বিএফইউজে’র প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
সাংবাদিকের ওপর বিএনপির হামলায় সুশীলরা চুপ কেন?
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ৬:৩৪:০৯ অপরাহ্ন
# সাংবাদিক কল্যাণ তহবিলে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা # ১০ম
ওয়েজ বোর্ড গঠনের কাজ চলছে # জেলাভিত্তিক আবাসন প্রকল্প তৈরি করে দেবো
ডাক ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর যারা সন্ত্রাসী হামলা করেছে তাদের মুখোশ আন্তর্জাতিক পরিম-লে তুলে ধরতে হবে। সাংবাদিক, পুলিশ ও হাসপাতালে হামলাকারীদের কোনোভাবেই রক্ষা হবে না।’
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৩০ জন সাংবাদিক সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলেন; দেশের তথাকথিত সুশীল ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠনগুলো চুপ কেন?’
‘যারা একটু বিবৃতি দেয়, তারা এখন কোথায়? ফ্রান্সের রিপোর্টার্স ৩০ জন সাংবাদিকের ওপর হামলায় চুপ কেন? আমাদের সুশীল বাবুরা কই এখন? কিছু একটা হলেই সুশীল বাবুরা চিৎকার করে উঠে। সেই সুশীলদের কাজ কি আওয়ামী লীগের দোষ খুঁজে বেড়ানো? আর আওয়ামী লীগের কেউ কিছু করলে সেটাকে বড় করে দেখানো? চোর, ডাকাত, গ্রেনেড হামলাকারী, অস্ত্র চোরাকারবারীদের কোনো অপরাধ নেই, মানবাধিকার লংঘনকারীদের অপরাধ নেই, তারা চুপ কেন?”
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মনে হয়, সাংবাদিকদের মাটিতে ফেলে পেটানোর ন্যাক্কারজনক ঘটনা বাংলাদেশে আর হয়নি। এটা কেন করা হলো? সে প্রশ্নের জবাব তো বিএনপিকে দিতে হবে। পুলিশের ওপর অত্যাচার, এর আগেও আমরা দেখেছি। পুলিশকে মাটিতে ফেলে পেটানো হচ্ছে, শুধু পেটানো না, বেহুঁশ হয়ে গেছে, তারপরও মারা হচ্ছে, কোপানো হচ্ছে, সমানে ডিল মারা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে আসছে, এত ইট-পাথর কোথায় পেলো?”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি কথা দিয়েছিল তারা ২৮ অক্টোবর শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে। কিন্তু তারা কথা রাখেনি, সন্ত্রাস করেছে। সাংবাদিকদের নির্যাতন করেছে, পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে, অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদেরকে শাস্তি পেতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা উচ্চমানের। এ পেশা মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে আছে। আমি সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেবো। মালিকরাও কিছু কিছু দিয়েন। কারা দিলেন আমরা কিন্তু দেখবো। মালিকরা কেন কল্যাণ ট্রাস্টে অনুদান দেয় না? না দিলে বন্ধ করে দিতে পারি। কল্যাণ ট্রাস্টে ফান্ড দেবে, তারপর চলবে। এখানে অনেক মালিক আছে তো তাই বললাম। দেখি ভয় পেয়ে কিছু দেয় নাকি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন মালিকদের দায়িত্ব। সেটা বাস্তবায়ন না করে মামলা করলে সেটা দুর্ভাগ্যজনক। দশম ওয়েজবোর্ডের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেটা আমরা দেবো। টেলিভিশনের সাংবাদিকদেরও আমরা ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনবো। অনেক সময় আপনাদের মধ্যে নানা মতের কারণে অনেক কিছু সময়মতো করা যায় না, এটায় আমাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তবে ঢাকার বাইরের সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ডে নিয়ে আসতে হবে। সামনে ওয়েজবোর্ড গঠনে মাথায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, সাংবাদিক কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছি। এর বাইরেও প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে অসুস্থ ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা দিয়ে থাকি। আজ এখানে আসার আগেও কিছু ফাইল দেখে এসেছি, সাধ্যমতো দেওয়ার চেষ্টা করেছি। একটা জমির আবেদন দিয়েছেন আপনারা, বিষয়টি আমি দেখবো। জেলাভিত্তিক আবাসন প্রকল্প তৈরি করে দেবো। সেখান থেকে আপনারা আবাসন যাতে পান, সে ব্যবস্থা করবো।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, দেশে মানুষ যত বেশি, সংবাদপত্র তার চেয়েও বেশি। উন্নত দেশেও এত সংবাদপত্র নেই। এর বাইরেও দেশে বর্তমানে ৩৩টি বেসরকারি টেলিভিশন সম্প্রচারে আছে। আরও ১৫টা সম্প্রচারের অপেক্ষায়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা নিজেও সাংবাদিক ছিলেন। যার কারণে আপনাদের মাঝে এলে আমি দাবি করি, আমি আপনাদেরই পরিবারের একজন। সাংবাদিক কলাকুশলীদের যাতে কর্মসংস্থান হয়, সমস্ত কিছু বেসরকারিভাবে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। তথ্য অধিকার আইন, তথ্য কমিশন ও জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৭, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা ২০১৪ করেছি।
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে এবং বিএফইউজে মহাসচিব দীপ আজাদ সম্মেলন সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য, সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বিভিন্ন জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতিরা।