ডিআই পিকআপ নিয়ে সিলেটে এসে প্রাণ হারালেন ঢাকার দুই ব্যক্তি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৪৬:৫৯ অপরাহ্ন

মানত পূরণ করতে তারা মাজার জিয়ারতে এসেছিলেন
জৈন্তাপুর থেকে নূরুল ইসলাম ॥ ডিআই পিকআপ নিয়ে সিলেটে মাজার জিয়ারতে এসে প্রাণ হারালেন ঢাকার দুই ব্যক্তি। তারা হলেন-ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার ইটাপাড়া দক্ষিণ কানারচর গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর (৩০) এবং অপরজন হলেন ঢাকা হেমায়েতপুর এলাকার চরতুলাতুলি গ্রামের আব্দুল বারেক মিয়ার ছেলে মোহাইমিন (২৫)।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের কাটাগাং নামক স্থানে গাছের সাথে পিকআপের ধাক্কায় সৃষ্ট দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় অন্তত আরো ৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
হাইওয়ে পুলিশের এসপি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, দুর্ঘটনার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির মধ্যে ড্রাইভার অনেকটা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এক পর্যায়ে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে গাড়িটি খাদে পড়ে যায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে একটি ডিআই পিকআপ গাড়িসহ সিলেট মাজার জিয়ারত করতে আসেন ১২জন যাত্রী। ভোরে তারা হযরত শাহজালাল(র.) ও শাহপরান(র.) মাজার জিয়ারত করেন। মাজার জিয়ারত শেষে তারা গতকাল সকালে জাফলং বেড়াতে যাচ্ছিলেন। বৃষ্টির কারণে সিলেট-তামাবিল সড়কের কাটাগাং নামক স্থানে আসলে একটি গাছের সাথে ধাক্কা লেগে পিকআপটি (ঢাকা মেট্রো-ন ১৭-৭১১০) খাদে পড়ে যায়। ফলে দুইজন নিহত ও অন্তত ৭ জন আহত হয়।
আহতরা হলেন, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকার মো. শাহ আলমের ছেলে রিপন (২২), আব্দুল বারেক মিয়ার ছেলে রুবেল আহমদ (২৩), বাবুল হোসেনের ছেলে মিন্টু (২৫), নজরুল ইসলামের ছেলে মো. হোসেন (২৪), লঙ্কারচরের আলা উদ্দিনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৫), ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা কামারচর এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে সুমন আহমদ (২৫), মারুফ আহমদ (২২)। দুর্ঘটনায় সুস্থ রয়েছেন শুভ (২৪), মিন্টু (২৩) ও সজিব (২৫)।
খবর পেয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানা ও তামাবিল হাইওয়ে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ২ জনকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সালাউদ্দিন মিয়া আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তামাবিল হাইওয়ে পুলিশের ওসি জাহিদ হাসান জানান, আদালতের অনুমতি নিয়ে নিহতদের লাশ রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছিল। দুর্ঘটনার পর হতাহতদের খোঁজ নিতে ছুটে যান জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-বশিরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার (ইনচার্জ) মো. তাজুল ইসলাম (পিপিএম), জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ।
এক মাস পূর্বে গাড়িটি ক্রয় করেছিলেন মালিক
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গাড়ির মালিক নিহত জাহাঙ্গীর একমাস পূর্বে গাড়িটি ক্রয় করেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় তিনি সিলেটে মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে স্থানীয় ১২ জন ছোট ভাই বন্ধুদের নিয়ে সিলেট হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজারে আসেন। জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম পিপিএমও জানিয়েছেন, ক্রয়ের পর মালিক গাড়িটি নিয়ে সিলেটে মাজার জিয়ারতের মানত করেছিলেন। জিয়ারতে এসে প্রাণ গেল দুজনের।