বেলজিয়াম সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন
নির্বাচন সময়মতো হবে, কে চোখ রাঙালো কে চোখ বাঁকালো পরোয়া করি না : শেখ হাসিনা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০২৩, ৬:০৭:৩৮ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন প্রশ্নে বিরোধী দলগুলোর সাথে সংলাপের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেদিন ট্রাম্প আর বাইডেন ডায়ালগ করবে, সেদিন আমিও ডায়ালগ করব।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বেলজিয়াম সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এর আগে সকালের দিকে নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের সব পক্ষকে শর্তহীন সংলাপে বসার অনুরোধ জানিয়েছেন।
গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে পিটার হাসের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে একজন সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা খুন করছে তাদের সাথে ডায়লগ করতে বলে, ট্রাম্প
সাহেবের সাথে কী বাইডেন ডায়লগ করছে? যেদিন ট্রাম্প সাহেব আর বাইডেন ডায়লগ করবে, সেদিন আমিও ডায়ালগ করবো।’
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় বিশেষ করে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় এই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের চুপ থাকা নিয়েও তিনি প্রশ্ন করেন।
‘তিনি পুলিশ হত্যার ব্যাপারে বিচার চাইলেন না কেন? খুনীদের সাথে আবার কিসের বৈঠক? কিসের আলোচনা? সে বসে ডিনার খাক, সে বসে ডায়লগ করুক।’
‘এটা আমাদের দেশ, স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, এ কথা মনে রাখা উচিত,’ তিনি বলেন।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন হবে এবং সময়মতো হবে। কে চোখ রাঙালো, কে চোখ বাঁকালো পরোয়া করি না।’
নির্বাচনকালীন সরকার কেমন এ বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী সংসদীয় নির্বাচনের নিয়ম ব্যাখ্যা করেন এবং বলেন, নির্বাচন চলাকালে এখন যারা দায়িত্বে আছেন তারাই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। যাতে সরকার অচল হয়ে না যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরপিও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর মনোনয়ন জমা দেয়ার এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় ঠিক করে দেয় নির্বাচন কমিশন। এরপর প্রতীক বরাদ্দ হয়। তারপর থেকে শুরু হয় নির্বাচনী প্রচারণার কাজ।
তখন থেকে মন্ত্রীরা সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা বা ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন না। অর্থাৎ তখন থেকে একজন প্রার্থী হিসেবে তাদের ভোট চাইতে হবে। নির্বাচিত হওয়ার পর এমপিরা শপথ নেন। প্রথম সংসদ অধিবেশন বসার পর থেকে নতুন এমপিদের সময়কাল শুরু হয়। তবে নতুন সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত সরকারি রুটিন অনুযায়ী সব কাজ চলবে। অর্থাৎ এখন যারা দায়িত্বে আছেন তারাই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে তাদের দায়িত্ব পালন করবে। ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ যেসব দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র আছে সেখানে এভাবেই চলে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, ২০১৮-তে সেভাবেই হয়েছে। ২০১৪-তে আমি কিছু মন্ত্রী অন্যান্য দল থেকে নিয়োগ করেছিলাম। ১৮-তে আর সেই পদ্ধতি করি নাই।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এভাবে বিএনপি নিজেরাই রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তিনি জানান।
তবে যারা এই সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের সাথে যুক্ত তাদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে এবং তাদেরকে যথাযথ শাস্তি দেয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীদের কিভাবে শিক্ষা দেয়া হবে, সেই শিক্ষাটা আমাদের দেয়া উচিত এবং সেটাই আমরা দেবো।
বিএনপি তাদের সহিংসতা বন্ধ করবে এমন আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সহিংসতা বন্ধ না করলে এর পরিণতি তাদের ভোগ করতে হবে। এবার এমনি এমনি যেতে দেবো না। এভাবে তারা নির্বাচন থামাতে পারবে না। তেরোতে পারেনি, আঠারোতে পারেনি, এবারও পারবে না।