কন্যা শিশু দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৩:৫০:১৭ অপরাহ্ন
মানুষের মন যেদিনই ক্লান্ত হয় সেদিনই তার মৃত্যু হয়। – রেদোয়ান মাসুদ।
জাতীয় কন্যা শিশু দিবস আজ। মেয়েদের নানা ধরনের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষে এই দিবসটি পালিত হয়। বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার, পরিপুষ্টি, আইনি সহায়তা ও ন্যায্য অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষা এবং নারীর বিরুদ্ধে হিংসা ও বলপূর্বক বাল্য বিবাহ বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে এই দিবসের সূচনা হয়। ২০১১ সালের ১৯শে ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ সভায় আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসের প্রস্তাব গৃহীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালের ১১ই অক্টোবর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে ২০১৩ সাল থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর পালিত হচ্ছে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস।
কন্যা শিশুদের জন্য একটি পৃথক দিবস পালনের মানেই হলো কন্যা শিশুরা সমাজে নানাভাবে নিগৃহিত; তারা বৈষম্য, নির্যাতনের শিকার। অনেক মৌলিক অধিকার থেকেই তারা বঞ্চিত। সারা বিশ্বেই একই অবস্থা। তবে বাংলাদেশে ব্যাপারটি উল্লেখ করার মতো। তাই বাংলাদেশে জাতীয় কন্যা শিশু দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়। কিন্তু কন্যা শিশুর প্রতি বৈষম্যহীন বা অগ্রসর যে দৃষ্টিভঙ্গির দরকার ছিলো, সেটা হচ্ছে না। এখনও বাল্য বিবাহ এখানে নিত্যদিনের ঘটনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ঝরে পড়ার হারও কমেনি। ইউনিসেফ এর তথ্য মতে ১৫ বছরের নিচে বিয়ে হওয়া মেয়ের সংখ্যা শতকরা ২৯ ভাগ। আর ১৮ বছরের নিচে বিয়ের সংখ্যা ৬৫ ভাগ। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা হচ্ছে, ১৮ বছরের নিচে কারও বিয়ে হবে না। এই পরিস্থিতির জন্য দায়ি আমাদের অসচেতনতা। শুধু আইন করে কিংবা সরকারের ওপর দায়িত্ব দিয়ে বসে থাকলে চলবে না; দরকার সকলের সম্মিলিত প্রয়াস।
বিশ্বে জনসংখ্যার ১৫ ভাগ কন্যা শিশু; আর বাংলাদেশে জনসংখ্যার দশ ভাগ কন্যা শিশু। দেশে নারী ও শিশু অধিকার সুরক্ষায় বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও এখনও কন্যা শিশুদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি। আমাদের সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জোর দিতে হবে সুশিক্ষা ও ধর্মীয় জ্ঞানের প্রতি। কন্যা শিশুরা অনেক ক্ষেত্রে নিজের পরিবারেও নিরাপত্তাহীন। আজকের এই কন্যা শিশু দিবসের প্রত্যাশা হচ্ছে, মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারণার বিসর্জন দিয়ে আধুনিক অগ্রসর সমাজ বিনির্মাণের জন্য কন্যা শিশুদের সর্বোচ্চ মর্যাদা দিতে সবাই সচেষ্ট হবে।