প্রসঙ্গ : প্রাথমিকে দুপুরের খাবার
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ২:১৬:৩৯ অপরাহ্ন
রওশন আরা চৌধুরী
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বৃদ্ধি করার জন্য গত বছর ‘খিচুড়ি প্রোগ্রাম’ শুরু হয়েছিলো। তখন বলেছিলাম কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশে খিচুড়ি রান্না করার প্রশিক্ষণ না দিয়ে অন্যান্য আরো উপায়ে ছাত্র ভর্তি, উপস্থিতি নিশ্চিত করার সুযোগ আছে। আমরা সে বিষয়গুলির যৌক্তিকতা কতোটুকু তা খুঁজে দেখি।
আমরা ৫০ বছর পূর্বে যখন স্কুলে পড়তাম, তখন মাসিক বেতনের সাথে টিফিনের জন্য ১/২ টাকা ফি দেয়া হতো। ১টা গোল বড় সাইজের বিস্কিট, বানরুটি, সিঙ্গারা এসব খাওয়ানো হতো। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি ও নানান জটিলতায় অনেক ক্ষেত্রেই তা বন্ধ হয়ে যায়। আবার কোথাও বা এখনও চালু আছে। খাওয়ার লোভে শিশু শিক্ষার্থী স্কুলে দারুণভাবে মনোযোগী হয়ে উপস্থিত থাকবে, আমার মনে হয় না।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ২০০১-২০০৯ সাল পর্যন্ত স্কুল শিশুদের খাওয়ানোর জন্য প্রকল্প চালু হয়েছিলো। সর্বশেষ ২০১০ সালে সরকারি স্কুল ফিডিং ১০৪ উপজেলায় ৩০ লাখ স্কুলে চালু করা হয়েছিলো। ৭৫ গ্রাম ফর্টি ফাইভ বিস্কুটে শিক্ষার্থীকে স্কুলে যথাযথ উপস্থিত করাতে পারেনি। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত এ প্রোগ্রাম চালু ছিল। কিন্তু এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই ৫৬৬ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকার কর্মসূচি নেয়া হয় খিচুড়ি খাওয়ানোর নামে। স্কুলে খিচুড়ি রান্না করার ঝামেলা চিন্তা করে এই প্রকল্প বাতিল হয়। আল হামদুলিল্লাহ একটা ভুল সিদ্ধান্ত থেকে জাতীয় কোষাগার থেকে এতগুলো টাকার অপচয় থেকে রক্ষা হলো।
আমার জীবনের পঁয়ত্রিশ বছর প্রাইমারী, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের সংস্পর্শে কাটিয়ে দেয়া অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, নি¤œলিখিত বিষয়গুলি শিশু মন আকৃষ্ট করে স্কুলমুখী হয়। মাননীয় সরকার মহোদয় বিবেচনা করলে করতে পারেন।
(১) শিশুর বয়স ৪+ হলেই মায়ের আঁচল ছেড়ে বিদ্যালয় পরিবেশে আসার সুযোগ হয়। অনুসন্ধিৎসু মন নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রথমেই খোঁজে ‘নিরাপত্তা’। ভয়হীন সুন্দর সাজানো পরিবেশ। দেয়ালে দেয়ালে ছবি। ছোট্ট আসন অথবা মেঝেতে নিরাপদে একজন মমতায় ভরা শিক্ষক হাসিমুখে হাত বাড়িয়েছেন শিশুটির দিকে। শিশু সেই হাতকে মা-বাবার হাতের মতো নিরাপদ ভাববে। গল্প, হাসি, গানের মাধ্যমে শেখার বিষয়কে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শিক্ষক তো ঘরের মানুষের মতো আপনজনের মতো কথা বলছেন, শিশুকে নির্ভয়, উৎসাহ, আদর দিয়ে কথা বলছেন। নিজ গৃহের মতো নিরাপদ মনে হচ্ছে শিশুটির কাছে স্কুল পরিবেশ। বাড়িতে গিয়ে শিশু কেবল স্কুলের কথাই গল্প করে। স্কুলে আসার জন্য তার মন আনমন করতে থাকে।
সমাধান- উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ। কেবল সার্টিফিকেট দেখে নয়, আচরণগত যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ণয় করে ছাত্র সংখ্যানুপাতে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। পেশা হিসাবে নয়, প্রাথমিকে শিক্ষকতা করতে হলে নেশায় শিক্ষক নিয়োগ দিন। যে শিক্ষক মাসের শেষে বেতন আর চাকুরী শেষে বস্তা ভরা পেনশন চিন্তা করবে তাকে পরিদর্শনের মাধ্যমে পরিবর্তনের সুযোগ দিন নয়তো টার্ন আউট করুন। জাতির কর্ণধার তৈরি করার জন্য নিবেদিত শিক্ষকের বিকল্প নেই। ২য় শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র অনুপাতে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। একজন দক্ষ শিক্ষকই পারেন শ্রেণিতে উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে, ঝরে পড়া রোধ করতে। ফিডিং প্রকল্পে হাজার কোটির পরিবর্তে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
শিক্ষক অভিভাবক যোগাযোগ- প্রাইমারি সেক্টরে একসময় ঐড়সব ারংরঃ চালু ছিল। জানি না এখন আছে কি-না। কোমলমতি শিশুরা সকল সমস্যার কথা খুলে প্রকাশ করতে পারে না। অভিভাবকের সাথে শিক্ষকের শেয়ারিং এখনতো মোবাইলেও সম্ভব হয়। কারণ ঘরে ঘরে হাতে হাতে মোবাইল আছে। শিক্ষক অভিভাবকের কাছ থেকে শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি বা অন্য কোন সমস্যা থাকলে জেনে নিবেন। নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে ঝরে পড়া রোধ হবে। শ্রেণি শিক্ষক শিক্ষার্থী সম্পর্কে যতোবেশি খোঁজ খবর রাখবেন হাজার কোটি ব্যয় করে টিফিন খাইয়েও সেটুকু ফল পাওয়া যাবে না।
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন- নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ শিক্ষক সমস্যা চিহ্নিত করে যথাযথ পরামর্শ দিবেন। কেবল শিক্ষার্থীর মাধ্যমে লেখাপড়া অগ্রসর হয় না। শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবক এই তিনের সমন্বয়ে পড়াশুনার অগ্রগতি নির্ণয় হয়। এই তিনটি উপাদানের একটির মধ্যে ঘাটতি থাকলে শিক্ষার্থী অনগ্রসর থাকবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা, শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা সৃষ্টি করা, অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার মাধ্যমে ভর্তির হার ও উপস্থিতি নিশ্চিত করা সম্ভব। ১/২ মাস পর পর সাবক্লাষ্টার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একদিনে শিক্ষক তৈরি করা যায় না। আমার কার্যকালীন সময়ে দেখেছি, প্রশিক্ষণ দিয়ে, পরিদর্শন জোরদার করেও অনেক শিক্ষকের আচরণে তেমন পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু নিবেদিত শিক্ষক যারা চেয়েছেন পেশাকে সম্মান দেখাতে, নিজেকে সম্মানিত করতে তাঁরা ঠিকই প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়েছেন। ‘অজুহাত’ নামক তিন নম্বর হাতকে যারা সব সময় কাজে লাগাতে চেয়েছেন তারা নিজের পরিবর্তন করা অথবা শিক্ষার্থীর উন্নয়নও ঘটাতে পারেননি। দক্ষ প্রশিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি করে শিক্ষককে সঠিক গাইড লাইন দিলে বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীর আমূল পরিবর্তন হতে পারে।
পুরস্কার- প্রতি বছর প্রতি বিদ্যালয়ে দক্ষ শিক্ষককে ঝগঈ কর্তৃক অথবা সরকার কর্তৃক পুরস্কৃত করা। দিনকে দিন একজন শিক্ষক এলাকার শিশুদের সাথে সময় কাটাবেন, তাদের ভালোমন্দ, সুখ দুঃখের সাথী হয়ে আছেন, শিক্ষার্থীর উন্নয়নে খাটনী দিলেন, কোনদিন নিজের সম্পর্কে একটা ভালো কথা শুনতে পাবেন না, জানতে পারবেন না- তা তো হয় না। আমাদের কোমলমতি সন্তানের সেবা দিচ্ছেন শিক্ষক শুধু সরকারি বেতনের বিনিময়ে কিন্তু অভিভাবকের কাছ থেকে ন্যূনতম ধন্যবাদ পাবেন না একতরফা বিষয়টি বেমানান। শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া রোধ, উপস্থিতি বৃদ্ধি, লেখাপড়ার মান ইত্যাদি যাচাই করে শিক্ষক-ছাত্র উভয়কে পুরস্কৃত করা দরকার। শিক্ষক মূল্যায়ন বিষয়টি কেবল অঈজ এ সীমাবদ্ধ না রেখে বছরে একবার অন্ততঃ অনুষ্ঠান করে প্রচার করা ভাল। তাতে পিছিয়ে পড়া শিক্ষকের মাঝেও একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। শিশুর শিক্ষা পদ্ধতিও হতে হবে মনস্তাত্ত্বিক।
শিশুর শিক্ষা পদ্ধতি- বাংলাদেশে এগারো ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। সমাজের চিত্র হলো- আশি ভাগ মানুষ নি¤œ আয়ের। যেখানে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল। শিশুর শিক্ষা পদ্ধতি হবে- সহজ যা তারা সহজে গ্রহণ করতে পারে। শিশুর বয়স, মেধা, রুচি ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে হবে তাঁর পাঠচক্র। যা তাঁর বাস্তব জীবনে কাজে লাগতে পারে। ভার্সিটি পাশ করা ছেলে সাঁতার না জানার কারণে পুকুরে ডুবে বা নদীতে ডুবে মারা যায়- তাহলে তার শিক্ষাগ্রহণ বাস্তবধর্মী হয়নি। তাঁর পুস্তকে থাকবে প্রতিদিনকার আশপাশের প্রকৃতি, গাছ পালা, ফলফুল, মাছ, পাখি, পশু প্রাণির নাম পরিচিতি। যাতে সে বইয়ের পাঠের সাথে বাস্তবের মিল খুঁজে পায়। শিশু খেলাধূলা পছন্দ করে। পরিবেশে প্রচলিত খেলাধূলার নিয়ম কানুন তাকে শেখাতে হবে। খেলা করার সুযোগ করে দিয়ে তাঁর সহিষ্ণুতা, ধৈর্য, রুচি, আবেগ পরীক্ষা করতে হবে শিক্ষককে। অপরের সুখ-দুঃখ অনুভব করার ক্ষমতা, ধৈর্য, অনুভূতি ইত্যাদি সকল বিষয়ে শিশুকে পর্যবেক্ষণের নিয়ম কানুন তাঁর সিলেবাসে থাকতে হবে। শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য সততা, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা, আত্মউৎসর্গের মনোভাব, মূল্যবোধ ইত্যাদি স্কুলে ও পারিবারিক পরিবেশে যাতে চর্চা করা হয় তা সিলেবাসে রাখা। মনোবিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন এসব গুণ মানুষের মধ্যে বিকশিত হয় পরিবার ও পরিবেশের মাধ্যমে, জন্মগত নয়।
মা সমাবেশ- শিশুর সাথে মায়ের সম্পর্ক নিবিড়। শিক্ষার্থী সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য মাকে জানানো একান্ত দরকার। অনেক মা অভিভাবক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের কাছে যেতে চান না ভয়, সংকোচ, দারিদ্র্যতা ইত্যাদি নানা কারণে। মা সমাবেশের মাধ্যমে শিক্ষকগণ কয়েকজন মাকে একত্র করে শিশুর দুর্বলতা, সবলতা, শারীরিক মানসিক স্বাস্থ্য, পুষ্টি, রোগ বালাই সম্পর্কে আলোচনা করতে পারেন। উভয়পক্ষের এই মিলনমেলায় শিক্ষার্থীর মধ্যে নিজের প্রতি একটা আস্থা ও গুরুত্ব বেড়ে যাবে। শিক্ষার্থীর স্কুলে উপস্থিতি ও ঝরে পড়া রোধের জন্য মা সমাবেশ একটি উৎকৃষ্ট কৌশল।
উঠান বৈঠক- স্কুল ক্যাচমেন্ট এরিয়া যে কোন একটি বাড়ির উঠানে ছুটির দিনে মা অথবা বাবাকে ডেকে এনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর খোঁজ খবর নিতে পারেন। আমার ধারণা দক্ষ শিক্ষক সব বিষয়ে জ্ঞান রাখেন ও নিঃস্বার্থভাবে অবহেলিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে সে জ্ঞান বিতরণ করতে পারেন। একটা শিশু মনে করেন হাতের লেখায় পারদর্শী কিন্তু শিক্ষকের কাছে খাতা দেখায়না বা জবাব দেয় না। শিক্ষক ভাবতে পারেন শিশুটি বেয়াদব। শিশুটির নির্জীবতার কারণ সে কানে শোনে না। শিক্ষক শিশুটি সম্পর্কে জেনে তাঁর অভিভাবককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ বা ডাক্তারের ঠিকানা দিতে পারেন। অপর একটি শিশু বোর্ডের লিখা খাতায় না লিখে শিক্ষকের দিকে তাকিয়ে থাকে, ক্লাশের অন্য শিশুরা তাকে নিয়ে হাসি তামাশা করে, তাই সে নিয়মিত স্কুলে আসে না। অভিভাবককে শিক্ষক তাঁর সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারেন উঠান বৈঠকে। মানবকল্যাণের এতো এতো সুযোগ শিক্ষকতা পেশায় আছে যে, তা বলে শেষ করা যাবে না। শিক্ষক যে পথে হাট বাজারে, মসজিদ, মন্দিরে, খেলার মাঠে হাঁটবেন সেদিকেই মানুষের সেবা করার সুযোগ পাবেন। চোখে কম দেখা, কানে কম শোনা, শরীরে ঘা পাঁচড়া, অঙ্গ দুর্বলতা ইত্যাদি নানা কারণে শিশু স্কুলে অনুপস্থিত থাকে বা ঝরে পড়ে। একমাত্র অভিভাবকের পর শিক্ষকই পারেন এরূপ শিশুর জীবনে আলোকবর্তিকা হয়ে দাঁড়াতে।
১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত উপরোক্ত কৌশলগুলি ঝরে পড়া রোধের জন্য কমবেশি চালু থাকলেও আশানুরূপ পরিবর্তন আসছে না। তাই আমার বিবেচনায় চাহিদা অনুপাতে দক্ষ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ করে সাড়ে সতেরো হাজার কোটি টাকার হয়তো যথাযথ ব্যবহার করা যাবে। অশিক্ষিত অভিভাকের দিকে সমাজের বিবেকবান মানুষ হাত বাড়ালে শিক্ষায় অগ্রগতি আসবে।
সুদীর্ঘ ৩২ বছর শিক্ষক, পরিদর্শক, প্রশাসক হিসাবে সরকারের দায়িত্বশীল পদে কর্মব্যস্ত থেকে ২০১০ সালে অবসরে গিয়েও একদিনও এবং সত্তুরের কাছাকাছি বয়সে এসেও আজও বসে থাকতে পারিনি। সর্বশেষ রিসোর্স পার্সন হিসাবে চঞও তে দু’বছর আনন্দঘন কর্মব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। এই মুহুর্ত পর্যন্ত ভাবছি, আমার আরও অনেক কাজ বাকী আছে। আমি শিশু শিক্ষার্থী সহ সমাজকে আরও কাছে থেকে পেতে চাই ও মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।
নতুন নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হলে অর্থের অপচয়, মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগীর পকেট ভরা। সময়োপযোগী যে সমস্যা বিরাজমান বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট, দক্ষ আত্মনিবেদিত শিক্ষকের অভাব। সমাজ ব্যবস্থায় অবমূল্যায়ন লক্ষ্য করে অভিভাবক শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা মক্তবে ভর্তি করাতে চায়। কারণ বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের অভাব। ধর্মীয় শিক্ষার জন্য পাশাপাশি মাদ্রাসাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন অভিভাবক। মানসম্মত শিক্ষার জন্য মানসম্মত শিক্ষক প্রয়োজন। অতীতে এসএসসি পাশ করা শিক্ষক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হতো। দক্ষ এসএসসি পাশ শিক্ষককেও এখন সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী ছাত্র দেখা হলে পায়ে ধরে ছালাম করে। এখনতো উচ্চ শিক্ষিত শিক্ষক প্রাথমিক বিভাগে আসতে চান। যথাযথ যোগ্যতার নিরিখে তাদের মাধ্যমে উদ্দেশ্য সিদ্ধি করা যেতে পারে।
ছাত্র ভর্তি ও উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য বহুবিধ কৌশলের মধ্যে ৩/৪টি উল্লেখ করলাম। সাথে সাথে যথাযথ শিক্ষক নিয়োগ করে কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে। এদেশের প্রাথমিক শিক্ষার বহুবিধ সমস্যারও সমাধান হবে বলে আমার বিশ্বাস।
লেখক : সভাপতি, সিলেট লেখিকা সংঘ।