ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি নিয়ে উত্তপ্ত বিশ্বনাথ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৫:৫৬:৩৮ অপরাহ্ন
পাল্টাপাল্টি মিছিল, হামলা ও ভাঙচুর ॥ আহত ১২
বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ। গতকাল বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। কমিটি বিলুপ্তের জের ধরে বিকেল থেকে পাল্টাপাল্টি মিছিল-হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় পথচারী দিগি¦দিক ছোটাছুটি শুরু করেন।
জেলা ছাত্রলীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন থেকে সাংগঠনিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকায় ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সিলেট জেলা শাখার এক জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এতে আরও বলা হয়, বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কর্মি সভার তারিখ দ্রুততম সময়ের মধ্যে জানিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে, কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর পরই পৌর শহরে আনন্দ মিছিল বের করে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন মামুন ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুকন গ্রুপের অনুসারীরা। মিছিল শেষে বাসিয়া সেতুর উপর পথসভা করে ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে, আনন্দ মিছিলের পর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির প্রতিবাদ জানিয়ে পৌর শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের করে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নাম উল্লেখ করে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু নিজের ফেসবুক একাউন্টে একটি কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাস দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
এর জের ধরে ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের নেতাকর্মীরা পৌর শহরের পুরাণ বাজারস্থ পাপ্পুর নেতৃত্বাধীন উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে হামলা করে। হামলায় বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু, ছাত্রলীগ নেতা আবির আহমদ, মাহফুজুর রহমান সালমান, মাছুম খান, রাজীব আহমসহ তাদের পক্ষের ১০/১২ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাপ্পু গ্রুপের নেতাকর্মীরা পুনরায় পৌর শহরে মিছিল করলে তাদেরকে ধাওয়া করে ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরপর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এ ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে টান-টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু বলেন, ‘অর্থের বিনিময়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ আমাদের কমিটি বিলুপ্ত করেছেন। এরপর রাহেল সিরাজের নির্দেশে রাজু, শামীম, রিপন, আসলাম, জাকির, সিরাজুল’সহ ৩০/৩৫ অস্ত্রধারী উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে হামলা করে। এতে তিনিসহ ১০/১২ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির দাবি জানান।’
কার্যালয়ে হামলার সাথে আমাদের কেউ জড়িত নয় দাবি করে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন মামুন বলেন, ‘সন্ধ্যার পর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাপ্পু-রুহেলের নেতৃত্বে মিছিল বের হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে প্রতিহত করেছে। এখন সে আমাদের নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।