শিক্ষক-চিকিৎসকদের সাথে মতবিনিময়কালে দানবীর ড. রাগীব আলী
রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে চাই
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৫:৪৩:২৩ অপরাহ্ন
দানবীর ড. রাগীব আলী আমাদের জন্য আশীর্বাদ ॥ অধ্যক্ষ
স্টাফ রিপোর্টার : দেশবরেণ্য সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান দানবীর ড. রাগীব আলী বলেছেন, ‘আমার সহধর্মিণী মরহুমা বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর আশা ছিলো জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা। কতদিন বাঁচবো জানি না, মৃত্যুর আগে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করে যেতে চাই। এই প্রতিষ্ঠান সিলেটের সর্বোচ্চ মেডিকেল শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে গণ্য হবে।’
জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষক-চিকিৎসকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করতে অনেক পূর্ব থেকে কাজ চলছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন না থাকায় এতোদিন কাজ বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি একটু অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় কলেজের লেকচার গ্যালারি-১ এ অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আবেদ হোসেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, দানবীর ড. রাগীব আলী প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস, গুণগতমান এবং উন্নয়নে সবসময় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রায় শত বছর বয়সেও তিনি প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের জন্য, সিলেটের জন্য আশীর্বাদ। তিনি যতদিন থাকবেন আমরা সুরক্ষা ও সুফল পেয়ে যাব।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. একেএম দাউদ, হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তারেক আজাদ, রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আব্দুল হাই। মানবকল্যাণে নিবেদিত রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা দানবীর ড. রাগীব আলী প্রতি ৩ মাসে এমন একটি মতবিনিময় সভা আয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এর মাধ্যমে সকলে মধ্যে পরিচয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা যায়। তিনি সেবার মান বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, আমাদের আলোচনার পয়েন্ট একটি-সেটা হলো উন্নত সার্ভিস নিশ্চিত করা। সেবাগ্রহিতারা যদি ভালো সার্ভিস না পান, তাহলে সব কিছুই অসার হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের ভালো চিকিৎসক রয়েছে। তারা ভালো সার্ভিস দিচ্ছেন বলেই হাসপাতালের সুনাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । আমাদের আরো ভালো করতে হবে।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সমাজসেবক ও কর্মবীর ড. রাগীব আলী বলেন, সকলের সার্বিক সহযোগিতায় হাসপাতাল আজ নেতৃস্থানীয় অবস্থানে এসেছে। অধ্যক্ষের একার পক্ষে এটাকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা এগিয়ে আছি, আশা করি, এগিয়ে থাকবো। গরিব, দুঃখী, মেহনতি মানুষের বন্ধু দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল একটি কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। অনেকেই হাসপাতালটিকে নষ্ট করতে চেয়েছিল। ভয় দেখিয়েছে, জেলে দিয়েছে। সব বাধা অতিক্রম করে হাসপাতালটি স্বমহিমায় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এটা রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান, আমি এর মালিক নই। আমরা সহধর্মিণী মরহুমা রাবেয়া খাতুন চৌধুরী বলেছেলিন ফাউন্ডেশনের অধীনে দেয়ার জন্য। ‘সবাই আমরা সন্তানের মতো’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ হাসপাতালের অনেক খারাপ সময় গেছে। অধ্যক্ষের আন্তরিক চেষ্টা ও কর্মতৎপরতায় অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে। তিনি ভালো ও দক্ষ অধ্যক্ষ, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পারেন। তিনি বলেন, রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের সুনাম পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এটা আমাদের সকলের অবদান। এই সুনাম ধরে রাখতে সকলকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি। তিনি শিক্ষক, চিকিৎসক ও হাসপাতালের বিভিন্ন চাহিদা ও সমস্যার দ্রুত সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে সকলে মুহুর্মূহু করতালিতে তাকে অভিনন্দন জানান।
রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মান নিশ্চিত করে তাদের তৈরি করে উল্লেখ করে অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আবেদ হোসেন প্রতিষ্ঠানের কোন জায়গায় উন্নতি করা যায়, সেসব বিষয়ে পরামর্শ দেয়া, রোগীদের আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান এবং সকলকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকার আহবান জানান। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পূর্বে প্রশ্নোউত্তর পর্বে চিকিৎসকরা হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয়ে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় নারী চিকিৎসকদের থেকে কোন বক্তব্য না পাওয়ায় প্রধান অতিথি দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, মনে হচ্ছে নারী চিকিৎসকরা সবাই সন্তুষ্ট আছেন। তবে আগামীতে তাদের থেকে বক্তব্য প্রত্যাশা করেন তিনি।