ভূমিকম্পজনিত ক্ষয়-ক্ষতি রোধে বিল্ডিং কোড অনুসরণের তাগিদ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ৪:১৪:০৬ অপরাহ্ন

সেমিনারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত
স্টাফ রিপোর্টার : ভূমিকম্পজনিত ক্ষয়-ক্ষতি রোধে সকলক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড অনুসরণের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিল্ডিং কোড অনুসৃত হলে ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে সমাজকে রক্ষা করা যাবে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সিলেটের জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘ভূমিকম্প-প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এ মত দেন।
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন- বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন- সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমান, এসএমপি কমিশনার মো: ইলিয়াস শরীফ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম।
মূল প্রবন্ধে ড. জহির বিন আলম বলেন, সিলেট সীমান্তে রয়েছে ডাউকি ফল্ট। এ জোন বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ডেঞ্জার জোন হিসেবে পরিচিত। ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ মাত্রার ২০টি ভূমিকম্প হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বার বার ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। আবার বিশেষজ্ঞদের অন্য একটি অংশ বলছেন, বারবার ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্প না হবার সম্ভবনা বাড়িয়ে দেয়।
ভারতের আসাম, মেঘালয়, ডাউকি এলাকায় অনেকগুলো সক্রিয় ফল্ট রয়েছে। এসব ফল্ট প্রায়ই ঝাঁকুনি দিয়ে সরে যেতে চাচ্ছে। এতে প্রায়ই ছোট ছোট ভূমিকম্প হচ্ছে। যদি বড় ভূমিকম্প হয়; তাহলে সিলেট অঞ্চলে বড় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বড় ভূমিকম্পের প্রভাব দেশের অন্যান্য জেলাতেও পড়বে। কারণ একটি বড় ভূমিকম্প হলে এর স্থায়িত্ব এবং ব্যাপ্তি বেশি হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকা জরুরি।
ভূমিকম্প নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী এনডিসি বলেন, এ ব্যাপারে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলতে হবে। পাশাপাশি যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনী ও ব্লাড ডোনার তৈরি করতে হবে।
ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্ক নয় সকল ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভূমিকম্প কখন হবে কেউ বলতে পারবে না। তাই সবসময় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। বিল্ডিং তৈরির করার সময় অবশ্যই বিল্ডিং কোড মেনে চলতে হবে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস কতটা প্রস্তুত বিভাগীয় কমিশনারের এ প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিস সিলেটের কর্মকর্তা জানান, আমাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবল সংকট রয়েছে।
এ সময় বিভাগীয় কমিশনার জানান, সিলেট বিভাগে বিভিন্ন স্তরে প্রায় ২০ হাজার শূন্য পদ রয়েছে। আমি এগুলো নিয়ে কাজ করছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন, সেনাবাহিনীর ১৭ ডিভিশন জিওসির প্রতিনিধি মেজর আহমেদ মুস্তাহিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো আবু সুফিয়ান, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান, বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসলিম, সিনিয়র সাংবাদিক আল আজাদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, প্রবীণ সাংবাদিক-কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী ও ক্যাব সিলেটের সভাপতি জামিল চৌধুরীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।