বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১:৫৩:৫১ অপরাহ্ন
জীবনের প্রতিটি সিঁড়িতে পা রেখে ওপরে ওঠা উচিত। ডিঙ্গিয়ে উঠলে পড়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি। -হুইটিয়ার।
বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে আজ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এই সপ্তাহ পালনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ বাংলাদেশও এখন মহাকাশে। বঙ্গবন্ধু সেটেলাইট উৎক্ষেপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই মহাকাশে প্রবেশ করেছে। বর্তমান প্রজন্মকে মহাকাশ সম্বন্ধে অনুসন্ধিৎসু করতে এবং মহাকাশ সংক্রান্ত কল্যাণকর অবদানগুলোকে উৎসাহিত করার লক্ষে প্রতি বছর পালিত হয় বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ। পৃথিবীর বাইরে জীবনের সন্ধান তথা পৃথিবী ছাড়িয়ে অন্য কোথাও বসতি স্থাপনের বিজ্ঞানিদের লালিত স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেয়াই হচ্ছে এই সপ্তাহের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য।
স্মরণ করা যেতে পারে, ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ প্রতিবছর চৌঠা অক্টোবর থেকে ১০ই অক্টোবরকে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ হিসেবে ঘোষণা করে। বিশ্বের ৯৫ টিরও বেশি দেশে মহাকাশ সংক্রান্ত নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সপ্তাহটি উদযাপন করা হয়।
১৯৫৭ সালের চৌঠা অক্টোবর মানুষের তৈরি প্রথম কোন কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে যায়। স্পুটনিক নামের উপগ্রহটি তৈরি করেছিলো তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। স্পুটনিক প্রায় তিনমাসের মতো মহাকাশে ছিল। ১৯৫৮ সালের চৌঠা জানুয়ারি পৃথিবীর বায়ুম-লে প্রবেশের সময় ধ্বংস হয়ে যায়। কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর চার বছরের মাথায় আবারও মহাকাশে অভিযান পরিচালনা করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। এবারে শধু যন্ত্র নয়। প্রাণি হিসেবে প্রথমবারের মতো মহাকাশে যায় লাইকা নামের একটি কুকুর। ১৯৫৭ সালের তেসরা নভেম্বর, সোভিয়েত ইউনিয়ন মিশনটি পরিচালনা করে। তাপ ও চাপ জনিত কারণে লাইকা অবশ্য মিশন থেকে বেঁচে ফিরতে পারে নি। এই স্পুটনিক মহাকাশে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত করে দেয়। এর এক দশক পর ১৯৬৭ সালের ১০ই অক্টোবর চাঁদ এবং অন্যান্য মহাকাশীয বস্তুসহ মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষে বিশ্বের প্রধান রাষ্ট্রসমূহ কিছু মৌলিক নীতি মেনে চলার ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই দুটি দিনকে স্মরণ করেই ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর ৪ থেকে ১০ই অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ। মহাকাশ সম্বন্ধে মানুষের আগ্রহ অনেক পুরনো মহাকাশ অভিযান পরিচালনার মতো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি অনেক আগেই প্রতিষ্ঠিত হয। অবশেষে বিংশ শতাব্দির শেষ ভাগে এসে মানুষের পক্ষে মহাকাশে পাড়ি দেয়া সম্ভব হয়।
মহাকাশ জয়ে নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় মানুষ তার স্বপ্নের পরিধি বিস্তার করে পাড়ি জমিয়েছে চাঁদে; স্থাপণ করেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। পরবর্তিতে মঙ্গল গ্রহেও অবতরণ করে মহাকাশযান। ইতোমধ্যে মার্কিন, সোভিয়েতসহ বেশ কয়েকটি দেশ একাধিকবার সফল অভিযান পরিচালনা করে মঙ্গল গ্রহে। মানুষ এখন মঙ্গল গ্রহে মানব বসতি স্থাপনের স্বপ্ন দেখছে। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ২০৩০ থেকে ২০৩৫ সালে মঙ্গলে পৌঁছাবার চেষ্টা চালাচ্ছে। তার মানে বসবাসের জন্য আরেকটি ‘পৃথিবী’কি পেয়ে যাচ্ছে মানবজাতি?