হবিগঞ্জে চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্রী জেরিন হত্যা, ২ জনের মৃত্যুদন্ড

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : হবিগঞ্জে চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্রী মদিনাতুল কুবরা জেরিন হত্যাকা-ের ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক সুদীপ্ত রায় এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে জাকির হোসেন ও নুর হোসেন নামে দুই আসামির মৃত্যুদ- দেয়া হয়।

রায় প্রদানকালে দ-প্রাপ্ত আসামি জাকির হোসেন (২৫) আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধল গ্রামের দিদার হোসেনের পুত্র। অন্য আসামি নুর আলম (২২) একই উপজেলার পাটলি গ্রামের আব্দুল হাইয়ের পুত্র। রায় ঘোষণা পর জাকির হোসেনকে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি সকাল ৮টায় নূর আলম নামে একজনের অটোরিক্সায় উঠে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধল গ্রামের আব্দুল হাইয়ের কন্যা মদিনাতুল কুবরা জেরিন। এর আগেই অটোরিক্সাতে ছিলেন জাকির ও তার সহযোগী। অটোরিক্সাটি স্কুল সীমানা পার হয়ে গেলে সে চিৎকার দিয়ে চালককে থামাতে বলে। কিন্তু অপহরণকারীরা অটোরিক্সা না থামিয়ে তাকে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ জানুয়ারি সকালে মারা যায় জেরিন।

ওইদিন রাতেই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন জেরিনের বাবা। এ ঘটনায় নুর হোসেন ও জাকিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে ১৬৪ ধারায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয়। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সিএনজি অটোরিক্সা থেকে ফেলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় জেরিনকে।
পরে এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ সদর থানার তৎকালীন ওসি মাসুক আলী ২০২১ সালের ১৮ মার্চ জাকির ও নুর হোসেন ও রুবেল মিয়া নামে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রুবেল অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অন্য আদালতে তার বিচার কার্যক্রম চলছে।
মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক অপহরণ এর অপরাধে উভয় আসামিকে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং হত্যার অপরাধে উভয় আসামিকে মৃত্যুদ- ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ প্রদান করেন।