দিরাইয়ে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ৪:২২:৪৩ অপরাহ্ন
মো. উবাইদুল হক দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে : সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শীতকালীন সবজি চাষে ঝুঁকছেন স্থানীয় কৃষকেরা। শীতের আগেই বাজারে শীতকালীন সবজি সরবরাহের লক্ষ্যে হাওরাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে সবজি চাষের ধুম পড়েছে। আগাম শাকসবজির বাজার দর বেশি হওয়ায় এখন চারা তৈরি ও জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা।
রাতের শেষ ভাগে হালকা শীত আর ভোর বেলার আবছা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। এতে নতুন করে ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষকদের।
কাকডাকা ভোরে উঠেই বীজতলা তৈরি, পরিচর্যা করে মাঠ প্রস্তুত করছেন কৃষকেরা। নিজের চাহিদা পূরণ করে বাজারে বাণিজ্যিকভাবে সবজি বিক্রি করে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন হাওরাঞ্চলের কৃষকরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কৃষিকাজে অংশগ্রহণ করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন শাক-সবজির চারা। জাতভেদে সবজি চারার দামও ভিন্ন ভিন্ন। পেশাদার কৃষক ছাড়াও শৌখিন মানুষেরা শখের বশে ছাদ কৃষি ও আঙিনা কৃষিতে ঝুঁকছেন।
দিরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ৪০ হেক্টর ও ২টি গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে প্রতি বছরই শীতকালীন সবজি চাষ হয়। পুরুষের পাশাপাশি সবজি চাষে অবদান রাখছেন নারীরাও।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোরের সূর্য উঠার সাথে সাথে বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ কৃষাণীরা। কেউবা নিরানি দিচ্ছে, কেউবা বীজ বপন করছে।
দিরাই পৌরসভার রাধানগর গ্রামের কৃষক আফজাল মিয়া বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমি ৫ একর জমি নিয়ে সবজি চাষাবাদের কাজ শুরু করছি। শীতকালীন সবজি তাড়াতাড়ি বাজারে আনলে বেশি লাভ হয়। এ জন্য আগাম সবজি চাষের চেষ্টা করছি।
উপজেলা ও পৌর এলাকার রাজাপুর, সাকিতপুর, উমেদনগর, কদম্বতলি শরীফপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ হচ্ছে সবজি। কিছু এলাকায় সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শষা,খিরা, টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, মুলা, করলা, পটল, পালং ও লাল শাক, কাচামরিচসহ রকমারি শীতকালীন সবজির চারা। মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষক পরিবারের নারী-পুরুষ । কাকডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে তারা বেরিয়ে পড়ছেন সবজি পরিচর্যায়। বিকেল পর্যন্ত পরিচর্যা করে বাড়ি ফিরছেন তারা। এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ। বেড়েই চলছে কাজের চাপ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনোরঞ্জন অধিকারী দৈনিক সিলেটের ডাককে বলেন, অন্যান্য এলাকার তুলনায় দিরাই উপজেলায় খুব কম সংখ্যক গ্রামে সবজি চাষ হয়। কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রদর্শনী প্লট তৈরিতে প্রান্তিক কৃষকদের সবজি চাষের জন্য উৎসাহিত করবো। তিনি আরও বলেন, শীতকালীন সবজি আবাদে আবহাওয়া অনুকূলে আছে। আশা করছি বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর সবজির ফলন ভালো হবে।