে সন্ধ্যা নেমে আসার চিরাচরিত দৃশ্যটি গ্রাম বাংলায় আজও পরিচিত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে বর্ণিল পাখিগুলো। প্রকৃতি থেকে হারিয়ে গেছে অনেক পাখি। অনেক প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। গবেষকদের মতে, এখন আর আগের মতো শীত প্রধান দেশগুলো থেকে অতিথি পাখিরা আসে না আমাদের দেশে শীত মওসুমে। তেমনি দেশীয় অনেক পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কমে গেছে সব ধরনের পাখির সংখ্যা।
জরিপের তথ্য হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে পাখির সবচেয়ে বেশি বিলুপ্তি ঘটছে এশিয়া মহাদেশে। বিগত ৫০ বছর ধরে এই মহাদেশটিতে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে। আর এই উন্নয়নের জন্যই পাখির আবাস ধ্বংস হচ্ছে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্যে জানা যায়, বর্তমান বিশ্বে বিপদের মুখে রয়েছে যেসব পাখি, তার ৩৫টি প্রজাতি রয়েছে বাংলাদেশে। অথচ এই পাখিগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই টিকিয়ে রাখা সম্ভব, তবে তার জন্য চাই সচেতনতা। সর্বাত্মক প্রচেষ্টা না চালালে সেসব পাখির টিকে থাকা দূরূহ, তাদের বলা হয় মহাবিপন্ন পাখি। বিশ্বের পাঁচটি মহাবিপন্ন পাখি অনেক আগেই আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর অনেক প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। আমাদের দেশে পাখি নিধন আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই আইন কেউ মানে না। তাই এখানে বিপন্ন, মহাবিপন্ন বা সংকটাপন্ন সব ধরনের পাখিই নিরাপদ নয়।
পাখিই নয়, সব ধরনের পাখিই রক্ষা করতে হবে। গ্রাম বাংলায় বন বনানী গাছপালা, হাওর, বিলে পাখি বসবাস করে, বংশ বিস্তার করে। পাখির আবাসস্থলগুলো রক্ষা করতে হবে। বনজঙ্গল ধ্বংস করে বৃক্ষসম্পদ কেটে রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে কঠোর আইন করা দরকার। কারণ পক্ষীকূলের অভয়াশ্রম সুরক্ষা করা জনগণের পাশাপাশি সরকারেরও দায়িত্ব। সর্বোপরি পাখি নিধনের বিরুদ্ধে যে আইন রয়েছে তার যথাযথ প্রয়োগ জরুরি।