কৃষক স্মার্ট কার্ড
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ৬:৫৫:৩১ অপরাহ্ন
যারা হৃদয় দিয়ে কাজ করতে পারে না; তাদের অর্জন অন্তঃসারশূন্য, উৎসাহহীন সাফল্য চারদিকে তিক্ততার উদ্ভব ঘটায়। -এ পি জে আব্দুল কালাম
অবশেষে কৃষক পাচ্ছে স্মার্ট কার্ড। বছর কয়েক আগে এই ধরণের পরিকল্পনা নেয়া হলেও এবার তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। প্রায় সোয়া দুই কোটি কৃষক পাবেন স্মার্ট কৃষি। এ কার্ডের মাধ্যমে দেশের বড় সংখ্যক কৃষক ডিজিটাল সেবা পাবেন এবং সরকারের ডিজিটাল ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। ‘পার্টনার’ নামে সরকারের নেওয়া একটি মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মূলত ডিজিটাল কৃষি সেবার সম্প্রসারণ করার লক্ষে চলতি বছর এপ্রিলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় ৭ হাজার ২১৪ কোটি টাকার এই প্রকল্প পাস হয়। অতি সম্প্রতি শুরু হয়েছে এর বাস্তবায়ন। এ সংক্রান্ত গৃহিত প্রকল্পের নাম হচ্ছে ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ-পার্টনার। এর আওতায় দেশের ২ কোটি ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩২১ জন কৃষককে স্মার্ট কৃষি কার্ড দেয়া হবে। সরকার বলছে, এটি কৃষিখাতে নেয়া সবচেয়ে বড় প্রকল্প।উদ্দেশ্য হচ্ছে, বর্তমান কৃষিকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য টেকসই ও নিরাপদ বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। এছাড়া, খোরপোশ কৃষিকে ধাপে ধাপে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর করাও এর অন্যতম উদ্দেশ্য। আর বাণিজ্যিক কৃষির ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশনের বিকল্প নেই।জানা যায়, প্রণোদনা থেকে শুরু করে পরামর্শসহ সব ধরনের সুবিধা এ স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে পাওয়া যাবে। প্রকৃত কৃষকরা যেন কোনভাবেই সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, এই কার্ডের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হবে। সর্বোপরি পার্টনার প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি কৃষকের দোরগোড়ায় কৃষিসেবা পৌঁছে দেয়া হবে। সারা দেশে ৬৪ জেলার ৪৯৫ উপজেলায় ২০২৮ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে -কৃষকদের ভর্তুকি প্রদান, কৃষক ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম প্রবর্তন, মোবাইল প্ল্যান্ট ক্লিনিকের মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ সেবাকে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া এবং ড্রিপ, স্প্রিংকলার, এডব্লিউডি ও ভূগর্ভস্থ সেচ নালাসহ সৌরশক্তি ব্যবহার করে সেচের পানি ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের মাধ্যমে পানির অপচয় হ্রাস করা।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাল্টে যাচ্ছে কৃষিপ্রধান এই দেশের কৃষি। কৃষকেরা কৃষি উৎপাদনে এখন ব্যবহার করছে আধুনিক প্রযুক্তি। উদ্ভাবিত হচ্ছে ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত। একর প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে হচ্ছে দ্বিগুণ তিনগুণ। এর পেছনে রয়েছে কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর কৃষিবিজ্ঞানিদের নিরলস গবেষণা। কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রগতির ধারায় নতুন পালক হচ্ছে স্মার্ট কার্ড। অবশ্য মাঠ পর্যায়ে এর উপকারিতা উপলব্ধির জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন। এই প্রকল্পের সুফল পেতে কৃষি উপকরণের দান নিয়ন্ত্রণসহ ফসলের উৎপাদনব্যয় যাতে কমে আসে, সেদিকে নজর দেয়া জরুরি বলে আমরা মনে করি।