নবীজির জন্মকালীন অলৌকিক ঘটনাবলী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৭:৫২ অপরাহ্ন
মাওলানা আব্দুল হান্নান তুরুকখলী
রাসূলে পাক (সা.) হচ্ছেন মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। তাঁর থেকে যত মু’জিযা বা অলৌকিক ঘটনাবলী প্রকাশ পেয়েছে অন্য কোনো নবী-রাসূল থেকে এত মুজিযা বা অলৌকিক ঘটনাবলী প্রকাশ পায়নি। শুধু তাঁর জন্মকালীন সময়ে নয়। বরং তাঁর জন্মের হাজার হাজার বছর পূর্বেও তাঁকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মু’জিযা প্রকাশ পেয়েছে। কিয়ামত পর্যন্ত তাঁকে কেন্দ্র করে মুজিযা প্রকাশ পেতে থাকবে। আলোচ্য প্রবন্ধে রাসূলে পাক (সা.)-এর জন্মকালীন কয়েকটি মু’জিযা বা অলৌকিক ঘটনা উপস্থাপন করা হলো:
হাকিম, বায়হাকী, তিবরানী এবং আবু নাঈম আবু আওয়ান হতে, তিনি মিসওয়ার ইবনে মাখরামাহ হতে, তিনি হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে এবং তিনি হযরত আব্বাস (রা.) হতে বর্ণনা করেছেন যে, আব্দুল মুত্তালিব বলেছেন, একবার আমরা শীতকালীন সফরে ইয়ামন পৌঁছলাম। সেখানে আমি এক ইহুদী প-িতের নিকট গমন করলে জনৈক আহলে কিতাব আমাকে জিজ্ঞেস করল, তুমি কে? আমি বললাম, জনৈক কুরাইশ। সে জিজ্ঞেস করল, তুমি কুরাইশের কোন কবিলার লোক? আমি বললাম বনু হাশিম কবিলার লোক। তখন লোকটি বলল যদি তুমি অনুমতি দাও, তাহলে আমি তোমার দেহটি পরীক্ষা করব। আমি বললাম, পরীক্ষা করতে পার, তবে গুপ্তস্থান ব্যতীত। তখন সে আমার নাসিকার ছিদ্র দেখে বলল, আমি সাক্ষ্যদান করতেছি, তোমার এক হাতে শাসন ক্ষমতা এবং অপর হাতে নবুয়ত বিদ্যমান। আমার ধারণা ছিল যে, এই নবুয়ত ও শাসন ক্ষমতা বনু যুহরার মধ্য হতে হবে। এখন ইহা কিভাবে হল? আব্দুল মুত্তালিব বললেন, আমি তা কিরূপে বলব। আহলে কিতাব বলল, তোমার স্ত্রী আছে কি? আমি বললাম, এখন নেই। সে বলল, তাহলে দেশে প্রত্যাবর্তন করে তুমি বনু যুহরা কবিলায় বিবাহ কর। অতঃপর আব্দুল মুত্তালিব মক্কায় ফিরে এসে হালা বিনতে ওয়াহহাব ইবনে আবদে মানাফকে বিবাহ করলেন এবং তার গর্ভে হামযাহ ও সুফিয়াহ জন্মগ্রহণ করলেন। আব্দুল মুত্তালিব তাঁর পুত্র আব্দুল্লাহকে আমিনা বিনতে ওয়াহহাবের সাথে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ করে দিলেন। এতে কুরাইশরা বলতে লাগল যে, আব্দুল্লাহ তাঁর পিতার বাজী নিয়ে গেল। অত্র হাদীস আবু নাঈম হুমাইদ ইবনে আব্দুর রহমান হতে বর্ণনা করেছেন এবং ইবনে সা’দ তাঁর তাবাকাতে জাফর ইবনে আব্দুর রহমান হতে বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছে আব্দুল মুত্তালিব বললেন, আহলে কিতাব আমার নাসিকার চুল দেখে বলল, আমি নবুয়ত এবং রাজত্ব অবলোকন করতেছি। তন্মধ্যে একটি বনু যুহরায় হবে। এই বর্ণনার শেষাংশে রয়েছে মহান আল্লাহপাক আব্দুল মুত্তালিবের সন্তানদের মধ্যে নবুয়ত এবং শাসন ক্ষমতা দুটিই রেখে দিয়েছেন।
আবু নাঈম সা’দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা.) হতে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.)-এর জনক একদা তাঁর গৃহ নির্মাণ করতেছিলেন। যাতে তাঁর সর্বাঙ্গ ধূলায় মেখে গিয়েছিল এবং তদাবস্থায়ই তিনি ইয়ালা আদভিয়া না¤œী এক মহিলার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। ইয়ালা তাঁর চোখ দেখে স্বীয় কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করার জন্য তাঁকে নিজের দিকে আহ্বান করল এবং বলল, তুমি আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করলে আমি তোমাকে একশত উট দান করব। জবাবে আব্দুল্লাহ বললেন, আমি গোসল করে আমার দেহের ময়লা ও ধূলাবালি হতে পরিষ্কার হয়ে আসি। একথা বলে তিনি নিজ স্ত্রী আমিনার নিকট এসে তাঁর সঙ্গে মিলিত হলেন এবং এই মিলনে বিবি আমিনা গর্ভধারণ করলেন। ইহার পর আব্দুল্লাহ উক্ত আদভিয়ার নিকট গমন করে বললেন, তুমি যে ব্যাপারে আমাকে আহ্বান করেছিলে সেই ব্যাপারে তোমার এখন কী মত? আদভিয়া বলল, এখন আমার সে মত নেই। আব্দুল্লাহ বললেন, কেন, হঠাৎ কী হল? মহিলা বলল, ইতোপূর্বে তুমি যখন আমার নিকট দিয়ে গমন করতেছিলে, তখন তোমার ললাটে যে নূর শোভা পাচ্ছিল মনে হয় আমিনা তা তোমার নিকট হতে আত্মসাত করেছে। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, তুমি যে নূর নিয়ে এসেছিলে এখন তা নিয়ে আস নাই। তুমি আমিনার নিকট গিয়ে থাকলে অবশ্যই তার গর্ভ হতে এক বাদশাহ ভূমিষ্ঠ হবে। ইবনে সা’দ ওয়াহহাব ইবনে জারির ইবনে হাশিম হতে, তিনি তার পিতা হতে এবং আবু ইয়াজিদ মাদানী হতে বর্ণনা করেছেন, আমি জানতে পেরেছি, আব্দুল্লাহ এক খাসআমী মহিলার নিকট দিয়ে গমনকালে তাঁর ললাট হতে আসমান পর্যন্ত আলো বিচ্ছুরণকারী একটি নূর দেখতে পেল। ইহা দেখে সে তাকে বলল, তুমি কি আমার নিকট আসবে? আব্দুল্লাহ বলল, হ্যাঁ, আমি পাথরের টুকরাগুলো ফেলে দিয়ে আসি। তিনি ইহা ফেলে দিয়ে তার স্ত্রী আমিনার নিকট চলে গেলেন।
অত:পর উক্ত খাসআমী মহিলার কথা স্মরণ হলে তার নিকট গেলেন। সে তখন আব্দুল্লাহকে দেখে বলল, তুমি কি অন্য স্ত্রীলোকের কাছে গমন করেছিলে? আব্দুল্লাহ বললেন, হ্যাঁ। আমি আমার স্ত্রী আমিনার নিকট গিয়েছিলাম। তা শুনে ওই মহিলা বলল, তাহলে তোমার দ্বারা আমার কোনো দরকার নেই। তুমি তখন আমার নিকট দিয়ে যাবার কালে তোমার ললাট হতে আসমান পর্যন্ত একটি নূর বিস্তৃত ছিল। এখন তা দেখা যাচ্ছে না। তুমি গিয়ে আমিনাকে জানিয়ে দাও যে, সে দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে গর্ভে ধারণ করেছে। ইবনে আসকিরও এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইবনে সা’দ মুহাম্মদ ইবনে কা’ব হতে বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.)-এর পিতা সিরিয়া হতে প্রত্যাবর্তনকালে পথিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেন। রাসূল (সা.) তখন মাতৃজটরে ছিলেন এবং তখন তাঁর পিতা আব্দুল্লাহর বয়স ছিল পঁচিশ বছর। ওয়াকেদী বলেন, মৃত্যু এবং বয়স সম্পর্কে সকল উক্তি ও বর্ণনার মধ্যে এটাই সর্বাধিক নির্ভুল। ওয়াকেদী আরও বলেন, উলামায়ে কেরামগণ একথা উত্তমভাবে অবগত যে, রাসূলে পাক (সা.) ছাড়া আমিনা ও আব্দুল্লাহর কোনো সন্তান জন্মলাভ করেনি।
হযরত হাসসান ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি তখন সাত আট বছরের বুঝমান বালক ছিলাম। ওই সময় একদা এক ইহুদী একটি টিলার উপর উঠে মদীনার ইহুদী সম্প্রদায়কে আওয়াজ দিয়ে ডাকল। তাতে তারা ছুটে এসে তার নিকট জিজ্ঞেস করল, কী ব্যাপার? ইহুদী বলল, আজ রাতে আহমদ ভূমিষ্ঠ হয়েছেন। তাঁর লক্ষণযুক্ত তারকা আসমানে উদিত হয়েছে (বায়হাকী, আবু নাঈম)। উসমান ইবনে আবুল আস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার মাতা আমাকে বলেছেন, আমিনার গৃহে রাসূল (সা.) এর ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় আমি তথায় উপস্থিত ছিলাম। আমিনার গৃহের চারিদিক নূরের আলোকে উদ্ভাসিত হয়েছিল। আসমানের নক্ষত্র রাজি এভাবে নীচের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল যে, মনে হচ্ছিল যেন তারকাগুলি আমার উপরই পতিত হবে। তাছাড়া রাসূল (সা.) এর জন্মকালে আমিনার দেহ হতে একটি নূর বের হয়ে সারা গৃহ আলোকময় হয়ে গিয়েছিল (বায়হাকী, তিবরানী, আবু নাঈম, ইবনে আসাকির)। ইরবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, আমি আল্লাহর বান্দা। আমি সেই সময় হতেই শেষ নবী, যখন হযরত আদম (আ.) এর সত্তা মৃত্তিকায় নিহিত ছিল। আমার জন্য হযরত ইব্রাহীম (আ.) দোয়া করেছেন। হযরত ঈসা র্(আ.) আমার আগমনের সুসংবাদ দিয়েছেন এবং আমার মাতা স্বপ্ন দেখেছেন। নবীদের মাতাগণ এরূপ স্বপ্ন দেখে থাকেন। রাসূলে পাক (সা.) এর মাতা তাঁর পুত্রের জন্মের সময় এমন একটি নূর দেখতে পান যার উজ্জ্বল আলোকে সুদূর সিরিয়ার রাজমহল পর্যন্ত তার চোখে ভেসে উঠে (আহমদ, বাযযার, তিবরানী, হাকিম, বায়হাকী, আবু নাঈম)। রাসূলে পাক (সা.) এর মাতা তাঁর গর্ভাবস্থায় যে নূর দেখেছিলেন, তা ছিল স্বপ্ন। পক্ষান্তরে রাসূল (সা.) এর জন্মের সময় যে নূর প্রত্যক্ষ করেছিলেন তা ছিল তাঁর জাগ্রত অবস্থায় বাস্তব ঘটনা।
ইবনে ইসহাক বর্ণনা করেন, হযরত আমিনা বলেন, গর্ভসঞ্চার হওয়ার পর কেহ তাঁকে বলল, হে আমিনা। তোমার কোলে মানবকূলের সরদার স্থান গ্রহণ করেছেন। তাঁর নিদর্শন হল, যখন তিনি জন্মগ্রহণ করবেন তখন একটি নূরের উদয় ঘটবে। যার আলোকে সিরিয়ার বুছরা নগরীর রাসপ্রাসাদ পর্যন্ত চোখের সামনে ভেসে উঠবে। তোমার এই সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে নাম রাখবে ‘মুহাম্মদ’। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত আমিনা বলেছেন, রাসূল (সা.) কে গর্ভে ধারণ করার পর হতে তাঁর ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত আমার কোনোরূপ ক্লেশ পাইতে হয়নি। তাঁর ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সাথে একটি নূরের উদয় হল যাতে মাশরের ও মাগরেবের মধ্যবর্তী সমস্ত এলাকা আলোকোজ্জ্বল হয়ে গেল। (ইবনে সা’দ, ইবনে আসাকির’।) আবু নাঈম হুলিয়া গ্রন্থে মুজাহিদ হতে বর্ণনা করেন, ইবলিস তার জীবনে চারবার হায়-হুতাশ এবং রোনাজারি করেছে- (১) যখন সে আল্লাহর তরফ হতে অভিশপ্ত এবং বিতাড়িত হয়। (২) যখন তাকে আসমান হতে দুনিয়ায় নিক্ষেপ করা হয়। (৩) যখন রাসূলে পাক (সা.) দুনিয়ায় আগমন করেন। (৪) যখন কুরআনে পাকের সূরা ফাতেহা নাজিল হয় (খাসাইসুল কুবরা)।
হযরত আতা ইবনে ইয়াসার হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত উম্মে সালামাহ (রা.), হযরত আমিনার এই কথা বর্ণনা করেছেন, ‘যে রাতে রাসূলে পাক (সা.) ভূমিষ্ঠ হলেন, আমি একটি নূর উদিত হতে দেখলাম। যার আলোকে সিরিয়ার রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত এইভাবে আলোকিত হয়ে উঠল যে, তা আমিও দেখতে পেলাম।’ আবু নাঈম আমর ইবনে কুতাইবাহ হতে, তিনি তার পিতাকে বলতে শুনেছেন, হযরত আমিনার সন্তান প্রসবকাল উপস্থিত হলে আল্লাহপাক ফেরেস্তাদেরকে আদেশ করলেন, তোমরা সমস্ত আসমান এবং বেহেশতসমূহের দরজাগুলো উন্মুক্ত করে দাও, অত:পর তোমরা আমার সামনে উপস্থিত হও। তখন ফেরেস্তাগণ তাদের একে অপরকে সুখবর বলতে বলতে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হল। দুনিয়ার পাহাড়পর্বতগুলো তাদের শির উঁচু করল। সাগরসমূহের জলরাশি স্ফীত হয়ে উঠল। পানিতে ও পর্বতে যারা বসবাস করে তারাও একে অপরকে সুসংবাদ জানাতে লাগল। শয়তানকে সত্তরটি শিকল দ্বারা আবদ্ধ করা হল এবং তাকে কাস্পিয়ান সাগর বক্ষে উপুড় করে ঝুলিয়ে রাখা হল। দুনিয়ার পাপিষ্ঠ ও অবাধ্য প্রাণীসমূহকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হল। সূর্যকে সেইদিন এক অপূর্ব ও অসাধারণ আলো প্রদান করা হল এবং তার দরজার সামনে শূন্য জগতে সত্তর হাজার হুরকে দাড় করিয়ে দেওয়া হল, যারা রাসূল (সা.)-এর ভূমিষ্ঠ হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগল। রাসূলে পাক (সা.) এর সম্মান ও মর্যাদার কারণে আল্লাহপাক তাঁর জন্মের বৎসর দুনিয়ার সকল নারীর জন্য পুত্র সন্তান নির্ধারণ করে দিলেন এবং দুনিয়ার কোনো একটি বৃক্ষকেও সেই বৎসর ফলবিহীন করে রাখলেন না। আর ইহাও নির্ধারণ করে রাখলেন যে, ওই বৎসর দুনিয়ার কোনো স্থানেই কোনোরূপ অশান্তি এবং ফিতনা-ফাসাদের অস্তিত্ব থাকবে না। সমগ্র আরববাসী রাসূল (সা.)-এর জন্মের বছরের নামকরণ করেছিল ‘সানাতুল ফাতহি ওয়াল ইবতেহাজ’ বা বিজয় ও আনন্দের বছর।
ইহার পর যখন এই সর্বপ্রতীক্ষিত জন্ম ঘটনা সংঘটিত হল, তখন সমগ্র জগত নূরের জ্যোতিতে জ্যোতির্ময় হয়ে গেল। ফেরেস্তাগণ পরস্পরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করল। প্রতিটি আসমানে মহামূল্যবান চুনি-পান্নার স্তম্ভ নির্মাণ করা হল। যার ফলে আসমান সমূহ আলোময় রূপ ধারণ করল। রাসূল (সা.) যখন সশরীরেও জাগ্রত অবস্থায় মেরাজ গমন করেন তখন আসমানে ওই স্তম্ভ সমূহ দেখলে তাঁকে বলা হয়েছিল- এইগুলি আপনার জন্মের সুসংবাদ শুনে নির্মাণ করা হয়েছিল। যে রাতে রাসূল (সা.) জন্মগ্রহণ করলেন সেই রাতে আল্লাহপাক হাউজে কাউসারের কূলে সত্তর হাজার মেশক আম্বর বৃক্ষরোপণ করত: সেগুলিকে সেরা ঘ্রাণযুক্ত বৃক্ষে পরিণত করেন। ওই রাতে সকল আসমানের অধিবাসীরা আল্লাহর দরবারে তাদের নিরাপত্তার জন্য দোয়া করলেন। দুনিয়ার প্রতীমা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। লাত এবং উজ্জার অবস্থানস্থল হতে স্বর্ণভা-ার বের হয়ে পড়ল। সর্বত্র এরূপ আওয়াজ উঠল যে, কুরাইশদের মধ্য হতে ‘আল-আমীন’ এর অভ্যুদয় ঘটেছে। সিদ্দীক তাশরীত এনেছেন। খানায়ে কাবা হতে কয়েকদিন পর্যন্ত এরূপ আওয়াজ বাতাসে ভেসে বেড়াল যে, পূর্ণিমার চাঁদ বিকশিত হয়েছে। এখন হতে আমার প্রিয় জিয়ারতকারীদের আমার নিকট আনাগুনা শুরু হবে। এখন আমি বর্বরতার ঘৃণ্য আবর্জনা হতে মুক্ত হতে পারব। হে উজ্জা। তোমার ধ্বংস সমাগত। খানায়ে কা’বা যে অপবিত্রতা জনিত কারণে কখনও কখনও কেঁপে উঠত, রাসূল (সা.)-এর জন্মের ফলে সেই কম্পন থেমে গেল। ইহা ছিল রাসূল (সা.)-এর ধরায় আগমনের প্রথম নিদর্শন যা কুরাইশরাও লক্ষ্য করেছিল (খাসাইসুল কুবরা)।
লেখক : কলামিস্ট।