স্পোর্টস ডেস্ক ঃ অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয় বললেও কমই বলা হবে। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে রেকর্ড গড়া ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আফগানিস্তানের দেয়া ২৯২ রান তাড়ায় ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের প্রহর গুনছিল অস্ট্রেলিয়া। এমন ধ্বংসস্তূপ থেকে একাই দলকে টেনে তুলেন, খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ২০১ রানের ইনিংস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে জেতালেন ৩ উইকেটে। এতে তৃতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো অস্ট্রেলিয়া। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে আফগানরা। ইব্রাহিম জাদরানের সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ২৯১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে আফগানিস্তান। জাদরান ওপেনিংয়ে নেমে ১৪৩ বল খেলে দলীয় সর্বোচ্চ ১২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। ইনিংসের শেষ দিকে তান্ডব চালান ইব্রাহিম জাদরান ও সাবেক অধিনায়ক রশিদ খান। ষষ্ঠ উইকেটে তারা মাত্র ২৮ বলে ৫৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন। তাদের এই জুটিতেই তিনশোর দোরগোড়ায় গিয়ে পৌঁছায় আফগানিস্তান। মাত্র ১৮ বলে ৩৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন রশিদ খান।

এছাড়া রহমানউল্লাহ গুরবাজ (২১), রহমত শাহ (৩০), হাশমতউল্লাহ শহিদি (২৬), আজমতউল্লাহ ওমরজাই (২২), মোহাম্মদ নবি (১২) রান করেন। টার্গেট তাড়া করতে নেমে দলীয় ৪ রানে নাভিন উল হকের শিকার হয়ে ফেরেন ট্রাভিস হেড। এরপর মিচেল মার্শের সঙ্গে ২৬ বলে ৩৯ রানের জুটি গড়েন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। এক উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৪৩ রান। এরপর ৪৮ রানের ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়া হারায় ৬ উইকেট। ২৪, ১৮, ০ ১৪, ও ৫ রানে আউট হন মিচেল মার্শ, ডেভিড ওয়ার্নার, জশ ইনজেলস, মার্নাস লাবুশেন, মার্কাস স্টয়নিস ও মিচেল স্টার্ক। দলের এমন চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে হাল ধরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কয়েকবার জীবন পেয়ে তান্ডব চালালেন ম্যাক্সওয়েল। ১২৮ বলে ২১টি চারের সঙ্গে ছয় মারলেন ১০টি। অর্থাৎ বাউন্ডারি থেকেই তুললেন ১৪৪ রান। ৭৬ বলে শতক করার আগেই পেশিতে টান লাগে ম্যাক্সওয়েলের। এরপর প্রায় দাঁড়িয়েই ব্যাট করলেন পুরোটা সময়। অপরপ্রান্তে তাকে সঙ্গে দেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ৬৮ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দরকার যখন ২৩ বলে ২১ রান, দ্বিশতকের জন্য ম্যাক্সওয়েলেরও প্রয়োজন ছিল ২১। মুজিবের টানা চার বলে ছক্কা-ছক্কা-চার-ছক্কায় দলকে কাক্সিক্ষত ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ২০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন ম্যাক্সওয়েল। একই সাথে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ে দিলেন ম্যাক্সওয়েল।