ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০২৩
আফগানদের গুঁড়িয়ে বিশ্বকাপ শুরু টাইগারদের দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড জয়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ৫:৫৩:৫৫ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে শুভ সূচনা করলো বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানদের গুঁড়িয়ে দিলো টাইগাররা। গতকাল শনিবার ভারতের ধর্মশালায় টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭.২ ওভারে ১৫৬ রানেই অলআউট হয় আফগানিস্তান। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৯২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
দিল্লীর অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দিনের অপর খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কা। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠা দক্ষিণ আফ্রিকার তিন ব্যাটার কুইন্টন ডি কক, রসি ফন ডার ডুসেন ও এইডেন মারক্রাম এর সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ৪২৮ রান সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে। বিশ্বকাপে এর আগে তিন ব্যাটারও একসঙ্গে কখনো সেঞ্চুরি পাননি। কুইন্টন ডি কক (১০০), রসি ফন ডার ডুসেনের (১০৮) পর তিন অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছেন এইডেন মারক্রাম (১০৬)। প্রোটিয়া মিডল অর্ডার ব্যাটার মারক্রাম মাত্র ৪৯ বলে সেঞ্চুরি করেছেন। বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির সেটিও নতুন রেকর্ড। এতদিন ৫০ বলে সেঞ্চুরির সেই রেকর্ডটি দখলে ছিল আইরিশ কেভিন ও ব্রায়ানের। বিশাল রান তাড়া করতে গিয়ে ৩২৭ রানের উপরে যেতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। দক্ষিণ আফ্রিকার ১০২ রানের এই জয়ে মিশে আছে দ্রুততম সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ দলগত সংগ্রহ আর এক ইনিংসে তিন সেঞ্চুরির বিশ্বকাপ রেকর্ড। শ্রীলঙ্গকার মেন্ডিস ৮ ছয় ৪ চারে ৪২ বলে ৭৬ রান এবং আসালঙ্কা ৬৫ বলে ৭৯ ও অধিনায়ক শানাকা ৬২ বলে ৬৮ রান তুলেন।
প্রথম খেলায় বাংলাদেশ সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২৭ রানেই দুই ওপোনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন কুমার দাসের উইকেট হারায়। এরপর দলের হাল ধরেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে তারা ১২৯ বলে ৯৭ রানের জুটি গড়েন। জয়ের জন্য শেষ দিকে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩৩ রান। খেলার এমন অবস্থায় উইকেট হারান মিরাজ। ৭৩ বল মোকাবেলায় ৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৭ রান করে ফেরেন মিরাজ। মিরাজ আউট হওয়ার পর ১৯ বলে ১৪ রান করে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন সাকিব। এরপর ব্যাটিংয়ে নামেন মুশফিকুর রহিম। তিনি নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
শুরুতে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে আফগানিন্তান। ওপেনিং জুটিতে ৪৭ রান করেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইবরাহিম জাদরা। তাদের এই জুটির বিচ্ছেদ ঘটান সাকিব আল হাসান। সাকিবের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ২২ রান করেন ইবরাহিম জাদরান। এরপর ফের আফগান শিবিরে আঘাত হানেন সাকিব। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ১৮ রানে ফেরেন ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে নামা রহমত শাহ। এরপর আফগান শিবিরে একের পর এক আঘাত হানেন মেহিদ হাসান মিরাজ ও পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। অফ স্পিনার মিরাজের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি। তিনি ৩৮ বলে ১৮ রান করে আউট হন। ঠিক পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফেরান মোস্তাফিজ। সাজঘরে ফেরার আগে ৬২ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে ৪৭ রানে করেন গুরবাজ। সাকিব আল হাসানের তৃৃতীয় শিকারে পরিণত হন নজিবুল্লাহ জাদরান। তিনি বোল্ড হওয়ার আগে ১৩ বলে ৫ রান করার সুযোগ পান। এরপর নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নবিকে বোল্ড করে ফেরান পেসার তাসকিন আহমেদ। তার বিদায়ে ২৯.৬ ওভারে ১২৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। শেষ দিকে আসা-যাওয়ার মিছিলে অংশ নেন রশিদ খান, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, মুজিব-উর রহমান ও নাভিন উল হক। একেরপর এক উইকেট পতনের কারণে ৩৭.২ ওভারে ১৫৬ রানেই ইনিংস গুটায় আফগানরা। বাংলাদেশ দলের হয়ে দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৩টি করে উইকেট নেন। দুই উইকেট নেন পেসার শরিফুল ইসলাম। একটি করে উইকেট নেন পেসার তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।