সিলেট আ’লীগের অনলাইন ট্রেনিং ও স্মার্ট সেন্টারের উদ্বোধনীতে কবির বিন আনোয়ার
ভোট উৎসবের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের জবাব দেয়া হবে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ৭:১৫:৩১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কবির বিন আনোয়ার বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন ৬ দফা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন দিনবদলের সনদ, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন দিয়েছেন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ। জনগণের সমর্থন নিয়ে আতœমর্যাদাশীল উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণমূলক ভোট উৎসবের মাধ্যমে বিএনপি জামায়াতের দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের জবাব দেয়া হবে। নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে তাদের ষড়যন্ত্র বানের পানির মতো ভেসে যাবে।
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনলাইন ট্রেনিং ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারস্থ নজরুল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ট্রেনিং ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আরো বলেন, দল যদি স্মার্ট না হয় ; তাহলে সরকার কিভাবে স্মার্ট হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাড়ানো বাংলাদেশে দলকেও স্মার্ট হতে হবে। এখন পর্যন্ত ৪৯ টি জেলায় ‘রোড টু বাংলাদেশ’ এবং স্মার্ট কর্ণার উদ্বোধন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং ‘বাংলাদেশ’ নামকরণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করে প্রধান অতিথি ড. কবির বিন আনোয়ার বলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু মাত্র ৯ মাসে সংবিধান দিয়েছেন, কৃষি উৎপাদন জোরদার করেন, রাস্তাঘাট মেরামত, মিলকারখানা চালু, বৈদেশিক বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের ব্যবধানে দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যান বঙ্গবন্ধু। তখনকার সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে যান সাড়ে ৯%-যা এখনো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে সদ্য স্বাধীন দেশ মাত্র সাড়ে ৩ বছরেই অনাথ হয়ে পড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা শুধু একজন ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি; তারা একটি দেশ, চেতনা এবং দেশের ভবিষ্যতকে হত্যা করেছিল। দেশী- বিদেশী ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। দেশীয় সবাই ছিলেন আওয়ামীলীগের লোক। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিলেটের মতো একটি অগ্রসর জেলায় আওয়ামী লীগের স্থায়ী অফিস নেই জেনে দুঃখ প্রকাশ করেন।
বিএনপি জামায়াত এখনো দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেনারেল জিয়া রাজনীতিতে কালো টাকা ও পেশিশক্তি নিয়ে আসেন। বিএনপি রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে মাঠে নামিয়ে দেয়। তাদের বাড়িতে গাড়িতে উড়িয়েছে বাংলাদেশের পতাকা।
প্রধান অতিথি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের কাছে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেয়ার আহবান জানান তিনি।
নির্বাচনে শুধু জিতলেই হবে না অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থক প্রত্যেক ভোটারের ভোট নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে সরকারের সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠীকে ভোটে আনতে হবে। তিনি নারী ভোটারদের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, মোট ভোটারদের প্রায় অর্ধেক মহিলা। মহিলাদের ভোটে আনার জন্য কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণে এবং তাদের সাথে নিয়ে সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে বিএনপি জামায়াতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
বিএনপির সকল গুজব ও মিথ্য প্রচারণার জবাব দিতে এবং সরকারের কার্যক্রম ও সাফল্য তুলে ধরতে অনলাইন ও অফলাইন নেতাকর্মীদের সক্রিয় হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপরেখা পেয়েছে বাংলাদেশ, এখন স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের সমর্থন নিয়েই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, আমাদের হারানোর ভয় নেই। আমাদের বঙ্গবন্ধুর কন্যা মতো নেত্রী রয়েছে। আমাদের শুধু দরকার স্মার্ট বাংলাদেশ কায়েম করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে কাজ করা।
অনুষ্ঠানের শেষে ট্রেনিং ম্যানুয়েলের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দ। পরে বেলা ২টায় নগরীর তালতলায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ‘স্মার্ট কর্ণার’ এর উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, নাজনীন হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দুলাল, কবীর উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ শমসের জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রনজিত সরকার, আইন সম্পাদক এডভোকেট আজমল আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ আব্বাছ উদ্দিন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মুস্তাক আহমদ পলাশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট ছালেহ আহমদ হীরা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম সামসুন্নাহার মিনু, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এমাদ উদ্দিন মানিক, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বুরহান উদ্দিন আহমদ, উপ-দফতর সম্পাদক মো: মজির উদ্দিন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মতিউর রহমান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আখলাকুর রহমান চৌধুরী সেলিম, আবদাল মিয়া, এডভোকেট বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, জাহাঙ্গীর আলম, ডাঃ নাজরা আহমদ চৌধুরী, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম রশিদ চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসর আজিজ, সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন কয়েছ প্রমুখ। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, মো: সানাওর, দপ্তর সম্পাদক খন্দকার মহসিন কামরান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুর রহমান জামিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মহিউদ্দিন লোকমান, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সেলিম আহমদ সেলিম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, উপ-দপ্তর সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি, সহ-প্রচার সম্পাদক সোয়েব আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল আজিম জুনেল, এডভোকেট মোহাম্মদ জাহিদ সারওয়ার সবুজ, সৈয়দ কামাল, আবুল মহসিন চৌধুরী মাসুদ, আতিকুর রহমান সুহেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু প্রমুখ।