ন্যূব্জপৃষ্ঠ পৃথিবী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১১:৪০ অপরাহ্ন
মানুষের ভারে কি ‘নুয়ে পড়েছে’ পৃথিবী? বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়ছে কি এই গ্রহটি? এমন অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিজ্ঞাণিদের মনে। জাতিসংঘের মতে যুদ্ধ-দ্বন্দ্ব, পরিবেশগত অবক্ষয় এবং মহামারির মতো বিপর্যয়ে দিন দিন পৃথিবীর সম্পদ কমছে। অথচ পৃথিবীর জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে। আর এখন এই সংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে । আর দিন দিন কেবল বেড়েই চলবে বৈশ্বিক জনসংখ্যা।
বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। বলা যায় সাম্প্রতিক সময়ে এ নিয়ে খুব একটা বলাবলি হচ্ছে না। দীর্ঘদিন পরে হলেও জাতিসংঘের এই উদ্বেগ সত্যি ভাবিয়ে তুলেছে বিশ্বনেতৃবৃন্দকে। জাতিসংঘের মতে,পৃথিবীর জনসংখ্যা ১৯৫০ সালে ছিলো ২৫০ কোটি। ২০৩০ সালে জনসংখ্যা হবে প্রায় ৮৫০ কোটি। ২০৫০ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে হবে ৯৭০ কোটি। ২০৮০ সালে তা গিয়ে দাঁড়াবে সর্বোচ্চ শিখর এক হাজার ৪০ কোটিতে। অপর একটি গবেষণার তথ্য হচ্ছে- ২০৬৪ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপি জনসংখ্যা সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাবে এবং জনসংখ্যা কখনো ১০০০ কোটিতে পৌঁছাবে না এবং ২১০০ সালের মধ্যে তা ৮৮০ কোটিতে নেমে আসবে। গবেষকগণ বলেন, ৫০ হাজার থেকে এক লাখ বছর আগে এ পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ছিল কেবল ১০,০০০ জন।
এরপর থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান পর্যায়ে পৌঁছেছে। এরমধ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা যেমন ওঠেছে, তেমনি অনেকে আবার মনে করছেন, আমাদের আরও জনসংখ্যার প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত জনসংখ্যাকে নেতিবাচক হিসেবে দেখেন অনেকেই। তাদের মতে- জলবায়ু সংকট, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি থেকে শুরু করে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব; আমাদের সবধরনের পরিবেশগত সংকটের পেছনে জনসংখ্যার মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধিই দায়ি। সেই সঙ্গে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে এবং ২০৫০ সালে গড় আয়ু ৭৭.২ বছরে পৌঁছাবে। ৬৫ বছরের বেশি মানুষের অনুপাত ২০২২ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে ১৬ শতাংশে উন্নীত হবে। আর তা দারুণভাবে প্রভাব ফেলবে শ্রমবাজার, অর্থনীতি ও পেনশন প্রক্রিয়ার ওপর। প্রয়োজন পড়বে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বৃদ্ধির।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই ধারা ঠেকাতে হবে। ভারসাম্যপূর্ণ টেকসই জনসংখ্যার পৃথিবী যাতে হয়, সেদিকেই নজর দিতে হবে। কারণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি বিশ্বের সম্পদের ওপর শুধু চাপ সৃষ্টি করে না, পাশাপাশি বাড়ে খাদ্য, পানি, আবাসন, জ্বালানি এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ আরও অনেক চাহিদার। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে পৃথিবীর মানুষ ক্রমশ কর্তৃত্বপরায়ণ ও প্রভাবশালি হয়ে উঠছে। তাই ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে সবার সঙ্গে মিলেমিশে বাস করা ও পরিবেশ রক্ষা করার কোন টেকসই উপায় খুঁজে পাওয়াটাই আমাদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ।