ওসমানী বিমানবন্দরকে প্রবাসীবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার তাগিদ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৫:১৭:৪৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে প্রবাসীবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন বক্তারা। গতকাল মঙ্গলবার গণশুনানীতে বক্তারা বলেন, যাত্রী হয়রানি বন্ধে ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে আরো সচেতন হতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতের নামে কোন যাত্রী যাতে হয়রানির শিকার না হন সেদিকে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, প্রবাসীদের স্বার্থ সমুন্নত থাকলে দেশের অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ হবে।
ওসমানী বিমানবন্দরের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এ গণশুনানীতে সভাপতিত্ব ও মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ। ওসমানী বিমানবন্দরের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের স্টেশন ব্যবস্থাপক আব্দুস সাত্তার, ওসমানী বিমানবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. সহিদুল ইসলামসহ বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকতা, আর্মড পুলিশ, ইমিগ্রেশন পুলিশসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, গণমাধ্যম ব্যক্তিবর্গ ও বিমানযাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ বিগত গণশুনানীর বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। তিনি দাবি করেন, বিমানবন্দরে এখনকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। যাত্রী হয়রানি বন্ধে ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তৎপর রয়েছেন। বিমান কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন এজেন্সি সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বিমানবন্দরের কার্যক্রম তদারকি করছেন। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, যাত্রী সেবায় ওসমানী বিমানবন্দরে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। যাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে সিলেট-লন্ডন ফ্লাইটে মালামালের অতিরিক্ত ওজন চার্জ ৩০ ডলারের পরিবর্তে অর্ধেক ১৫ ডলারে নামানো হয়েছে। এতে করে বিমানের রেভিনিউ (রাজস্ব) দশগুণ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
গণশুনানীতে দৈনিক সিলেটের ডাক এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ বলেন, টিকেটে যাত্রীর নামের স্পেলিং ভুল হওয়ার কারণেও অনেক ক্ষেত্রে যাত্রী হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এছাড়া, তিনি বিমানবন্দরের পার্কিংস্থলে যাত্রীদের নিয়ে টানাহেঁচড়ার বিষয়ে আলোকপাত করেন। যাত্রীদের স্বার্থে এসব অনিয়ম দূর করে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন। সেই সাথে বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে রাখার দাবি জানান।
গণশুনানীতে অংশ নিয়ে নিউ এইজ সিলেট প্রতিনিধি মো. মনিরুজ্জামান মনি বলেন, বিমানবন্দরে বিভিন্ন এজেন্সির তদারকি সত্ত্বেও নতুন যাত্রীরা বেশি হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন। এতে করে ওসমানী বিমানবন্দরের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। এ ব্যাপারে মনিটরিং জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
গণশুনানীতে উপস্থিত সাংবাদিক ও যাত্রীদের প্রশ্নের উত্তরে বিমানবন্দর কর্র্তৃপক্ষ জানান, একজনের নামে কেনা বিমান টিকেট দিয়ে অন্য কেউ ভ্রমণ করতে পারবেন না। প্রয়োজনে ওই টিকেট বাতিল করে পুনরায় টিকেট সংগ্রহ করতে হবে।
সামগ্রিক বিষয়ে বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ আরো জানান, বর্তমান সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বিমানের অগ্রযাত্রা দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। বিশেষ করে বিমানের সিলেট-ম্যানচেষ্টার ও সিলেট-হিথ্রো সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জ্বল করেছে। বিমান বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য বিমান সংস্থার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার কারণে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সমৃদ্ধ বিমানবন্দরে পরিণত হয়েছে। ওসমানী বিমানবন্দরকে আধুনিক হাইড লাইন রিফুয়েলিং সিস্টেম চালু থাকায় বিমানের অগ্রযাত্রাকে আরো ত্বরান্বিত করেছে বলে জানান তিনি। এ বছর ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রায় ৮ লাখ যাত্রীকে সেবা দিতে পারবে বলে জানান হাফিজ আহমদ। তিনি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সার্বিক অগ্রযাত্রায় সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান, বিমানবন্দরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।