পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৩:১৪:০৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের বিভিন্ন দাবি আদায়ে কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। আগামী ২ অক্টোবর সারাদেশের সরকারি কলেজ, সরকারি মাদরাসাসহ সব দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা এ কর্মসূচি পালন করবেন। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতারা। এ সময় তারা জানান, দাবি আদায় না হলে ১০ অক্টোবর থেকে টানা তিনদিন কর্মবিরতি পালন করা হবে।
লিখিত বক্তব্যে সমিতির সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তৌফিক এজদানী চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষা ক্যাডার সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও শিক্ষা ক্যাডারকে বিশেষায়িত পেশা হিসেবে গড়ে তোলা হয়নি। বঞ্চনা আর বৈষম্যের মাধ্যমে এ পেশার কার্যক্রমকে সংকুচিত করা হয়েছে। এ পেশাকে গ্রাস করছে অদক্ষ, অপেশাদাররা, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনের পরিপন্থি।’
উপজেলা, জেলা, অঞ্চলে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তর, অধিদপ্তর ও প্রকল্পসমূহ পরিচালনায় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ‘বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) কম্পোজিশন এন্ড ক্যাডার রুলস ১৯৮০ অনুযায়ী দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা স্তরের শিক্ষা প্রদান, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা, গবেষণা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যন্ত শিক্ষা ক্যাডারের কার্যপরিধি ব্যাপৃত। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা স্তর সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের নবম গ্রেডের উপরে সব পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত। এসব পদে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা বাদে অন্য কারও পদায়নের সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভুতদের অপসারণের দাবি জনিয়েছি। কিন্তু সেটি করা হয়নি। উপরন্তু আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানানোর পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভুত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি স্পষ্টতই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের উপর আঘাত।’
২০১৫ সালে নতুন পে স্কেলে শিক্ষা ক্যাডার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ তে অধ্যাপকদের ৩য় গ্রেডে (সিলেকশন গ্রেড) উন্নীত হওয়ার সুযোগ রহিত হয়ে ৪র্থ গ্রেডে অবনমন ঘটে। বিষয়টি সে সময় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি তৎকালীন অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি ও মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি গঠন করে দ্রুত নতুন পে-স্কেলের মাধ্যমে সমস্যাসমূহ সমাধানের নির্দেশ দেন। এ কমিটিসমূহের সুপারিশে শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক পদমর্যাদাসম্পন্ন পদসমূহের মধ্যে ৪২৯টি পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ অজ্ঞাত কারণে মাত্র ৯৮টি পদ ৩য় গ্রেডে উন্নীত করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্মতি দেয়। এক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কার্যকর করা হয়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে মুরারিচাঁদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম, সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নাজনীন ইসলাম চৌধুরী, সিলেট সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক বিলকিস ইয়াছমীন, শাহপরাণ সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, সিলেটের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শামীম খান, জকিগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রভাষক মো. আতিকুর রহমান, সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।