লাল ফিতার দৌরাত্ম্য
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ অক্টোবর ২০২৩, ৪:২৯:৪২ অপরাহ্ন
দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে ব্যর্থ হওয়ার একটি মাত্র উপায় আছে আর তা হলো ঝুঁকি না নেওয়া। -মার্ক জাকারবার্গ
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতার এই ‘লাল ফিতা’ থেকে বেরিয়ে আসাতে হবে। আমি চাই কাজের ক্ষেত্রে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেন আর না থাকে। সম্প্রতি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রচলিত লাল ফিতা ধারণার অবসান হলে ব্যবসা বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে। দেশ আরও উন্নত হবে।
লাল ফিতায় বাধা ফাইল খোলা হয় না, হয়রানির অবসান হয় না সাধারণ মানুষের। এই চিত্র সরকারি দপ্তরগুলোতে। সেটা নতুন নয়। চিরাচরিত দৃশ্য এটি। মূলত ফাইল আটকিয়ে সেবাগ্রহিতার কাছ থেকে ঘুষ আদায় করাসহ নানাভাবে ঈপ্সিত কাজে দীর্ঘসূত্রতার ব্যাপারটিকেই ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা যায়, লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে স্থবির হয়ে পড়েছে সরকারি অফিস-আদালতের কার্যক্রম। সচিবালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের অফিস-আদালত, মন্ত্রণালয়, দফতর-অধিদফতর, ব্যাংক-বীমা, হাসপাতালসহ সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য জেঁকে বসেছে। স্বাভাবিক গতিতে কোথাও কাজ হয় না। তদবির, প্রভাবশালীদের চাপ কিংবা আর্থিক লেনদেন ছাড়া সরকারি কর্মচারিরা কাজ করে না। আর তাই কোন কাজের জন্য মানুষকে দিনের পর দিন বিভিন্ন দফতরে ধর্না দিতে হয়। অথচ সংশ্লিষ্টরা এটা একবারও ভাবে না যে, দেশের মানুষ সরকারি দফতরগুলো থেকে যে সেবা পায় সেগুলো কারোর দয়া-দাক্ষিণ্য নয়। এটি জনগণের অধিকার। দেশবাসির দেওয়া ট্যাক্সের টাকায় যেহেতু সরকারি অফিসগুলো পরিচালিত হয়, সেহেতু তাদের সেবা নিশ্চিত করা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের কর্তব্য। স্মরণ করা যেতে পারে, অতীতে লাল ফিতা দিয়ে ফাইল বাধা হতো, এটা ঠিক। দৌরাত্ম্য বন্ধে এখন ফাইল বাধা হয় সাদা ফিতায়। কিন্তু আমলাদের দৌরাত্ম্য বন্ধ তো হয় ই নি,বরং তা সর্বগ্রাসি রূপ নিয়েছে। যা গোটা দেশ ও রাষ্ট্রকে জিম্মি করে রেখেছে। তাই প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন-দেশের উন্নয়ন এবং নাগরিকদের কাছে সরকারের সেবা পৌঁছাতে হলে আমলাতান্ত্রিক লাল ফিতার দৌরাত্ম্যকে থামাতে হবে। দ্রুত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন নীতিতে আমি বিশ্বাস করি। আমি চাই কাজের কোথাও লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেন আর না থাকে।
সরকার ইতোপূর্বে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে ই-ফাইলিং বা ই-নথি কার্যক্রম চালু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নথি ব্যবস্থাপনা শুরু হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই আলস্যপ্রিয়, দেশপ্রেমহীন মনমানসিকতা, অসাধু, অদক্ষ, মানবিকতার বোধহীন ৯০ শতাংশ আমলার চরিত্র পাল্টানো যাচ্ছে না।