ভাঙা সড়কের দুঃখ আর ঘুচলো না
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ৪:০৯:১৮ অপরাহ্ন
আবিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ থেকে : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বুড়দেও (গাঙপাড়) গ্রামের যাতায়াতের রাস্তা ভেঙে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। রাস্তা ভেঙে খাদে চলে যাওয়ায় এ পথে যাতায়াত করা মানুষজনের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে গ্রাম থেকে কেউ বের হচ্ছেন না। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীদের যাতায়াতে ভোগান্তির অন্ত নেই। গ্রামবাসী দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। নির্বাচনের আগে অনেক জনপ্রতিনিধি রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও কেউ কথা রাখেননি। তাই দক্ষিণ বুড়দেও গাঙপাড়ের মানুষের ভাঙা সড়কের দুঃখ আর ঘুচলো না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা এলজিইডির আওতাধীন রাস্তাটি ২০০১-০২ অর্থ বছরে পাকাকরণ হয়। এরপর দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এর মেরামত হয়নি। গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় রাস্তার কয়েক জায়গায় বিপজ্জনক গর্তের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এ রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। গাড়ি তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাও দায়! বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীদের যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ রাস্তার দক্ষিণপ্রান্তে গৌখালেরপাড় গ্রাম। উত্তরপ্রান্ত গিয়ে মিশেছে সিলেট- কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়কে। মাঝখানে তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স। পশ্চিমে কোম্পানীগঞ্জ গ্রামে যাওয়ার সংযোগ সড়ক। ভাঙাচোরা এ রাস্তায় অনেককে যানবাহনের পরিবর্তে হেঁটে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। কোথাও সড়কে পাকা অংশের রড বেরিয়ে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আব্দুল ওয়াদুদ শিপন বলেন, দক্ষিণ বুড়দেও গাঙপাড়ের মানুষ ছাড়াও এই রাস্তা দিয়ে তেলিখাল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের লোকজন নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন। বর্তমানে এটি বিপদজনক রাস্তায় পরিণত হয়েছে। অচেনা কেউ হঠাৎ করে এ রাস্তাটি দিয়ে গাড়ি নিয়ে এলে বিপদে পড়েন।
গ্রামের দক্ষিণপ্রান্তে বাড়ির সামনে মুদির দোকান দিয়েছেন মখলিছুর রহমান। তিনি বলেন, ভাঙা সড়কে কোন গাড়ি আসতে চায় না। তাই দোকানের মালামাল আনতে পায়ে হেঁটে উপজেলা সদরে যেতে হয়। আমাদের কষ্টের সীমা নেই।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্দুছ ছালাম বলেন, উপজেলা সদরের এত কাছাকাছি হওয়ার পরও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ গ্রামের লোকজন। এটা মোটেই কাম্য নয়। দুই কিলোমিটার ভাঙা সড়ক পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে যেতে হয়। কাঁধে করে বা পাঁজা কোলে করে রোগীদের হাসপাতালে নিতে হয়। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
আব্দুছ ছালাম আরও বলেন, দক্ষিণ বুড়দেও গাঙপাড় গ্রামটি উন্নয়ন বঞ্চিত। এ এলাকার দুরবস্থা সম্বন্ধে কারও মাথাব্যথা নেই। মেম্বার-চেয়ারম্যান কেউই খবর নেয় না। তাই তিনি দুইবার মেম্বার পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে নিজ গ্রামসহ ওয়ার্ডের উন্নয়নে অবদান রাখতে চান বলে নিজ ইচ্ছের কথাও জানান তিনি।
ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো. জিয়াদ আলী বলেন, চেয়ারম্যান হওয়ার আগে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে রাস্তাটি মেরামত করে দিয়েছিলাম। গত বন্যায় ভেঙে গেছে। ভাঙা রাস্তাটি আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ পেলে সবার আগে এই রাস্তাটি করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ খান রাবি বলেন, দক্ষিণ বুড়দেও (গাঙপাড়) গ্রামীণ সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কের প্রকল্প তৈরি করে এলজিইডির সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা যাবে।