১১ মাস থেকে বেতন-ভাতা বন্ধ
কঠোর আন্দোলনে নামছে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৪:৩৪:০৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় এক বছর ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ। অফিসে কেউ আসেন, কেউ না। কার চাকরি আছে আর কার নেই; তাও জানা নেই। অফিসে না আসলেও নেই জবাবদিহিতা। নেই কোনো প্রোটোকল। এমন যাচ্ছেতাই অবস্থা সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়)।
পথচলার শুরুতেই নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে সিলেটের প্রথম এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। দীর্ঘ এক বছর ধরে এমন অবস্থা চললেও তা নিরসনের উদ্যোগ নিচ্ছেন না প্রশাসন। সম্প্রতি দুই দফায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
এমন পরিস্থিতিতে চাকরি স্থায়ীকরণ, বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ ও কর্মস্থলে কর্মচারীদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করছেন তারা। সবশেষ গত বুধবার দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সামনে প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। এর আগে সোমবার ও রোববার গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করে তারা। দুই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৮৮ জন কর্মচারী স্বাক্ষর প্রদান করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘সিমেবি কর্মচারী পরিষদ’ এ কর্মসূচীর ডাক দেয়। আন্দোলনরতরা জানিয়েছেন ৩ দফা দাবিতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আন্দোলনকারীরা জানান, প্রায় এক বছর যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। নানা জটিলতার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দু’দফায় জনবল নিয়োগের জন্য সার্কুলার আবেদন করলেও নানা জটিলতায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি।
দীর্ঘদিন যাবত বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডাঃ এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের সাথে সাক্ষাৎ করলেও তিনি কেবল আশ্বস্ত করে যাচ্ছেন।
এদিকে, দীর্ঘদিন যাবত বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় ক্ষোভে ফুঁসেছে কর্মরতা। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সিমেবি কর্মচারী পরিষদের সদস্য সচিব নাদিম সীমান্ত জানান, ৩ দফা দাবি আদায়ে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে যাব। আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচির ডাকা দেওয়া হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
৩ দফা দাবি হলো নিঃশর্তে সকল পর্যায়ের কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ী করণ করতে হবে। প্রায় ১ বছর যাবত বেতন বন্ধ থাকায় কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই অনতিবিলম্বে সকল বকেয়া বেতন-ভাতাদি পরিশোধসহ বেতন-ভাতা নিয়মিত করণ করতে হবে। কর্মস্থলে কর্মচারীদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবিলম্বে নিজস্ব স্থায়ী জায়গায় স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।