জামালগঞ্জে নদীশাসনের তৈরি ব্লক ১০ বছর যাবৎ স্টকে আছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ১:০১:০৯ অপরাহ্ন
জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) থেকে অঞ্জন পুরকায়স্থ ঃ সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে বসত ভিটায় ব্লক থাকায় গৃহ নির্মাণ করতে পারছেন না। তেমনি নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী সুফল হচ্ছে না। জানা গেছে, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার তেলিয়া গ্রাম। সুরমা নদীর ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার জন্য স্থানীয় ভাবে অনেক আবেদনের পর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্য তেলিয়া নদী শাসনে ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালে ১৭ ডিসেম্বর কাজ শুরু করে। ২৭ হাজার ডাম্পিং ও ৩৮ হাজার প্রেন্টিং ব্লক তৈরি করে ভাঙ্গন এলাকায় ফেলা হয়। নদীর তীরবর্তী মাটি কেটে লেভেল করে জিও টেক্স এর উপর বিছানো হয় এই প্রেন্টিং ব্লক।
পরবর্তীতে ভাঙ্গন রোধে দ্বিতীয় ধাপে বিচ্ছিন্ন ভাবে নদী ভাঙ্গনের স্থান মেরামত করার জন্য হাজার হাজার ব্লক নির্মাণ করে সুরমা নদীর পূর্ব তীরে মফিজ নগর গ্রামের পাশে। পরে এই ব্লকগুলো মফিজ নগর সহ বসত বাড়ি, ব্যক্তি মালিকানা জায়গায়, খাদ্য গোদামের যাতায়াতের স্থানে বিচ্ছিন্ন ভাবে কয়েক শতাধিক ব্লক ফেলে রাখা হয়েছে। যার কারণে ব্যক্তি মালিকানা লোকদের বসত ভিটা নিজে ব্যবহার করতে পারছেন না। সেই সাথে নদী ভাঙ্গন এলাকা রোধে পাউবো কোন পদক্ষেপ নেই।
তেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা (অব.) শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, বসন্ত কালে যখন নদীর পানি কমে যায় তখন নদী ভাঙ্গনের করুন দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। তখনই সংরক্ষিত ব্লকগুলো বিছানোর কথা ছিল কিন্তু ১০ বছর যাবৎ কোন পদক্ষেপ নেই। একটু তদারকি করলে সরকারের অর্থের অপচয় রোধ হত ও উপকার ভোগীরা উপকার পেত।
জামালগঞ্জের ইতিহাস গ্রন্থের লেখক মরহুম গোলাম মর্তুজার বাসার আঙ্গিনাসহ মুক্তার হোসেন তালুকদারের বসত ভিটায় ব্লক থাকার কারণে গৃহ নির্মাণ করতে পারছেন না। তেমনি নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী সুফল পাচ্ছেন না। শামছুজ্জামান তালুকদার ও রুবেল মিয়া সহ অনেকের দাবি চলতি মৌসুমেই সংরক্ষিত ব্লকগুলো তোলে ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। বসত ভিটা ও খাদ্য গুদাম প্রাঙ্গন থেকে ব্লক সরিয়ে ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, স্থানীয় মসজিদ সহ দেড়শ ঘর বিলীন হবার পর পাউবো এই পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও উপকার ভোগীদের উপকার হচ্ছে না।
জামালগঞ্জ উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন জানান, আমার দপ্তরের পক্ষ থেকে ব্লক সরানোর জন্য কয়েক দফা চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কর্ণপাত করছেন না পাউবো। এই ব্লকের কারণে খাদ্য গুদামের মালামাল উঠা নামায় শ্রমিকদের অনেক কষ্ট ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
পাউবো’র পক্ষে জামালগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জনি জানান, এই প্রকল্পটি ২০১১ সালে যখন ব্লকগুলো তৈরি হয়, তখন পরবর্তী এক বছরের মধ্যেই নদী ভাঙ্গনের বিচ্ছিন্ন স্থানে ব্লক ফেলে মেরামত করার কথা ছিল। যেহেতু ১২ বছর চলে গেছে এখন বিষয়টি প্রকল্পের অধীনে নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইচ্ছে করলে জনস্বার্থে যে কোন কাজে ব্যবহার করতে পারেন।