ওসমানীনগরে অগ্নিকান্ডে ২২ দোকান পুড়ে ছাই ॥ অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ৭:৪৪:১৩ অপরাহ্ন
ওসমানীনগর (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ ওসমানীনগরে অগ্নিকান্ডে ২২টি দোকানঘর পুড়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকার অধিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজারে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে তাজপুর ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। ফলে চারপাশের বড়বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা পায়।
জানা গেছে, ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারের পুরাতন গরুর হাটে হকারদের ২৩টি ক্ষুদ্র কাপড়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে সবগুলো দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বিকট শব্দ হলে বাজারের নৈশপ্রহরী ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন দেখতে পান। খবর পেয়ে তাজপুর ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। ততক্ষণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মালামালসহ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিকান্ডে ব্যবসায়ীদের অর্ধকোটির টাকার অধিক ক্ষতি সাধিত হয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দোকানে আগুন লাগার বিষয়টি জানতে পারেন। বাজারে এসে দেখেন মালামালসহ পুরো দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একসময় তারা বাজারের ফুটপাতে ব্যবসা করতেন, কিন্তু বাজারে ফুটপাতে চলাফেরায় ব্যাঘাত ঘটার কারণে প্রায় একযুগ পূর্বে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে তাদেরকে পুরাতন গরুর বাজারে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেই থেকে তারা নিজ খরচে টিনসেডের ঘর তৈরি করে ব্যবসা করে আসছিলেন। অগ্নিকান্ডে তাদের স্থাপনাসহ প্রায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন। শুধু কাপড় নয়, একজন ছাগল ব্যবসায়ীর ১২টি ছাগল পুড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই ৮টি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে।
তাজপুর ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার সুকুমার সিংহ জানান, খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। দুটি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হই। ফলে পার্শ্ববর্তী বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
হকার মার্কেট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও ব্যবসায়ী আবদুল কাদির কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, আমরা সব ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে গেছি। কিছু দিন আগে ১লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ঘর তৈরি করেছি। শীতের জন্য অনেক নতুন কাপড় দোকানে তুলেছি। সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ থেকে আগুন লাগলে তো বিদ্যুতের লাইন পুড়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু তা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলীমা রায়হানা জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সরকারি সহযোগিতার জন্য ব্যবসায়ীদের ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করবেন বলে জানান তিনি।