বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১:২১:৪১ অপরাহ্ন
মানুষ পরাজয়ের জন্য সৃষ্টি হয় নি। তাকে হয়তো ধ্বংস করা যায়, কিন্তু হারানো যায় না। -আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবস আজ। মূলত মিতব্যয়ি হওয়ার আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে এই দিবসটি পালন করা হয়। এই দিনে পরিবার ও জাতির কল্যাণে সকলকে মিত্যব্যয়ি হওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়। এই দিবসটির উদ্ভব হয় ১৯২৪ সালে। সেই বছর মিলানে বিশ্বের বিভিন্ন সঞ্চয় ব্যাংকের প্রতিনিধিদের প্রথম বিশ্ব কংগ্রেসের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ি দিবসটি পালন শুরু হয়। সেই থেকে সঞ্চয় ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালন করে। মিতব্যয় ও সঞ্চয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণের মনোযোগ আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে পালন করা হয় দিবসটি। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের নাগরিকদের জন্য মিতব্যয়িতার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কারণ এদেশের মানুষের মধ্যে অপচয়ের প্রবণতা প্রকট।
অপচয়কারিরা ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কিছুই করতে পারেনা। মানব জীবনে মিতব্যয়িতা একটি অতি অপরিহার্য বিষয়। মিতব্যয় প্রতিটি মানুষের জীবনে সমৃদ্ধি ডেকে আনে। ব্যক্তি জীবনে যতো বেশি সঞ্চয় হবে, ততোই বাড়বে ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা। মিতব্যয় মানুষের সম্পদকে বৃদ্ধি করে এবং অন্যকে সাহায্য করার পথ উন্মুক্ত করে। সর্বোপরি আমাদের জাতীয় উন্নয়নের জন্য অভ্যন্তরিণ সম্পদ বৃদ্ধি অতি গুরুত্বপূর্ণ। আর এই সম্পদ সংগ্রহের পন্থা হচ্ছে স্বেচ্ছায় সঞ্চয় এবং কর সংগ্রহের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক সঞ্চয়। স্বেচ্ছায় সম্পদ যতো বৃদ্ধি পাবে কর বা রাজস্ব আয়ের ওপর নির্ভরশীলতা ততো হ্রাস পাবে। এই নীতির ওপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো এগিয়ে যাচ্ছে সামনে।
যে কোনরূপ সঞ্চয়ই অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। আর ইসলামি অর্থনীতিতে অপচয় ও অপব্যয় কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অপচয় ও অপব্যয়ের নানাবিধ ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে ইসলামে তা নিষিদ্ধ। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ভাষায় ‘আর যখন তারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না, কৃপণতাও করে না এবং তারা আছে এ দুইয়ের মধ্যপন্থায়।’ যে কারণে মিতব্যয় মানুষের সর্বোত্তম গুণ। অর্থব্যয়ের তিনটি ধরণ হচ্ছে- কার্পণ্য, মিতব্যয় এবং অপব্যয়। কার্পণ্য ও অপব্যয়কে ইসলাম নিন্দা জানিয়েছে। আর উৎসাহিত করেছে মিতব্যয়কে।
আমাদের সমাজে দিনদিন বেড়ে চলেছে অপব্যয়কারির সংখ্যা। সাধারণত পুঁজিপতি বিত্তশালিদের মধ্যে অপব্যয় বা অপচয়ের প্রবণতা বেশি। বিশেষ করে সরকারি চাকরিজীবী-দুর্নীতিবাজ চক্র অবৈধ পন্থায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে এবং কারণে-অকারণে সম্পদ অপচয় করছে। সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পসহ অন্যান্য আর্থিক খাতে দেদার অপচয় হচ্ছে সম্পদের। তাই সব ক্ষেত্রে মিতব্যয়ের দীক্ষা নিতে হবে। আজকের বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবসের এটাই হোক শ্লোগান।