কাজের ক্ষেত্রে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেন না থাকে : প্রধানমন্ত্রী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ৯:৩১:২৪ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : আমলাতান্ত্রিক জটিলতার ‘লাল ফিতা’ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি চাই কাজের ক্ষেত্রে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেনো আর না থাকে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪র্থ বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদারগুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো (ব্লিস)-এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রচলিত লাল ফিতা ধারণার অবসান হলে ব্যবসা বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে। দেশ আরও উন্নত হবে। আমাদের একটা মানসিকতা আছে যে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা; ভাবে যে আরেকটু টাইট দিতে পারলে বোধহয় সব ভালো হবে। সব সময় সেটা ভালো হয় না।’
তিনি বলেন, ‘দ্রুত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন নীতিতে আমি বিশ্বাস করি। আমি চাই কাজের ক্ষেত্রে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেন আর না থাকে। সময় নষ্ট করার মতো সময় নেই। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।’
সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকেও আমি বলবো, একটু আন্তরিক হলেই সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করা যেতে পারে। কারণ, নষ্ট করার মত সময় নেই, টাইম ইজ টু শর্ট। সেটা যেমন মাথায় রাখতে হবে তেমনি দেশকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
এ সময় দেশের চামড়া শিল্পকে আরও উন্নত করতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীনে ‘চামড়া শিল্প উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ করার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি অনেক দেশের অনেক পণ্য তারা এখান থেকে তৈরি করে নিয়ে গিয়ে নিজেদের দেশে ফিনিশিং দিয়ে নিজেদের নামে বাজারজাত করে। সে ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাও বাংলাদেশ ব্রান্ড হিসেবে নিজেদের কিছু কিছু ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারি কিনা আমার মনে হয় সে দিকেও নজর দিলে ভাল হয়। এক্ষেত্রে আমাদের সরকারের কাছ থেকে সবধরনের সহযোগিতা পাবেন।
তিনি বলেন, আমি চাই আমাদের পণ্য আমাদের নামে বাজারজাত হোক। আমাদের দেশের নাম বাড়ুক। দেশের নাম সুন্দর হোক, বৃদ্ধি পাক। কেননা আওয়ামী লীগ সরকারের এই টানা তিন মেয়াদে তার সরকার অনেক খাতে অনেক সুযোগ করে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্পের রপ্তানিকারকদের উচ্চ মূল্য সংযোজন করে বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের ও ক্রেতাদের ক্রয় আদেশ সম্পাদন সক্ষমতা এবং ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সুউচ্চ গুণগতমান সম্পূর্ণ বৈচিত্রময় পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বাংলাদেশ করছে।
তিনি বলেন, যেহেতু অর্থনৈতিকভাবে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, দারিদ্রের হার কমেছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে এবং আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষই এখন পণ্য ক্রয় করে। অতীতে যেখানে মানুষের পায়ে একটি রবারের চপ্পলও ছিল না এখন কিন্তু সেটা আর দেখা যায় না। পাশাপাশি, সরকার রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন করে দেয়ায় এখন আর কাদামাটি ঠেলেও বেশি চলতে হয় না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের ব্লিস-এর থিম পসেবল ইন বাংলাদেশ (বাংলাদেশেও সম্ভব) সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারী-বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়নমূলক রূপান্তর ঘটেছে তা এতে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। উদ্যোক্তাদের এ জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি। আমি বিশ্বাস করি এই বাংলাদেশও সম্ভব, বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অ্যাডভান্সড ম্যানুফ্যাকচারিং গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জোনাথন ববেট এবং গোল্ডেন চ্যাং গ্রুপের বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠাতা জেমস হো।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।