বিশ্ব গর্ভনিরোধ দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৮:১৫:৫৮ অপরাহ্ন
যারা হৃদয় দিয়ে কাজ করতে পারে না; তাদের অর্জন অন্তঃসারশূন্য, উৎসাহহীন সাফল্য চারদিকে তিক্ততার উদ্ভব ঘটায়। – এ পি জে আব্দুল কালাম।
বিশ্ব গর্ভনিরোধ দিবস আজ। প্রতি বছর ২৬শে সেপ্টেম্বর এই দিবসটি পালিত হয়। মূলত জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার লক্ষে ২০০৭ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য-সন্তান হবে পরিকল্পিত পরিবারের অংশ, অনাকাংখিত বোঝা নয়। এই দিবসটি যখন পালিত হচ্ছে তখন আমাদের দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম প্রায় স্থবির।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের হার এখনো আশাব্যঞ্জক নয়। এক্ষেত্রে পুরুষদের অংশগ্রহণ খুবই কম। আর স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে পুরুষদের হার একেবারেই নগণ্য। অস্থায়ী পদ্ধতিতে আগ্রহ থাকলেও স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণও আশানুরূপ নয়। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচলিত বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে বেশিরভাগই রয়েছে নারীদের জন্য। সরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ি, মহামারি সংক্রমণ শুরুর আগে নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণের অস্থায়ি পদ্ধতি গ্রহণের হার ছিলো ২৫ থেকে ২৭ শতাংশ, আর স্থায়ি পদ্ধতি গ্রহণের হার ছিলো সাত শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে অস্থায়ি পদ্ধতি গ্রহণের হার ছিলো সাত শতাংশ এবং স্থায়ি পদ্ধতি গ্রহণের হার মাত্র এক শতাংশ।পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হিসেবে, দেশে সক্ষম দম্পতির মধ্যে ৬৩ শতাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন।
প্রজননের হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় এগিয়ে থাকলেও কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এই প্রেক্ষাপট বদলে গেছে। অপরদিকে পরিবার পরিকল্পনার তথ্য ও সেবার অপূর্ণ চাহিদার হার ১২ শতাংশ। করোনাকালে এই হারটিও বেড়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এই হার বর্তমানে ১৭ থেকে ২০ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ মহামারির সময় চাহিদা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই পদ্ধতি গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাছাড়া, নানা কারণে জন্মনিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণে নারী পুরুষের অনীহা রয়েছে। এক্ষেত্রে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।
দেশে পরিবার পরিকল্পনা, জন্মনিয়ন্ত্রণ বিষয়ে নানা দিবস-সপ্তাহ পালিত হয়ে থাকে। কিন্তু এতে জনগণের মধ্যে আশানুরূপ সচেতনতা তৈরি হচ্ছে না। বিশেষ করে, ইদানিং মাঠকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিকল্পিত পরিবারের বার্তা পৌঁছাচ্ছে না আগের মতো। যে কারণে চাহিদা থাকার পরও সক্ষম দম্পতিদের একটি বিশাল অংশ সেবা পাচ্ছেন না। স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণের হার পুরুষের তুলনায় নারীদের বেশি হলেও তা এখনো আশানুরূপ নয়। সর্বোপরি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের হার বাড়ছে না।