প্রাণিজ সম্পদের উন্নয়ন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৫৫:০৩ অপরাহ্ন
নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হলে নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে হবে। -ফ্রান্সিস টম্পসন
চিকিৎসার অভাবে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ গবাদি পশু বিনষ্ট হচ্ছে। জানা গেছে, বিভিন্ন রোগব্যাধিতে ২০ শতাংশ গবাদি পশু মারা যায়। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হলে এ মৃত্যু রোধ করা সম্ভব। তাছাড়া, কার্যকরি টিকার অভাবে বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার প্রাণিসম্পদ নষ্ট হয়। এই অবস্থায় বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, মাংস উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ।
ইতোপূর্বে সরকারের বিভিন্ন সূত্র থেকে দাবি করা হয়, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দুধ উৎপাদনেও অগ্রগতি হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বলেছে, দেশে গত ১০ বছরে ডিম ও দুধ উৎপাদন দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। আর মাংস উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ১৭ কোটি, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৩৮ কোটি। এই ১০ অর্থবছরে দুধ উৎপাদন ৬১ লাখ টন থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ টন এ। সব ধরনের মাংসের ক্ষেত্রে যা ৪৫ লাখ টন থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৭ লাখ টন। স্বাধীনতার পর থেকে এপর্যন্ত মাংস উৎপাদন ১৫ গুণ বেড়েছে। ডিমের উৎপাদন বেড়েছে ১২ গুণ। অর্থাৎ গত এক যুগে প্রাণিজ আমিষের প্রধান উৎস দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এই পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তবের বিস্তর ফারাক। বর্তমানে বাজারে দুধ, ডিম, মাংসের দাম মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। নানা কারণে প্রাণিসম্পদ বিপর্যস্ত।প্রথমত খাদ্যের অভাব, দাম বৃদ্ধি, দ্বিতীয়ত অসুখ বিসুখ। তাছাড়া, রয়েছে চিকিৎসা সংকট। জানা গেছে, সারা দেশে সাত শ’র বেশি পশু চিকিৎসকের পদ খালি রয়েছে। সার্জন নেই বললেই চলে। অনেক হাসপাতালে আয়া, বুয়া চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিরা রোগাক্রান্ত পশুর অস্ত্রোপচার করে। সাধারণত গরু, ছাগল ও মহিষের তড়কা, গলাফুলা, বাদলা, খুরা, জলাতঙ্ক, বসন্তসহ নানা ধরনের রোগ হয়। এর বাইরেও গবাদি পশু হঠাৎ অজানা রোগে আক্রান্ত হয়। এতে অনেক পশু মারা যায়।
উল্লেখ করা যেতে পারে, পোল্ট্রি শিল্প দেশে বেশ সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু ফিডের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে এই শিল্প আজ হুমকির মুখে। গবাদিপশুর ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। গৃহস্থ ঘরে এখন গরু ছাগল লালন পালনের সংস্কৃতি ওঠে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে গবাদিপশু ও হাঁস মুরগির চিকিৎসা নিশ্চিত করা। এ জন্য সব পশু হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট দূর করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রির ব্যবস্থা করতে হবে।